কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে জুয়া খেলার সময় এক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) বর্তমান ও সাবেক চেয়ারম্যানের এক ভাগিনা ও তিন ভাতিজাকে আটক করে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশে। মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) দুপুরে প্রিজনভ্যানে করে আসামিদের আদালতে পাঠানো হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামিরা হলেন – উপজেলার চর সাদিপুর ইউনিয়নের ঘোষপুর গ্রামের মৃত আনছার শেখের ছেলে আবু তালেব শেখ (৫০)। তিনি বর্তমান চেয়ারম্যানের ভাগিনা। আর দুই ভাতিজা হলেন একই এলাকার মৃত কমির উদ্দিন খা’র ছেলে বাবলু খা (৫৫) ও মৃত কফিলের ছেলে মো. খলিল খা ওরফে ভোমরা খা (৪৭)। এছাড়াও ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. তোফাজ্জেল হোসেনের ভাতিজা ও মৃত মনে মন্ডলের ছেলে আব্দুল রশিদ (২৮)।
পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত সোমবার গভীররাতে উপজেলা চর সাদিপুর ইউনিয়নের ঘোষপুর গ্রামের কুদু খা’র চায়ের দোকান এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। অভিযানে দোকানের পিছন থেকে জুয়া খেলার সময় চারজনকে আটক করে পুলিশ। এসময় তাঁদের কাছ থেকে এক জোড়া, তাস, নগদ পাঁচ হাজার ৮৯০ টাকা ও বস্তা জব্দ করা হয়। পরে তাঁদের বিরুদ্ধে থানায় ১৮৬৭ সালের জুয়া আইনের ৪ ধারায় প্রকাশ্যে জুয়া খেলার অপরাধে মামলা করা হয়। উক্ত মামলায় আসামিদের মঙ্গলবার দুপুরে আদালতে পাঠায় পুলিশ।
স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, উপজেলা শহর থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার দুরে ও পদ্মানদীর ওপারে (উত্তরাঞ্চল) চর এলাকায় চর সাদিপুর ইউনিয়নটি অবস্থিত। নদীপথে নৌকায় একমাত্র যোগাযোগের ব্যবস্থা। সন্ধ্যার পর থেকে নৌকা চলাচল বন্ধ থাকে। স্বাভাবিক যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় সেখানে প্রশাসনের নজরদারি কম। সেই সুযোগে পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মো. মেছের আলী খা’র ছেলে ফিরোজ হোসেন ওরফে উকিলের নেতৃত্ব ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় রাতভর চলে জুয়ার আসর। সেখানে প্রতিদিনই দুই থেতে তিন লক্ষ টাকার জুয়া খেলা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি বলেন, দুর্গম এলাকায় প্রশাসনের নজরদারি কম। সেই সুযোগে বর্তমান চেয়ারম্যানের ছেলে ফিরোজ হোসেন রাতভর বিভিন্ন এলাকায় জুয়ার আসর বসান। লাখ লাখ টাকার খেলা চলে সেখানে। প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তাঁরা।
এবিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যানের ছেলে ফিরোজ হোসেন বলেন, ওই এলাকা (ঘোষপুর) তাঁর বাইরে। সেখান থেকে তাঁর ফুফাতো ভাই ( আবু তালেব) ধরা পড়েছে। তবে তিনি কোনো জুয়া টুয়া খেলেন না। প্রতিপক্ষরা শত্রুতা তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন বলে তিনি দাবি করেন।
চর সাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মেছের আলী খা ফোনে বলেন, তাঁর ছেলেসহ স্বজনরা কেউ জুয়া খেলেনা। এই বলেই ফোন কেটে দেন তিনি।
কুমারখালী থানার ওসি মো. মোহসীন হোসাইন বলেন, জুয়া মামলায় চারজন আসামিকে গ্রেফতার করে আতালতে পাঠানো হয়েছে। চেয়ারম্যানের ছেলে জড়িত আছে কি -না, তা তদন্তের পরে বলা যাবে বলে জানায় ওসি।
খালিদ সাইফুল,দৈনিক দেশতথ্য ,১৪ মার্চ ২০২৩