নিজস্ব প্রতিনিধি : খোলা বাজারে খাদ্যশস্য বিক্রয়- ওএমএস কার্যক্রম বন্ধ থাকায় কুষ্টিয়া পৌর এলাকার নিম্ন আয়ের লোকজন চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।
গত জুনের ৩০ তারিখ ওএমএস ডিলারদের এক বছরের মেয়াদকাল শেষ হয়। চলতি জুলাইয়ের ১৭ তারিখ কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকের সেমিনার কক্ষে ওপেন লটারির মাধ্যমে নতুন ডিলার নিয়োগের আয়োজন করা হয়। তবে লটারির শুরুতেই বিএনপি সমর্থিত আবেদনকারীরা আওয়ামী দোসরের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ এনে সেমিনার কক্ষ থেকে বের হয়ে যান। পরে একে একে সকলেই সম্মেলন কক্ষ ত্যাগ করলে লটারি কার্যক্রম আর এগুতে পারেনি। আওয়ামী কানেক্টিভিটির অভিযোগ তুলে ডিলার নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করা হলে নিরপেক্ষ আবেদনকারীদের নাখোশ হতে দেখা গেছে। আবেদনকারীদের মধ্যে আওয়ামী দোসর আছে মর্মে যারা অভিযোগ তুলেছিলেন তাদের কেউই তাদের অভিযোগের পক্ষে কোন প্রমাণ হাজির করতে পারেননি বলে জেলাপ্রশাসক দাবি করেন। তিনি বলেন, ২১৮ জন আবেদনকারীর মধ্য থেকে কঠোর যাচাই-বছাই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ১১৭ জনকে টেকানো হয়। এদের মধ্যে লটারির মাধ্যমে পৌরসভার ২১টি ওয়ার্ডের জন্য ২১ জনকে ডিলার নিয়োগের কার্যক্রম চলছিলো।
প্রজ্ঞাপনে সুযোগ থাকা সত্ত্বেও ঢালাওভাবে পুরোনো ডিলারদের সকল আবেদন বাতিল করা হয়েছে। এতে পুরোনো ডিলারদের মধ্যে যারা সৎ ও নিষ্ঠাবান ডিলার ছিলেন তাদের মধ্যে দেখা গিয়েছে ক্ষোভ। তারা প্রশ্ন করেন, যেসব ডিলারের বিরুদ্ধে কোন অনিয়মের অভিযোগ নেই তাদের আবেদনপত্র কেন বাতিল করা হবে? আবার প্রজ্ঞাপনে বর্ণিত নীতিমালাও জেলা খাদ্য বিভাগ মেনে চলছে না বলে ব্যাপক কানাঘুষা শোনা যাচ্ছে। প্রজ্ঞাপনে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে যে, ডিলারশীপের মেয়াদ শেষে কোন কারণে যদি নতুন ডিলার নিয়োগ দিতে বিলম্ব হয় তাহলে পুরাতন ডিলারদের মাধ্যমে খোলা বাজারে খাদ্যশস্য বিতরণের কাজ চালু রাখতে হবে।
এদিকে গত একমাস কুষ্টিয়া পৌর এলাকায় ওএমএস কার্যক্রম বন্ধ থাকায় নিম্ন আয়ের মানুষ পড়েছেন চরম খাদ্য সংকটে। পৌর এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ড সরেজমিন পরিদর্শন করে ভুক্তভোগীদের দুর্দশার কথা জানা গেছে। অথচ কুষ্টিয়ার বাইরে আরও যেসব জেলায় নতুন ডিলার নিয়োগ দেয়া সম্ভব হয়নি সেসব স্থানে পুরোনো ডিলারদের মাধ্যমে ওএমএস জারি রাখা হয়েছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
এব্যাপারে কুষ্টিয়া জেলাপ্রশাসক তৌফিকুর রহমানকে প্রশ্ন করা হলে তিনি এই প্রতিবেদককে জানান, নিয়ম থাকলেও এখানে মেয়াদোত্তীর্ণ পুরাতন ডিলারদের দিয়ে আমরা ওএমএস কার্যক্রম চালাবো না। মাগুরাসহ অনেক জেলাতে খাদ্য বিভাগ সরাসরি ভোক্তাদের মাঝে ওএমএস কার্যক্রম চালু রেখেছে- এমন উদাহরণ দেয়া হলে জেলাপ্রশাসক বলেন, না আমরা ওটাও করবো না। জেলা খাদ্য কর্মকর্তা দেশের বাইরে আছেন, তিনি ফিরে এলে শীঘ্রই আমরা নতুন ডিলার নিয়োগ করবো।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আল্ ওয়াজিউর রহমান বিদেশ সফরে থাকায় তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।