কুষ্টিয়ার খোকসায় উপজেলা চেয়ারম্যান পদের উপ নির্বাচনকে ঘিরে উএনও র গাড়ী ভাংচুর হয়েছে। এই উপজেলার চেয়ারম্যান সদর খান কুষ্টিয়ার জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় পদটি শুন্য হয়েছে।
শুন্য পদে আওয়ামী লীগরে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন প্রার্থী বাবুল আক্তার। তার বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মোতাহার হোসেন খোকন। এই দুই প্রার্থীর মধ্যে চরম উত্তেজনা শুরু হয়েছে।
উভয় পক্ষের লোকজন মাঝে মাঝেই সংঘর্ষ জড়িয়ে পড়ছেন।
শনিবার রাতে খোকসা পৌরবাজার এলাকায় আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সাথে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়া ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এসময় পিছন থেকে ছুড়া ইটের আঘাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সরকারি গাড়ির পিছনের গ্লাস ভেঙে যায়। এ ঘটনায় ১৫০ জনকে আসামী করে শনিবার রাতে মামলা করেছেন ওই গাড়ীর চালক মো. বাদশা ।
রোববার সন্ধায় এতথ্য নিশ্চিত করেছেন খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মামুনুর রশিদ। তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সরকারি গাড়ি ভাংচুরের ঘটনায় ১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে থানায় মামলা হয়েছে। এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো আটক বা গ্রেফতার নেই। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ কাজ করছেন।’
খোকসা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রিপন বিশ্বাস বলেন, ‘ বর্তমানে খোকসায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। সরকারি গাড়ি ভাংচুর ও সরকারি কাজে বাঁধা প্রদানের ঘটনায় থানায় মামলা করা হয়েছে।’
কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদের উপ – নির্বাচনে প্রচারণা শেষে বাড়ি ফেরার পথে নৌকা প্রার্থীর কর্মী কায়েফ আলী (২০) নামের এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
শনিবার (২৯) অক্টোবার রাতে খোকসা পৌরসভা ভবন সড়কের যুবসংঘ ক্লাব এলাকায় এঘটনা ঘটে। আহত ব্যক্তি পৌরসভার পাতেলডাঙী এলাকার রবিউল ইসলামের ছেলে। তিনি পেশায় দিনমজুর। তিনি বর্তমানে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বলছেন, ‘ তাঁরা কোনো হামলায় জাড়ায়নি। নিজেরা নিজেদের গুলি করে অন্যকে দোষারোপ করছেন।’ এদিকে পুলিশ বলছে রাতে গোলাগুলির কোনো ঘটনা ঘটেনি। এ্যাক্সিডেন্টলি (দুর্ঘটনাবশত) বা আত্মঘাতী হতে পারে। তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন।’
নোকা প্রার্থীর সমর্থকরা জানায়, শনিবার ওসমানপুর ইউনিয়নে তাদের পথসভা ছিল। পথ সভা শেষে পাতেলডাঙী এলাকার কর্মীরা রাত ৯ টার দিকে বাড়িতে ফিরছিলেন। এ সময় প্রতিপক্ষের লোকজন আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে পালিয়ে যায়। এতে কায়েফের বাম হাতের বোগলের নিচে গুলি লাগে। এসময় অন্যান্য কর্মীরা আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে থোকসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাতেই কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রাতে নৌকা ও ঘোড়া মার্কা প্রতীকের সমর্থক – কর্মীদের মধ্যে পাল্টা ধাওয়া ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়ি ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। পরে নৌকা প্রার্থীর এক জনকে গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা জানা যায়। তবে এ্যাক্সিডেন্টলি বা আত্মঘাতী গুলির ঘটনা ঘটতে পারে।
এ বিষয়ে নৌকার প্রার্থী বাবুল আখতারের ভাতিজা শাফি বলেন, ‘ আমাদের লোকজন প্রচারণা শেষে বাড়িতে ফিরছিল। পথিমধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজন তাদের ওপর অতর্কিত আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এতে কায়েফ গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। থানায় মামলা করা হবে।’
ঘোড়া মার্কা প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোতাহার হোসেন খোকন বলেন, ‘ রাতে আমরা বাড়ি চলে গিয়েছিলাম। কোনো সংঘর্ষে জড়ায়নি বা হামলা করিনি। নৌকার লোকজন নিজেরায় নিজেদের লোকের গুলি করে আমাদের দোষ দিচ্ছেন।’
খোকসা থানার ওসি সৈয়দ আশিকুর রহমান বলেন, ‘ রাতে কোনো গুলাগুলির ঘটনা ঘটেনি। নিজেদের মধ্যে এক্সিডেন্টলি বা আত্মঘাতি হতে পারে। আহত ব্যক্তি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।’
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//অক্টোবর ৩১,২০২২//

Discussion about this post