সেলিম আহামেদ তাক্কু: কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই কাঠ পুড়িয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে ইট ভাটা।
যেখানে ১ শত ২০ ফিট ফিক্সট চিমনীর পরিবর্তে জিকজ্যাক খরির বদলে কয়লা দিয়ে ভাটা পরিচালনার কথা সেখানে টিনের চিমনি এবং কাঠ বা খরি দিয়ে প্রকাশ্যে ভাটা পরিচালনা কিভাবে করছেন সচেতন মহল প্রশ্ন তুলেছেন।
নিয়ম আছে একটি ভাটা যেখানে হবে তার ৩ কিলোমিটারের মধ্যে কোন আবাদী জমি এবং বসতী থাকবেনা ! কিন্তু কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় একদমি ভিন্ন চিত্র ! সেখানে ১০ টির অধিক অবৈধ ড্রাম চিমনি ইট ভাটা পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই কাঠ পুড়িয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। গত একমাস পূর্বে পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক মোবাইল কোর্ট পরিচালনায় ৬ টি ইট ভাটা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেবার এক সপ্তাহের মধ্যে অনান্য দপ্তর কে মেনেজ করে পূণরায় সেই সমস্ত ভাটা মালিক প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ভাটা চালু করেছে বলে জানা গেছে । এবং শিলাইদহ ইউনিয়নে বিবিবি নামক ইটভাটা পরপর তিনবার ভেঙে দেবার পরও থেমে নেই তাদের কার্যক্রম।
পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রে হাইব্রিট হফম্যান, জিগজ্যাগ, ভার্টিক্যাল শ্যাফট কিলন অথবা পরীক্ষিত পরিবেশবান্ধব ইটভাটা করার কথা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা থাকলেও এসব নীতিমালা কোনোভাবেই মানছেন না ওই ড্রাম চিমনি ইটভাটার মালিকরা। এমনই অবৈধ ড্রাম চিমনি ইটভাটা যদুবয়রা ইউনিয়নের আরিফুল ইসলামের মেসার্স এসআরবি ব্রিকস, ফারুখ হোসেনের মেসার্স টিজেবি ব্রিকস, আমিরুল ইসলামের মেসার্স একেবি ব্রিকস, , মো. করিম শেখের সৈনিক ব্রিকস ও সামছুলের মেসার্স নিয়াত ব্রিকস,পিপিজে ব্রিকস এ গত মাসে পরিবেশ অধিদপ্তর মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে প্রায় ১০ লাখ টাকা জরিমানা ও কাঁচা ইট সহ ভাটা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়। কিন্তু বর্তমানে প্রতিটি ভাটা সংস্কার করে কাঠ পুড়িয়ে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
এবং শিলাইদহ ইউনিয়নের কল্যাণপুরে মেসার্স বিবিবি ভাটার স্বত্বাধিকারী মিরাজ হোসেন, সবুর ও নাসির তাদের ড্রাম চিমনির অবৈধ ইট ভাটায় টন টন কাঠের স্তুপ জমিয়ে কাঠ পুড়িয়ে ইটভাটার কার্যক্রম চালাচ্ছ। এসময় ভাটার স্বত্বাধিকারী সবুর জানান, প্রতিবছর পরিবেশ অধিদপ্তর তাদের ইটভাটা ভেঙে দেয়। কিন্তু পূণরায় ভাটা চালু করা ছাড়া তাদের উপায় নেই কারণ প্রচুর টাকা লোকসান হয়েছে ইতিমধ্যে। তিনি জানান এপর্যন্ত তিনবার তাদের ভাটা ভেঙে দিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর।
ড্রাম চিমনি ইটভাটার মালিক সূত্রে জানা যায়, প্রতিটি ইটভাটায় প্রতিদিন গড়ে অন্তত ৪০০ মণ কাঠ পোড়ানো হয়। এতে একেকটি ইটভাটায় মাসে ২৪ হাজার মণ কাঠের প্রয়োজন হয়। এতে যেমন পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে তেমনি উজাড় করা হচ্ছে বন।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক আতাউর রহমান মোবাইল ফোনে জানান, যে সমস্ত ইটভাটার পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই তাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করার জন্য ইতিমধ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিতান কুমার মন্ডল জানান, পরিবেশ অধিদপ্তরের ডিডি মহোদয়ের সাথে তার কথা হয়েছে। যে সমস্ত ইটভাটা পরিবেশের ছাড়পত্র বিহীন ব্যবসা পরিচালনা করছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এবং যে অবৈধ ইটভাটা গুলো ভেঙে দেয়া হয়েছিলো তারা পূণরায় চালু করেছে এ সংবাদ তারা পেয়েছেন। দ্রুতই সমস্ত অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে বলে জানান তিনি।
দৈনিক দেশতথ্য//এল//

Discussion about this post