শাহীন আহমেদ, কুড়িগ্রাম
প্রায় চার হাজার মানুষের দৈনন্দিন চলাচলের একমাত্র গ্রামীণ সড়কটি দীর্ঘ ১২ বছর পর অবমুক্ত করেছে উপজেলা প্রশাসন। এই সফলতা স্থানীয়দের মধ্যে আনন্দের সৃষ্টি হলেও, সড়কটির সংশ্লিষ্ট সংস্কার নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ফসলি জমির মধ্যে দিয়ে আঁকাবাকা লাল নিশান টাঙানো দেখা যায়। সাধারণ দৃষ্টিতে মনে হবে এটি একটি সাধারণ গ্রামীণ রাস্তা, কিন্তু দীর্ঘ ১২ বছরে এটি একটি প্রভাবশালী মহলের ক্ষমতার অপব্যবহারে কেটে আবাদি জমিতে পরিণত হয়।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার উমরমজিদ ইউনিয়নের ডাংহাট এলাকার এই সড়কটি সরকারি রেকর্ডে ৭০০ মিটার দৈর্ঘ্যের হিসেবে উল্লেখ থাকলেও, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা ক্ষমতার দাপটে দীর্ঘ সময় ধরে এই সড়কটি কেটে, ফসলি জমিতে রূপান্তর করেছেন। প্রতিবাদে কেউ সাহস করতে না পারায়, ভুক্তভোগীরা এখনো মাঠের মধ্যে দিয়ে চলাচল করে আসছিলেন। কখনো কখনো গর্ভবতী নারী ও স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীদের কষ্ট করে এই পথ দিয়ে চলতে হয়, বর্ষাকালে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়ত।
সড়কটি অবমুক্ত হওয়ায় স্থানীয়রা বেশ উচ্ছ্বসিত। ভুক্তভোগীরা বলেন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুস সালাম মাষ্টার ও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সোহেল রানার ক্ষমতার দাপটে এই সড়কটি দীর্ঘ সময় দখলে ছিল। তবে এখন প্রশাসনের উদ্যোগে এই সড়ক উদ্ধার হওয়ায় তারা খুব খুশি। তারা দ্রুত সংস্কারের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
মাহফুজার রহমান নামের একজন স্থানীয় ব্যক্তি বলেন, দীর্ঘ ১২ বছর ধরে দখলে থাকা এই সড়কটি লাল নিশান টাঙিয়ে উদ্ধার করা হয়েছে। এখন দ্রুত মাটি ফেলে রাস্তা সংস্কার করা হলে আমাদের দুর্ভোগ অনেকটাই কমে যাবে। আমাদের জন্য এই রাস্তার কত কষ্ট ছিল, ভাষায় প্রকাশ impossible।
আরেক ভুক্তভোগী রহিমা বেগম বলেন, এই রাস্তা না থাকায় আমাদের যাত্রা অনেক কষ্টকর ছিল। স্কুল-কলেজে যাওয়া-আসা, চিকিৎসা ও বাজারে যাওয়ায় সমস্যা ছিল। এখন রাস্তা উদ্ধার হওয়ায় আমরা খুবই খুশি। সরকারের উচিত দ্রুত এই সড়কটির মেরামত করা।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস সালামের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য বারবার চেষ্টা করেও তার ফোনে সংযোগ সম্ভব হয়নি।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশাদুল হক বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে জনগণের দুর্ভোগ কমাতে দখলদারিত্বের মাধ্যমে দখলকৃত সরকারি রেকর্ড ভুক্ত সড়কটি উদ্ধার করা হয়েছে। ভবিষ্যতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আর/দৈনিক দেশতথ্য

Discussion about this post