হাসান আলী, কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ায় এবার সার্বক্ষনিক পুলিশ প্রহরায় বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্যের মাথায় এক ব্যক্তি উঠে নানা অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে ভাস্কর্যের ভাবগাম্ভীর্যকে অবমাননার অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার বেলা ৩টায় শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়স্থ বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্যে ঘটে যাওয় এই ঘটনার চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে নড়েচরে বসে জেলার আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।
স্থানীয় এক প্রত্যক্ষদর্শী কাবিল হোসেন বলেন, দুপুরের পর এক ব্যক্তি গ্রে রংয়ের ফুলপ্যান্ট, কোমড়ে জড়ানো গাঢ়ো লাল রংয়ের সোয়েটার গায়ে নেভি ব্লু রংয়ের গেঞ্জি এবং পায়ে কালে রংয়ের জুতা পরিহিত অবস্থায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য বয়ে বঙ্গবন্ধুর মাথার উপরে উঠে নানা অঙ্গভঙ্গি করতে থাকে। অনেকেই কৌতুহল ভরে লোকটাকে পাগল মনে করে খেলা দেখছিলো। কেউ কেউ মোবাইল দিয়ে ছবিও তুলছিলো। কিছুক্ষনের মধ্যে সেখানে আশপাশ থেকে লোক জড়ো হয়। এসময় একজন ভদ্রলোক ওই ব্যক্তিকে ডেকে নেমে আসতে বলেন।
এবিষয়ে এই ভাস্কর্য নির্মান ও স্থাপন কর্তৃপক্ষ কুষ্টিয়া পৌরসভা নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলামের কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি শুনেছি শনিবার দুপুরের পর কোন একটা পাগল নাকি বঙ্গবন্ধু ম্যূরালের মাথায় উঠেছে। আমি সেখানে আমাদের লোক পাঠিয়েছি দেখতে। কোন ক্ষতি হয়েছে কি না। তাছাড়া বিষয়টি দেখার জন্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকেও অবগত করেছি। বঙ্গবন্ধুর ম্যূরালের পবিত্রতা বা নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব আমাদের সবার। যে ব্যক্তি ম্যূরালের মাথায় উঠে এই অবমাননা করেছে সে আসলে আদৌ পাগল কি না সেটা দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা কুষ্টিয়া পৌরসভা গ্রহণ করবে।
বিগত ২০২০ সালের ৪ ডিসেম্বর গভীর রাতে নির্মাণাধীণ এই ম্যূরাল ভাঙচুরের ঘটনায় সারাদেশে একটা সাড়া জেগেছিলো। তারপর থেকে সর্বসম্মতিক্রমে এই ম্যূরালের নিরাপত্তা রক্ষায় সেখানে পুলিশ প্রহরা বসানো হয় বলেও জানান ওই নির্বাহী প্রকৌশলী।
এবিষয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক ওসি সাব্বিরুল আলম জানান, ‘ঘটনাটি শুনেই আমি দেখতে এসেছি প্রকৃত ঘটনা কি ? আশপাশের ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে সনাক্ত করার চেষ্টা করছে পুলিশ। ঘটনার সময় সেখানে পুলিশ প্রহরা ছিলো কি না সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানালেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য বিগত ২০২০ সালে মাঝামাঝি শহরের প্রানকেন্দ্র পাঁচ রাস্তার মোড়ে পূর্ব থেকে স্থাপিত শাপলা চত্বরকে অপসারণ করে সেখানে বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্য নির্মান শুরু করেন কুষ্টিয়া পৌরসভার উদ্যোগে। নির্মাণকালের ওই বছরের ০৪ ডিসেম্বর, শুক্রবার গভীর রাতে কিছু দুর্বৃত্তরা নির্মিত বঙ্গবন্ধুর মুখমন্ডল ও হাতের অংশ ভেঙ্গে ফেলে। এঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানিয়ে দেশব্যাপী বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন বিক্ষোভ সমাবেশ, মিছিল ও মানববন্ধন করে। পরে ওই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বেশ কয়েকজন মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও শিক্ষককে গ্রেফতার করে আদালতে সৌপর্দ করে পুলিশ।
দৈনিক দেশতথ্য//এল//

Discussion about this post