নিজস্ব সংবাদদাতা : নানা আয়োজনে কুষ্টিয়ায় এসএসসি ১৯৯৪ ব্যাচের মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার কুষ্টিয়া শহরের গড়াই নদীর পাড় রেনউইক যজ্ঞেশ্বর এন্ড রিসোর্টে দিনব্যাপী মিলনমেলায় সামিল হন কুষ্টিয়া ছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা প্রায় ৪শতাধিক ৯৪’র বন্ধুরা।
কুষ্টিয়া সদর ৯৪ ব্যাচের আয়োজনে ওইদিন সকাল ৯টায় রেনউইক রিসোর্টে রেজিষ্ট্রেশনের মধ্য দিয়ে মিলনমেলার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
এর পর বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা রিসোর্ট থেকে বের হয়ে কুষ্টিয়া শহর প্রদক্ষিণ করে। জনসচেতনতামুলক নানা ব্যানার ফেস্টুন শোভা পায় শোভাযাত্রায়। যেমন দুর্নীতিকে না বলি, গাছ লাগায়, গাছের পরিচর্যা করি ইত্যাদী।
পূনরায় শোভাযাত্রাটি শেষ হয় রেনউইক রিসোর্টের মূল মঞ্চে। ততক্ষণে মূলমঞ্চ এবং গোটা রেনউইক চত্বর যেন ৯৪ সদস্যদের পদচারণায় পূর্ণ হয়ে পড়ে। একে অপরের সাথে বন্ধুরা যেন ব্যস্ত হয়ে পড়েন ভাববিনিময়ে । যাদের সাথে গত ৩০ বছরে কালেভদ্রে দেখা কিংবা কথা হয়নি। এদিন তারা একে অপরের মুখোমুখি হবার সুযোগ পান। ফিরে যান আজ থেকে ৩০ বছর আগের স্মৃতিতে। স্মৃতি ধরে রাখতে ভিডিও কিংবা স্থিরচিত্রে নিজেকে সংরক্ষণেও ব্যস্ত হয়ে পড়েন তারা। বন্ধুদের পাশাপাশি অনেক বিপুল সংখ্য বান্ধবীও যুক্ত হন অনুষ্ঠানে। রিসোর্টের ছায়াশীতল পরিবেশ আর গড়াই নদীর অপরূপ দৃশ্যও যেন প্রাণভরে উপভোগ করেন তারা। সকালের নাস্তা, কফি কিংবা কুষ্টিয়ার ঐতিহ্য কুলফি আইসক্রিমের স্বাদও উপভোগ করেন প্রাণভরে। তবে মুলমঞ্চের আয়োজন ছিল মনোমুগ্ধকর। সঞ্চালক ড. রাশেদ, সাচ্চুর আর শামীমের চমৎকার উপস্থাপনায় বন্ধুদের স্বরচিত কবিতা কিংবা গান কৌতুক ভিন্নরকম মাত্রা যোগ করে। দিনশেষে র্যাফেল ড্র পূর্ণাঙ্গতা আনে গোটা মিলনমেলা।
তবে কুষ্টিয়ার ইতিহাসে এমন বৃহৎ আয়োজনে মুগ্ধ মিলনমেলায় অংশ নেয়া ৯৪’র বন্ধুরা।
দৌলতপুরের বন্ধু পলাশের ভাষ্য কুষ্টিয়াতে এমন আয়োজন ইতোপুর্বে দেখিনি কখনো। যা দেখিয়েছে কুষ্টিয়া সদর ৯৪’র বন্ধুরা। আগামীতে আরো বড় পরিসরে আয়োজনের প্রত্যাশাও করেন তিনি। একই অভিব্যক্তি কুমারখালীর বন্ধু শাহজাহানেরও।
কুষ্টিয়ার আমলার মনি, রফিক ও তাইজুলদের কন্ঠেও অনুষ্ঠান আয়োজনে ইতিবাচক মনোভব। তাদের মতে যা হয়েছে তা চমৎকার।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালক কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. রাশেদ মিলনমেলা আয়োজকদের একজন। এমন আয়োজনকে সফল উল্লেখ করে সব বন্ধুদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি। বলেন প্রথমবারের মত এমন বড় পরিসরে আয়োজন ছিল ত্রুটি বিচ্যুতিহীন। এমন আয়োজনের সাথে সম্পৃক্ত হতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করেন ড. রাশেদ।
একই অভিব্যক্তি নাজমুল হুসাইন সাচ্চুর কন্ঠেও। কুষ্টিয়া সরকারী কলেজের এই শিক্ষক মনে করেন ৯৪’র সদস্য হতে পেরে আমি ধন্য এবং গর্বিত। কারন অনেক ভালো বন্ধুদের সংস্পর্শে একদিনের জন্য হলেও মিলিত হবার সুযোগ হয়েছে।
কেএসএম হাইস্কুলের বন্ধু বিশিষ্ট চক্ষুবিশেষজ্ঞ ডা. আল মামুনের মতে এবারের আয়োজন ছিল প্রাণবন্ত উপভোগ্য। নিজেকে সম্পৃক্ত করতে পেরে ধন্য মনে করেন তিনি।
অনুষ্ঠান আয়োজন নিয়ে যাদের শ্রম ছিল বর্ণনাতীত। তাদেরই একজন শরীফুল ইসলাম। মোহিনী মোহন বিদ্যাপীঠের ৯৪ ব্যাচের সদস্য। প্রধান উদ্যোক্তা শফিউল আজমের পরামর্শ ও নির্দেশনায় গোটা অনুষ্ঠান সফলতার পেছনে গুরুত্বপুর্ণ অবদান ছিল তার। নিষ্ঠা ও সততার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। সাথে পেয়েছিলেন এডমিন প্যানেলের এক ঝাঁক বন্ধু। সবুজ, শরীফ বিশ্বাস, জিল্লু, মুরাদ, বারী, রশিদ, কালাম, আজাদ, শুভ, হিরা, আকাশ, তুষার, ফিরোজা, লিপি, দোলাদের মত কর্মঠ সাথী। সাথে নতুন প্রাপ্তী দি ওল্ড কুষ্টিয়া হাইস্কুলের বন্ধু সোনা আর কেএসএম হাইস্কুলের শামীম। তাদের শ্রমও কমছিলনা।
শরীফুল ইসলামের মতে এমন বৃহৎ আয়োজনে সফলতার সাথে উত্তীর্ণ হতে পেরেছি। সকলের সহযোগিতা এবং ভালোবাসা ছিল বলেই সম্ভব হয়েছে বৃহৎ এই মিলনমেলা সম্পন্ন করা। ভবিষ্যতে এধরনের আয়োজন আরো করতে চাই।
দক্ষ সংগঠক সবুজের উচ্ছ্বাসটাও কম ছিলনা। অনুষ্ঠান সফলতার পেছনে তার অবদান অনস্বীকার্য। তাই অনুষ্ঠান সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ায় তিনি সকল বন্ধুদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
সদর ৯৪’র মিলনমেলা বাস্তবায়নে স্বপ্ন দেখেছিলেন কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের শিক্ষার্থী শফিউল আজম। সদর ৯৪ গঠন এবং মিলনমেলা বাস্তবায়নে তাঁর প্রচেষ্টা সর্বাধিক। বিরামহীন পরিশ্রম করেছেন মিলনমেলার সফল পরিনতিতে। তাঁর সার্বিক দিক নির্দেশনায় সর্ববৃহৎ মিলনমেলা সফল হয়েছে। তিনি বলেন সকলের সার্বিক সহযোগিতা এবং বন্ধুসুলভ আচরণের ফলেই সফলভাবে সম্পন্ন হয় মিলনমেলা। এজন্য তিনি এডমিন প্যানেলের সকল বন্ধুদের প্রতি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। বিশেষ করে বিদ্যাপীঠ স্কুলের শরীফুল ইসলাম, এহসানুল করিম সবুজ এবং কেএসএস হাইস্কুলের বন্ধু শরীফ বিশ্বাসের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে ভূলেননি তিনি। একই সাথে সহযোগিতার জন্য বন্ধু বিশিষ্ট শিল্পপতি ও ব্যবসায়ী বন্ধু ডা. হাবিবুর রহমান সাজু, শিশির বেকারী এন্ড কনফেকশনারীর স্বত্ত্বাধিকারী আল্লামা তানভীর শিশির, কুষ্টিয়া মেটাল এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির এমডি ফরহাদ হোসেন, ডা. আলম মামুন, জন এবং সজলের প্রতিও বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

Discussion about this post