Print Date & Time : 5 July 2025 Saturday 4:10 pm

কুমারখালীতে নাবী পাটের বীজ আবাদে সম্ভাবনার হাতছানি

কুমারখালী প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশ এক সময় অন্য দেশের পাটের বীজের জন্য নির্ভরশীল ছিল। এখন দেশেই মধ্যে তৈরি হচ্ছে  পাটের বীজ। কুষ্টিয়া কুমারখালীতে ৫০ জন কৃষক ১৫ বিঘা জমিতে উৎপাদন করছে, নাবী পাটের বীজ। কুষ্টিয়া জেলা ভূমি উঁচু হাওয়ায়, এখানে অতি বৃষ্টিতে ফসলের কোন সমস্যা হয় না। যার কারণে নাবী পাটের বীজ উৎপাদনে একটি উল্লেখযোগ্য অঞ্চল মনে করে কৃষিবিদরা।

বাংলাদেশের বিজ্ঞানিদের উদ্ভাবিত উন্নত জাতের পাট বীজ উৎপাদন করে সাফল্য পেয়েছে কুষ্টিয়া কুমারখালী চাষিরা। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এই বীজ উৎপাদনের উদ্যোগে কৃষকের সুফল বয়ে আনবে।  খুব কম খরচ ও অল্প সময়ে উৎপাদন করতে পারায় নাবী পাট চাষীরা বেশ খুশি । উপজেলা কৃষি বিভাগ বলছে এই ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী ২ থেকে ৩ বছরের মধ্যে দেশে উৎপাদিত বীজ দিয়েই নিজেদের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব।

উপজেলা টিতে পাট বীজের ভালো ফলন হওয়া হাসি ফুটেছে চাষিদের মুখে।

উচ্চ ফলন শীল বীজে আরআই তোষা পাট-৮ (রবি-১) পাট বীজ উৎপাদন করে সাফল্য পেয়েছে উপজেলার চাষিরা।

বৈচিত্রময় ফসল উৎপাদনের জেলার  চাষিরা সবসময়ই ব্যতিক্রময় ফসল উৎপাদন করে দেশের অর্থনেতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।

ঠিক তেমনি চলতি বছর পাট বীজ উৎপাদন করে সাড়া ফেলেছে এ জেলার চাষিরা। অল্প খরচে ও স্বল্প সময়ে অধিক লাভবান হওয়ায় দিন দিন বাড়ছে পাট বীজ চাষির সংখ্যা। বীজ উৎপাদনের ধারাবাহিকতা অব্যহত থাকলে আগামীতে অন্যদেশ থেকে আর পাট বীজ আমদানি করতে হবে না।

চলতি মৌসুমে  উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে  উপজেলার ৫০ জন চাষি নাবী পাটের বীজ উৎপাদন করছে ।

মহেন্দ্রপুর গ্ৰামের পাট বীজ চাষি বিপুল হোসেন  জানান, উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তায় ৫ শতাংশ জমিতে নাবী পাটের বীজ চাষ করেছি। এই বীজ আবার বিএডিসি আমাদের কাছ থেকে ক্রয় করবে। এই চাষে খুব একটা পরিশ্রম করতে হয় না। তিন চার মাসে বীজ উৎপাদন হয়। ৫ শতাংশ জমিতে যে বীজ হবে তা দিয়ে ৮০ বিঘা জমিতে পাট চাষ করা যাবে।

চরসাদীপুর ইউনিয়নের নাবী পাটের বীজ চাষি আজিজ শেখ বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তায় আমি ১ বিঘা জমিতে এই নাবী পাটের বীজ চাষি করছি। ফলন বেশ ভালো হয়েছে, আমি আরো জমিতে নাবী পাটের বীজ উৎপাদন করবো। এই বীজ বিআরডিএ অফিস আমাদের কাছ থেকে ক্রয় করবে এবং এই বীজ আমাদের লাভবান করবে।

পাট চাষি ইন্দ্রজিৎ বিশ্বাস জানান, আমরা নিজেরাই পাট বীজ উৎপাদন করব এবং নিজেরদের বীজ দিয়েই পাট চাষ করব। আমরা আর পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে পাট বীজ আমদানি করব না। আমাদের বীজে পাটের ফলনও বেশী হয়। বীজ উৎপাদন করে আমরাও লাভবান হচ্ছি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দেবাশীষ কুমার দাস জানান, ১৫ শ’ ৫০ হেক্টর জমিতে উপজেলাতে পাটের চাষ হয়ে থাকে। এক সময় অন্যদেশের  উপর নির্ভরশীল ছিল বাংলাদেশের। উপজেলাতে ৫০ জনকে কৃষকে প্রণোদনার আওতায় সার ও বীজ দেওয়া হয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে ৪ মণ বীজ হবে। এই বীজ বিএডিসি কৃষকের কাছ থেকে ক্রয় করবে।

মোহাম্মদ শামিউর রহমান মনিটরিং অফিসার, যশোর- খুলনা অঞ্চল, তিনি বলেন, সারা বাংলাদেশ ১০ হাজার কৃষককে প্রণোদনার আওতায় নাবী পাটের বীজ উৎপাদনে করতে সাহায্য করা করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর । অনান্য জেলার তুলনায় কুষ্টিয়া জেলা নাবী পাটের বীজ উৎপাদনে খুবই উপযোগী।

দৈনিক দেশতথ্য//এল//