সারাদেশের ন্যায় ইলিশ জোন খ্যাত কুড়িগ্রামেও ইলিশ মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে জেলা মৎস বিভাগ।ইলিশের এ প্রজনন মৌসুমে মা-ইলিশ শিকার বন্ধ রাখতে সরকার ৭ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত্ম মোট ২২ দিন সারাদেশের নদ-নদীতে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে নিষেধাজ্ঞার এই সময়ে মাছ ধরা বন্ধ থাকলে কুড়িগ্রামের নদ-নদীতে মা-ইলিশের বিচরণ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জেলা মৎস্য বিভাগসহ সংশিস্নষ্ট সকলে প্রত্যাশা করছেন।এদিকে, মাছ শিকারের এ নিষিদ্ধ সময়ে জেলার ইলিশ জেলেদের মধ্যে মানবিক সহায়তা হিসেবে ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় ১৮৭ দশমিক ৫ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। মৎস্য বিভাগের তালিকাভুক্ত জেলেদের মধ্যে সাড়ে ৭ হাজার দু:স্থ ও প্রকৃত মৎস্যজীবী এ সহায়তার চাল পাবেন বলে জানান জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কালিপদ রায়। উলেস্নখ্য,২০১৭ সালে কুড়িগ্রাম জেলাকে সরকার ইলিশ জোনভুক্ত ঘোষণা করে। এরপর ২০১৯ সাল থেকে ইলিশ ধরার নিষিদ্ধ সময়ে জেলার ইলিশ জেলেদের জন্য প্রণোদনা হিসেবে ভিজিএফ কর্মসূচির চাল প্রদান করার কার্যক্রম শুরু হয়।এরপর থেকে প্রজনন মৌসুমে প্রতিবছর জেলেরা খাদ্য সহায়তা পেয়ে আসছেন জেলা মৎসবিভাগ সুত্রে জানা যায়,জেলার ৯ উপজেলায় প্রায় ২০ হাজার ৩৬৬ জন তালিকাভুক্ত জেলে রয়েছেন।তম্মধ্যে সদর, নাগেশ্বরী, উলিপুর, চিলমারী, রৌমারী ও রাজিবপুর এ ৬ উপজেলায় ৭ হাজার ৫০০ দুস্থ ও প্রকৃত মৎস্যজীবীদের মাঝে মানবিক সহায়তা হিসেবে মাথাপিছু ২৫ কেজি করে চাল দেয়া হচ্ছে বলে জানা যায়। ইলিশ ধরার নিষিদ্ধ সময়ে নদীতে মাছ আহরণের ওপর নির্ভরশীল জেলে পরিবারগুলোকে খাদ্য সহায়তা দেয়ার মাধ্যমে মাছ আহরণে বিধি নিষেধ কার্যকর হবে।এ কাজ থেকে জেলেদের বিরত রাখতে পারলে ইলিশ প্রজননে সরকারের লক্ষ্যমাত্রা বাস্ত্মবায়ন সম্ভব হবে বলে আশা করছে মৎস বিভাগ। প্রসঙ্গত,জেলার ছোট বড় ১৬টি নদনদী রয়েছে। এসব নদ-নদীতে সারাবছর ইলিশের দেখা না মিললেও প্রজনন মৌসুমে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে ইলিশের মূল বিচরণ স্থলগুলোতে মাছ শিকার বন্ধ থাকে।সেইসাথে এ জেলাতেও তা বন্ধ রাখে মৎস বিভাগ।তবে নদীতে পানির পর্যাপ্ত প্রবাহ থাকলে বিনা বাধায় ওইসব এলাকার নদী থেকে বেশ কিছু ইলিশ কুড়িগ্রামের নদনদীতে চলে আসে এবং স্থানীয় জেলেদের জালে এসব ইলিশ আটকা পড়ে। ফলে জেলার নদনদীও ইলিশের আওতায় আসে। তাই এ জেলাতে ইলিশ প্রজনন মৌসুমে মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়। জেলা মৎস কর্মকর্তা কালিপদ রায় জানান, এবছর আমাদের জেলার নদ-নদীগুলোতে কয়েকদিন আগে থেকে জেলেদের জালে ইলিশ ধরা পড়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। ফলে আশা করা যাচ্ছে চলতি বছরে জেলার নদ-নদীতে তুলনামূলক বেশি সংখ্যায় ইলিশের আগমন ঘটতে পারে।সে অনুযায়ী ইতোমধ্যেই প্রজনন মৌসুমে মাছ ধরা বন্ধ রাখতে স্থানীয় প্রশাসনকে সাথে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//অক্টোবর ১০,২০২২//

Discussion about this post