ভারত থেকে অনুমতি না আসায় সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও দুইজন মুক্ত হতে পারেন নি
বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের দায়ে সাতজন ভারতীয় নাগরিকের সাজা হয়েছিল। তারা কয়েদী হিসেবে কুড়িগ্রাম কারাগারে আটক ছিলেন। সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ভারত থেকে প্রত্যাবর্তনের অনুমতি আসায় ওই পাঁচজন সাজাপ্রাপ্ত ভারতীয় নাগরিক মুক্তি পেয়েছেন।
মুক্তি প্রাপ্তদেরকে ভারতে পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে কুড়িগ্রাম জেলা কারাগার কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে ভারত থেকে প্রত্যার্পনের অনুমতি না পাওয়ায় দুইজনের ভাগ্যে মেলেনি কারামুক্তি।
তার ফলে সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও তাদেরকে কারাগারেই থাকতে হচ্ছে।
কুড়িগ্রামের জেল সুপার মো. ইসমাঈল হোসেন জানান, মাদক বহন ও পাসপোর্ট ছাড়াই বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের দায়ে আইন শৃংখলা বাহিনীর হাতে ওই সাত ভারতীয় নাগরিক আটক হয়েছিল। আজ (মঙ্গলবার) পাঁচ নাগরিককে তাদের দেশে ফেরৎ পাঠানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। লালমনিরহাট জেলার বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে উভয় দেশের আইন শৃংখলা বাহিনীর মাধ্যমে তাদেরকে বিএসএফ’র কাছে হস্তাতান্তর করা হয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার (৩১ মে) সকাল ৭টায় পাঁচ ভারতীয় নাগরিককে জেল গেটের বাইরে নেয়া হয়। এসময় পুলিশের একটি টিম ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জেল সুপার মো. ইসমাঈল হোসেন, বর্ডার ভিক্টিম রেসকিউ লিগ্যাল এসিসটেন্স ফোরামের বাংলাদেশ চ্যাপ্টরের আহবায়ক ও পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট এসএম আব্রাহাম লিংকন, বেসরকারি কারা পরির্দশক অ্যাডভোকেট আহসান হাবীব নীলু প্রমুখ।
পরে জেল সুপার মো. ইসমাঈল হোসেনের নেতৃত্বে সকাল সাড়ে ৭টায় কুড়িগ্রাম জেলা কারাগার থেকে পুলিশ স্কোয়াটের মাধ্যমে এই পাঁচ ভারতীয় নাগরিককে নিয়ে বুড়িমারী চেকপোস্টের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়া হয়।
ভারতে প্রত্যাবর্তনকারীদের মধ্যে রয়েছেন কুচবিহার জেলার সাহেবগঞ্জ থানার মৃত: দুদু মিয়ার ছেলে আলম মিয়া, আসামের ধুবড়ী জেলার হাট সিংগীমারী থানার সুরৎ মিয়ার ছেলে মো. নুরুজ্জামান, দক্ষিন মাইনকারচর জেলার হাট সিংগীমারী থানার নুর ইসলামের ছেলে সেলিম মিয়া, হাট সিংগীমারী থানার আমিরুল ইসলামের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম ও হাট সিংগীমারী থানার ছানোয়ার হোসেনের ছেলে মাহা আলম মিয়া।
অপরদিকে ভারতের পক্ষ থেকে হস্তান্তরের অনুমতি না পাওয়ায় ধুবরী জেলার দ্বীপ শালমারা এলাকার আকবর আলীর ছেলে তৈয়ব আলী ও একই এলাকার সমসের আলীর ছেলে গোলজার আলীর সাজার মেয়াদ ১লা ফেব্রুয়ারী শেষ হলেও ভারতের পক্ষ থেকে হস্তান্তর জটিলতার কারণে তাদেরকে কুড়িগ্রাম জেলে কারাভোগ করতে হচ্ছে।
বর্ডার ভিক্টিম রেসকিউ লিগ্যাল এসিসটেন্স ফোরামের বাংলাদেশ চ্যাপ্টরের আহবায়ক ও পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট এস.এম আব্রাহাম লিংকন জানান, উভয় দেশেই নাগরিক রয়েছে বিভিন্ন জেলখানায়। সাজার মেয়াদ শেষ হলেও তারা দেশে ফিরতে পারছে না। আজকে যারা দেশে ফিরছে তারা সাজার বাইরেও ৬ মাস থেকে এক বছর বিনাবিচারে জেল খেটেছে। এটা মানবাধিকারের চুড়ান্ত লংঘন। সাজা শেষের সাথে সাথে নাগরিকরা যেন নিজের দেশে ফিরতে পারে তার ব্যবস্থা বা উদ্যোগ দুই রাস্ট্র থেকে নেয়া দরকার বলে তিনি মনে করেন।
আর//দৈনিক দেশতথ্য//৩১ মে-২০২২//

Discussion about this post