Print Date & Time : 22 April 2025 Tuesday 7:41 am

কুমারখালীতে ইউনিব্লকের রাস্তা বদলে দিয়েছে গ্রামের সৌন্দর্য

কুমারখালী প্রতিনিধি : স্থায়িত্ব সৌন্দর্য টেকসই উন্নয়ন ও পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কুষ্টিয়ায় নির্মাণ করা হয়েছে জেলার প্রথম ইউনিব্লকের রাস্তা। ইটের বদলে ইউনিব্লক দিয়ে গ্রামীণ জনপদে রাস্তা নির্মাণ করায় বেড়েছে গ্রামের সৌন্দর্য এতে বদলে গেছে ওই এলাকার চিত্র। এ রাস্তা নজর কেড়েছে স্থানীয়সহ অন্যান্য এলাকার মানুষের।

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় নন্দলালপুর ইউনিয়নের চকরঘুয়া মোড় হাতিরপুল গ্রামীণ সড়কটি পরিবেশবান্ধব ও নান্দনিক হওয়ায় বদলে গেছে এই সড়ক সংলগ্ন এলাকার পরিবেশ, বেড়েছে গ্রামীণ এলাকার সৌন্দর্য। ইটের ব্যবহার না করে ইউনিব্লক দিয়ে নির্মিত এই সড়ক দেখতে চকরঘুয়া মোড় হাতিরপুল এলাকায় প্রতিদিনই ভীড় করছেন বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা অনেক মানুষ।

কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার নন্দলালপুর ইউনিয়নের চকরঘুয়ায় ১৫ লক্ষ ৪৮ হাজার ১৬০ টাকা ব্যয়ে ১৫৫

মিটার দৈর্ঘ্যের দৃষ্টিনন্দন চকরঘুয়া- হাতিরপুল রাস্তাটি নির্মাণ করেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা যায়, সিমেন্ট, বালু আর পাথরে ১৫, ২৫, ৫০ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতার একেকটি ইউনিব্লকের চাপ ধারণক্ষমতা ইটের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি।

কুমারখালী উপজেলার নন্দলালপুর ইউনিয়নের চকরঘুয়া- হাতিরপুল সড়কে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এই দৃষ্টিনন্দন রাস্তা দেখতে বিভিন্ন এলাকা মানুষ এসেছেন। অনেককেই দেখা গেছে রাস্তার ছবি তুলতে এবং হেঁটে হেঁটে রাস্তা দেখতে। কেউ কেউ বিকাল হলেই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চলে আসছে ঘুড়তে। কেউবা আবার তার ভালোবাসার মানুষকে নিয়ে বিকালে বা বৃষ্টির পরে খালি পাঁয়ে হাটছে।

কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাত্রী সাদিকা ইসলাম বলেন, এই রাস্তাটি অনেক দিন ধরে ভাঙাচোরা ছিলো, রিকশা ভ্যান এই রাস্তায় যেতে চাইতো না অনেক সময় হেটে বাড়িতে যেতে হতো এর ফলে অনেক কষ্ট পোহাতে হয়েছে আমাদের। কিন্তু এ রাস্তা নির্মাণের ফলে আমাদের কষ্ট লাঘব হয়েছে, এই রাস্তা দেখতেও সুন্দর লাগছে।
কয়া গ্রামের ভ্যানচালক স্বপন শেখ নয়া দিগন্তকে বলেন, এই রাস্তায় আগে ভ্যান চালাতে অনেক কষ্ট হতো, মাঝে মধ্যেই ভ্যানের বল, বিয়ারিং ও চাকার স্পোক এবং অ্যাক্সেল ভেঙে যেতো এতে যেমন আর্থিক ক্ষতি হতো আবার অনেক কষ্টও হতো। সুন্দর এই রাস্তা বানানোর ফলে এখন আর ভ্যান চালাতে সেই কষ্ট নেই, অনেক আরামেই এখন ভ্যান চালাতে পারছি।
জানাগেছে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার পাশাপাশি জেলার দৌলতপুর উপজেলাতেও উতিমধ্যে এই ইউনিবøকের কাজ করা হয়েছে।
তবে জেলাবাসীর দাবি এখন থেকে যে সকল রাস্তার সংস্কার করা হবে সেই রাস্তাটি যেনো এই ইউনিবøকের রাস্তা নিমান করা হয়। এতে করে জেলার সৌন্দর্য যেমন বাড়বে তেমনি রাস্তাগুলা হবে আরো স্থায়ী ও মজবুত।
এছাড়াও এই রাস্তা নিমানের ফলে অটো, ভ্যান, রিস্ক্রা সহ সকল যানবাহন যাতায়াত হবে সহজ, কষ্ট লাঘব হবে পথচারীদের।
কুমারখালী উপজেলা প্রকৌশল আব্দুর রহিম জানান, মূলত ব্রীকের ব্যবহার কমাতে ও পরিবেশ বান্ধব করতেই ইউনিব্লকের রাস্তা করা হচ্ছে। আস্তে আস্তে সব রাস্তাই ইউনিব্লকের করা হবে।
কুষ্টিয়া স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহিদ মন্ডল বলেন, গ্রামীণ জনপদের ‘বি’ ক্যাটাগরিতে ২ হাজার ৭৬ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ করা হবে। আমরা কুষ্টিয়ার কুমারখালী ও দৌলতপুর উপজেলায় পাইলট প্রকল্প হিসেবে ইউনিব্লকের রাস্তার নির্মাণ কাজ ইতিমধ্যে শেষ করেছি। ইউনিব্লকের
রাস্তাগুলো দৃষ্টিনন্দন ও মজবুত এবং রাস্তারগুলোর স্থায়িত্বও বেশী পানিতে ডুবে গেলেও এই রাস্তার কোনো ক্ষতি হয় না।

তিনি আরও বলেন, পর্যায়ক্রমে জেলার সকল উপজেলায় ইউনিব্লকের রাস্তা নির্মাণ করা হবে এ লক্ষ্যে আমাদের প্রধান কার্যালয়ে প্রস্তাবনাও পাঠিয়েছি।