২২ দিন পর লুকিয়ে থাকা শিশুকে খুঁজে আনলো পুলিশ
কুষ্টিয়ার কুমারখালী থানার এক শিশু তৌফিক (১০) রাগ করে বাড়ি থেকে চলে যায়। এ নিয়ে ওই শিশুর বাবা তার সন্ধানে বের হয়। এ সময় এক কিশোর আশিক (১৬) বলে তার ছেলেকে সে কুমারখালী রেল স্টেশনে বসে থাকতে দেখেছে। এতেই ওই শিশুর বাবা সন্ধান দেওয়া কিশোর আশিককে সন্দেহ করে। তার ধারণা হয় এই কিশোরই (আশিক) তার ছেলেকে অপহরণ করে গুম করেছে।
এরপর শিশু তৌফিকের বাবা কিশোর আশিকের নামে কুমারখালী থানাকে মামলা নিতে বাধ্য করে। পুলিশ কিশোর আশিককে গ্রেফতার না করে আধুনিক প্রযুক্তি ও বিভিন্ন সোর্সের মাধ্যমে খবর নিয়ে লুকিয়ে থাকা শিশু তৌফিককে (৩২ দিন পর) গতকাল মঙ্গলবার উদ্ধার করে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে।
জানা যায়, গত জুলাই মাসের ২২ তারিখে কুমারখালী বাটিকামারা গ্রামের হাসিমপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুদ্দিন এর ছোট ছেলেকে তার বড় ছেলে মারপিট করে। এতে ছোট ছেলে তৌফিক (১০) বাড়ি থেকে রাগ করে চলে যায়।
এই ঘটনায় নুরুদ্দিন মাস্টার বাটিকামারা গ্রামের বিভিন্ন জনকে জিজ্ঞেস করেন কেউ তার ছেলেকে দেখেছে কিনা? এর মধ্যে আশিক নামের এক কিশোর তাকে জানায় সন্ধ্যার পর তৌফিককে সে কুমারখালী রেলওয়ে প্লাটফর্মে বসে থাকতে দেখেছে।
এতে নুরুদ্দিন মাস্টার মনে করে এই আশিক তার ছেলেকে গুম করেছে। এরপর তার ছেলেকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আশিককে চাপ দিতে থাকে। এক পর্যায়ে নুরুদ্দিন মাস্টার কুমারখালী থানায় আশিকের বিরুদ্ধে মামলা দিতে যায়।
ওসি কামরুজ্জামান তালুকদার মামলা না নিয়ে তাকে বুঝিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। এরপর নুরুদ্দিন মাস্টার কুষ্টিয়া র্যাব ১২ তে অভিযোগ দেন। তারা খোঁজখবর নিয়ে আশিকসহ তাদের সহপাঠীদের বাড়ি থেকে কোথাও যেতে নিষেধ করেন ।
এরই মধ্যে নুরুদ্দিন মাস্টার চাপ সৃষ্টি করে কুমারখালী থানায় কিশোর আশিককে আসামি করে মামলা করেন। এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাব ইন্সপেক্টর নজরুল ইসলাম তৌফিককে গুমের সত্যতা না পাননি। তাই আসামী আশিককে আটক না করে বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করেন লুকিয়ে থাকা শিশুকে উদ্ধারের চেষ্টা শুরু করেন। এরপর পঞ্চগড় থেকে শিশু তৌফিককে উদ্ধার করে মঙ্গলবার তার পরিবারের কাছে বুঝে দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার জানান, শুরু থেকেই আমরা বুঝতে পেরেছিলাম শিশুটি বাড়ি থেকে পালিয়েছে। কিন্তু প্রধান শিক্ষকের চাপে শেষ পর্যন্ত মামলা নিতে হয়েছে। একজন কিশোরের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ওকে আটক করলে আতংকগ্রস্থ হয়ে ওর জীবনের অনেক বড় ক্ষতি হতে পারে এই আশংকায় ওকে আটক না করে ২৪ ঘন্টা নজরদারিতে রাখা হয়েছিলো। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম অত্যন্ত সিনসিয়ার অফিসার সে অনেক কষ্ট করেছে লুকিয়ে থাকা শিশুটিকে উদ্ধারের জন্য। শেষ পর্যন্ত আমরা শিশুটিকে উদ্ধার করেছি এবং তার পরিবারের কাছে বুঝে দেয়া হয়েছে।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//আগস্ট ২৩,২০২২//

Discussion about this post