কুষ্টিয়ার অপরাধ দমনে কাজ করে চলেছে কুষ্টিয়া জেলা পুলিশ। তারপরও কিছু কিছু ঘটনা নিয়ে মাঝেমাঝেই সমালোচনার মুখে পড়ে পুলিশ। কখনও কখনও বিপরীত কিছু সংবাদও প্রকাশ হয় নানা মাধ্যমে। প্রশ্ন উঠেছে তাহলে কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের কি কোন সাফল্যই নেই?
এ নিয়ে দৈনিক দেশতথ্যের প্রশ্নে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার খাইরুল আলম বলেছেন: ২০২১ সালে এই জেলার এসপি হিসেবে যোগদানের পর থেকে কর্তব্যের তাগিদে নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাচ্ছি। আমার কাছে স্বার্থের চেয়ে কর্তব্য বড়।
এই নীতিকে প্রধান্য দিয়ে করোনার সময়ে নিজে মাঠে থেকে প্রত্যক্ষভাবে কর্তব্য পালন করেছি। অপরাধ দমনে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মাধ্যমে ডোর টু ডোর পুলিশি সহায়তা দিয়েছি। পুলিশ সদস্য নিয়োগে স্বচ্ছতা বজায় রেখেছি। কোন অপরাধী চক্রকে মগের মুল্লুক বানাতে দেয়নি। যেখানেই অপরাধ সেখানেই হানা দিয়েছি।
গত দুই বছরে (মে/২০২১ থেকে এপ্রিল/২০২৩) রেক্টিফাইড স্পিরিট বা বিষাক্ত এ্যালকোহল জাতীয় তরল পান করে ৬টি উপজেলায় কয়েকজন মারা গেছেন এটা সত্য।
এব্যাপারে আমার বক্তব্য হলো এই যে, এর সব দায়ই পুলিশের নয়। এরজন্য অনেকগুলো সংস্থা আছে। তাদের অধীনে জেলার ভেড়ামারা কুষ্টিয়া সদর ও কুমারখালী উপজেলায় ৩ টি মদের বৈধ দোকান আছে। প্রায় দেড় হাজার লোকের মদ পানের পারমিট আছে। বিপুল সংখ্যক হোমিওপ্যাথিক ওষুধের দোকান আছে। বেশ কয়েকটি কারখানা আছে।
এসব উৎস থেকে কেউ যদি বিষাক্ত মদ কিনে বা বাইরের জেলা থেকে মদ এনে পান করে তার দায় পুলিশের উপর এককভাবে চাপানো কতটা যুক্তি সঙ্গত তা প্রশ্নাতীত নয়।
এই জেলায় কেউ পুলিশকে ম্যানেজ করে ওপেন মদ মাদক বা জুয়ার আসর বসিয়েছে এমন কোন খবর নেই। এগুলো আমরা কঠোরভাবে দমন করি বলেই গত ২০২১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারী থেকে ২৩ সালের ২৭ মে পর্যন্ত কুষ্টিয়া জেলায় মাদক মামলা হয়েছে ১৬২৪টি গ্রেফতার হয়েছে ২১১৩ জন। জব্দ করা হয়েছে ১২৭. ৬ কেজি হেরোইন ও ১২৯ টি হেরোইনের পুরিয়া জব্দ করা হয়েছে।
৭৫১১ বোতল ফেন্সিডিল ১৬ দশমিক ৯৯ কেজি গাঁজা ১১৩৮৭ পিছ ইয়াবা ৩০,৬৭৪ পিছ ট্যাপেনডাইল ট্যাবলেট ৯২ বোতল বিদেশী মদ ৩ বোতল দেশী মদ ৩৮১ লিটার তাড়ি ৪৩ লিটার ৮ টি ইনফুল ইনজেকশন জব্দ করা হয়েছে। পুলিশের দমন নীতির কারনেই এত মামলা ও গ্রেফতার হয়েছে।
এখানেই শেষ নয়, দুই বছরে অস্ত্র মামলা হয়েছে ৫২ টি। গ্রেফতার হয়েছে ৭৩ জন। উদ্ধার হয়েছে ১৪ টি পিস্তল ১ টি পাইপ গান ১টি কাটা রাইফেল ৮ টি শ্যূটারগান একটি ৩০৩ রাইফেল ১১ টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ৮৭৪ টি দেশী অস্ত্র।
বিষ্ফোরক মামলা হয়েছে ১৮ টি। এসব মামলায় ৮৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। উদ্ধার হয়েছে ৬৮ টি ককটেল ৮৭ রাউন্ড গুলি ৮ টি ম্যাগজিন ১ টি গ্রেনেড ২৩ প্যাকেট বিয়ারিং ৪ কেজি ৩২০ গ্রাম লোহার টুকরা ১৪ টি জদ্দার কৌটা।
চোরাচালান মামলা হয়েছে ৬ টি। গ্রেফতার হয়েছে ১৭ জন। উদ্ধার করা হয়েছে ৬৫০ ভারতীয় রুপি ৪০০ সৌদি রিয়াল ১,৭৬,৯৩,৩৫০ টি নকল বিড়ি ৩০৮০ টি সিগারেট৫,০০০ পিছ নকল ব্যানডরোল ১০ প্যাকেট পাতার বিড়ি ২২ টি মোটরসাইকেল ৯টি ইজি বাইক ২ টি ট্রাক ২ টি সিএনজি ২ টি সাইকেল ৫ টি পাখি ভ্রান ১ টি আলমসাধু ৯৪ টি মোবাইল ৩৯৪ ভরি রূপা ৩,৭৪,৩৬৮ টাকা স্বর্ণর চেইন ২৫০ টি।
ওয়ারেন্ট এসেছে ১৬২৪৯ টি। তামিল হয়েছে ১৫৮৯১ টি। জুয়ার কাজে ব্যবহার হওয়া ১১৩ টি ক্যারাম জব্দ করা হয়েছে। প্রতারণার মাধ্যমে খোয়া যাওয়া ৪১,৫৮,৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
নানা বিধ প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে কর্তব্য পালনে আমি অভ্যস্ত। আমি যতদিন এই জেলায় আছি ততদিন হাজারো বাঁধা উপেক্ষা করে কাজ করে যাব এটাই আমার সংকল্প।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//জুন ০৩,২০২৩//

Discussion about this post