গোফরান পলাশ, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) : পটুয়াখালীর কুয়াকাটার চরগঙ্গামতি এলাকার সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গাছ নির্বিচারে কেটে নিচ্ছে একটি প্রভাবশালী মহল।
এনিয়ে বন কর্মকর্তার যেন কোন দায় নেই। স্থানীয়দের বক্তব্য, প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপে নিচ্ছে না বন বিভাগ। তবে পাবলিক আই ওয়াশে দু’একটি মামলা দায়ের করা হলেও এতে অভিযুক্ত প্রভাবশালীদের বাদ দিয়ে আসামী করা হচ্ছে খেটে খাওয়া মানুষদের।
জানা যায় , চরগঙ্গামতি সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে একটি প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় নিয়মিত বনাঞ্চলের বড় বড় গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে বনদস্যুরা। এতে বনভূমি উজাড় হয়ে পরিবেশের ভারসাম্য মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ছে। বনাঞ্চলের বিভিন্ন জায়গা থেকে কেটে ফেলা গাছের অংশ, গুঁড়ি ও ডালপালা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ এই কাজের সঙ্গে একটি প্রভাবশালী মহল জড়িত। যাদের ছত্রছায়ায় কখনও দিনের আলোয়, আবার কখনও রাতের অন্ধকারে নির্বিচারে গাছ কেটে পাচার করছে বনদস্যুর।
স্থানীয় বাসিন্দা সবুর মিয়া বলেন, যখন যার প্রয়োজন হয় তখনই গাছ কেটে নেয়। কেউ সমুদ্রের স্রোতে উপড়ে পড়া গাছ কেটে বিক্রি করে, আবার কেউ সরাসরি বনের ভেতরে ঢুকে বড় বড় গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে। এতে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।
উপকূল পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের নেতৃস্থানীয় মো. আবুল হোসেন রাজু বলেন, গঙ্গামতির সংরক্ষিত বন ধ্বংস হলে শুধু গাছই নয়, উপকূলের প্রাকৃতিক ঢালও ধ্বংস হবে। ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের সময় এ বন উপকূলের রক্ষা কবজ হিসেবে কাজ করে। তাই বন রক্ষায় প্রশাসনের দ্রুত ও কার্যকর ব্যবস্থা জরুরি।
তিনি আরও বলেন, এখনই ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে উপকূল ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। নির্বিচারে গাছ কাটার ফলে উপকূলের জীববৈচিত্র্য ধ্বংস এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি বহুগুণে বাড়বে।
গঙ্গামতি বিট কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ঝড়ে ভেঙে পড়া বা মরে যাওয়া গাছ স্থানীয়রা অনেক সময় কেটে নেয়। তবে বনাঞ্চল থেকে অবৈধভাবে গাছ কাটার বিষয়ে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। ইতিমধ্যে কিছু কাঠ জব্দ করা হয়েছে।
মহিপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা কে এম মনিরুজ্জামান বলেন, কিছু বনদস্যুরা রাতের আঁধারে বনের গাছ কেটে নিয়েছে। গাছ পাচারকারীদের একটি তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। বেশ কিছু কাঠ জব্দ করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

Discussion about this post