ফজলুল হক, কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি : গাজীপুরের কালিয়াকৈরে এক বন্ধুকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করার পর দশ তলা থেকে ফেলে হত্যা করলো জমজ দুই ভাই।
উপজেলার সফিপুর বালুর মাঠ এলাকায় এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। ওই হত্যাকান্ডের রহস্য উদ্ঘাটনে মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে যান পুলিশ কর্মকর্তারা।
নিহত সাব্বির আহম্মেদ (২০) কুমিল্লার চৌহালী থানার নবাববাড়ি এলাকার মোশারফ হোসেন লিটনের ছেলে । সে স্থানীয় আব্দুল্লাহ মডেল পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে পড়াশুনা করতো।
এলাকাবাসী, নিহতের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সাব্বির পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে তিন নাম্বার ছিল। তারা স্বপরিবারে কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুর আহম্মদ নগর চৌরাস্তা এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহিমের বাসায় ভাড়া নিয়ে বসবাস করে। গত সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার সফিপুর বালুর মাঠ এলাকায় যান সাব্বির। পরে তিনি ইউনিক টাওয়ারের ৯সি ফ্ল্যাটের বাসিন্দা আঃ রহিম মিয়ার জমজ দুই ছেলে ও তার বন্ধু জমজ দুই রাকিব ও সাকিবের বাসায় যায়। এরপর জমজ দুই ছেলে রাকিব ও সাকিব তাদের বন্ধু সাব্বিরকে নিয়ে ওই ভবনের দশ তলার ছাদে আড্ডা দিতে যায়। রাত আনুমানিক ৮টার দিকে হঠাৎ করে ওই ভবন থেকে একজনকে নিচে পড়ে থাকতে দেখে এগিয়ে যান এলাকাবাসী। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এসময় নিহতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ও একটি হাতের আঙ্গুল কাটা দেখে সন্দেহ হলে পুলিশে খবর দেয় এলাকাবাসী। খবর পেয়ে পুলিশ ওই হাসপাতাল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে।
ময়নাতদন্তের জন্য নিহতের লাশ গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। পরে কালিয়াকৈর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে একটি কাটা আঙ্গুল ও একটি চাপাতি উদ্ধার করেছে।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ওই ভবনের ছাদে আড্ডার এক পর্যায় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে সাব্বিরকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে তাকে দশ তলা ভবনের ছাদ থেকে ফেলে দেয় ওই জমজ দুই ভাই। এ ঘটনার পর ওই জমজ দুই রাকিব ও সাকিব ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেছে।
এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই মহিউদ্দিন আতিক বাদী হয়ে কালিয়াকৈর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই হত্যাকান্ডের রহস্য উদ্ঘাটনে মঙ্গলবার সকালে কালিয়াকৈর থানার ওসি এ এফ এম নাসিমের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে যান।
নিহতের বড় ভাই মহিউদ্দিন আতিক বলেন, ওরা সবাই বন্ধু এক সাথে চলাচল করতো। কিন্তু সাব্বিরের সঙ্গে কি দ্বন্দ্ব ছিল? কি কারণে তাকে ওরা হত্যা করেছে? সেটা এখনো জানা যায়নি।
কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম নাসিম জানান, সাব্বির হত্যার রহস্য এখনো উদ্ঘাটন করা যায়নি। এ ঘটনার পর এ হত্যাকান্ডের কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়া এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে পলাতক আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

Discussion about this post