স্টাফ রিপোর্টার: কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে সাপ মেরে আগুনে পোড়ানোকে কেন্দ্র করে এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গত ২৩ জুন সন্ধ্যায় উপজেলার দড়ি মালিয়াট গ্রামে এই সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় গুরুতর আহত ৩ জনকে কুমারখালী থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হয়। গতকাল বুধবার এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কুষ্টিয়া জর্জ আদালতে মামলার প্রস্তুতি চলছিলো।
জানা যায়, দড়ি মালিয়াট গ্রামের রিয়াজ হোসেনের ছেলে সবুজ হোসেন ও একই গ্রামের রেজাউল ইসলামের ছেলে রিফাত হোসেন একটি সাপ মেরে তা একই গ্রামের মৃত ছামেদ আলী শেখের ছেলে মনিরুল ইসলাম মোক্তারের বাড়ির কাছে এনে আগুন দিয়ে পোড়াতে থাকে। এসময় ধোঁয়া ও দুর্ঘন্ধের সৃষ্টি হলে মনিরুল ইসলাম মোক্তার ঘটনাস্থলে গিয়ে সবুজ ও রিফাতকে অন্য কোথাও গিয়ে সাপ পোড়ানোর পরামর্শ দেয়। এতে সবুজ ও রিফাত ক্ষিপ্ত হয় এবং কথা কাটাকাটি হয়। এরপর রাত ১০টার দিকে মনিরুল ইসলাম মোক্তার নিকটবর্তী আরিফের দোকানে কেনাকাটা করতে গেলে আগে থেকে ওতপেতে থাকা সবুজ, রিফাত, নায়েব আলীর ছেলে সাইম হোসেন ও আতিয়ার রহমানের ছেলে শাকিল হোসেন হাতুড়ি ও বাঁশের লাঠি দিয়ে অতর্কিত হামলা করে। মোক্তারের চিৎকারে তার ভাতিজা সাজ্জাদ হোসেন খোরশেদ চাচাকে উদ্ধার করতে গেলে তিনিও রক্তাক্ত জখম হন। স্থানীয়দের বরাতে জানা যায়, ধীরে ধীরে আক্রমণকারীদের দলে যুক্ত হয় একই গ্রামের আতিয়ার রহমানের ছেলে রবিউল ইসলাম, মৃত মোসলেম উদ্দিনের ছেলে মিরাজ হোসেনসহ আরও অনেকে। আহতদের উদ্ধার করে রাত ১১টার দিকে কুমারখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে অভিযুক্তরা সেখানেও আহতদের উপরে নতুন করে চড়াও হয়। হাসপাতালে এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। অভিযোগ আছে উপস্থিত লোকজন ৪-৫ জনকে দেশীয় অস্ত্রসহ ধরে পুলিশে সোপর্দ করলে পুলিশ তাদেরকে ছেড়ে দেয়। এসময় তাদের হাতে হাতুড়ি, লোহার রড ও চাইনিজ কুড়াল ছিলো বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়। এসময় নতুন করে আহত হয় দড়ি মালিয়াট গ্রামের আমিরুল ইসলাম (ইমান আলী)- এর ছেলে বাইদুর রহমা স্বপন। আহত তিনজনকেই মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে জখম করা হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায় খোরশেদের মাথায় ৩টি সেলাই, স্বপনের মাথায় ৩টি সেলাই ও মনিরুলের মাথায় ৪টি সেলাই দেয়া হয়েছে।
এই খবর লেখা পর্যন্ত এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। আহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে কুষ্টিয়া অস্থায়ী আর্মি ক্যাম্পে অভিযোগ দায়ের করতে গেলে তা গ্রহণ করা হয়নি। কুমারখালী থানায় এজাহার দায়ের করতে গেলে সেটাও গ্রহণ করেনি থানা প্রশাসন। হামলাকারীদের ছেড়ে দেয়া ও মামলা না নেয়ার বিষয়ে জানতে চেয়ে কুমারখালী থানার ওসিকে বারবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//

Discussion about this post