নিজস্ব প্রতিনিধি:
কুষ্টিয়া শহরে টানা বর্ষণের প্রভাবে নগরবাসীর জীবনযাত্রা চরমভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
শহরের বেশিরভাগ সড়ক জলমগ্ন, দোকানপাট প্লাবিত এবং বাড়িঘরে পানি ঢুকে জনদুর্ভোগ বেড়েই চলছে। বছরজুড়ে ড্রেন সংস্কার ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমে পৌর প্রশাসনের দীর্ঘ দিনের অবহেলা—এ দুর্ভোগের মুখ্য কারণ হিসেবে চিহ্নিত করছেন সাধারণ মানুষ।
শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা বড়বাজার, মজমপুর গেট, লালন রোড, চৌড়হাস মোড়সহ অধিকাংশ সড়কে ড্রেন কার্যক্রম বছরের পর বছর অযত্ন-অবহেলায় রয়েছে। অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হলে ড্রেনগুলো পানির চাপ নিতে পারে না; মুখগুলোতে জমে থাকা আবর্জনা পানি নিষ্কাশনের পথে বাধা সৃষ্টি করে। সকাল থেকে নাগরিকরা কোমরসমান পানি ডিঙিয়ে অফিস, স্কুলে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। ব্যবসাবাণিজ্য, বাড়িঘর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান—সবক্ষেত্রেই তৈরি হয়েছে চরম অচলাবস্থা।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, নিরবচ্ছিন্ন দুর্ভোগের পেছনে পৌরসভা ও প্রশাসকের অস্পষ্ট ভূমিকা এবং মাঠপর্যায়ে কার্যকর উদ্যোগ না থাকার বিষয়টি উল্লেখযোগ্য। বারবার আশ্বাস দিলেও বাস্তবায়নে দেখা যায়নি কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি। বছরের পর বছর একই সমস্যা থেকে গেলেও বৃহত্তর কোনো পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়নি। সাধারণ জনগণের অভিযোগ, প্রশাসক মিজানুর রহমান মাঠে নেই, পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখার কিংবা সমস্যা নিরসনের জন্য জনতার পাশে দাঁড়ানোর ইচ্ছাও তার মধ্যে নেই। সমস্যা সৃষ্টির আগে যে প্রশাসন ব্যবস্থা নিতে পারে নাই। পৌরসভা চালানোর মত দুরদর্শিতা তাদের আছে বলে জনগণ মনে করছে না। পৌরসভা থেকে একটা ফাইল স্বাক্ষর করতে কাজ ফেলে রেখে কালেক্টরেটে দৌড়াদৌড়ি করতে হয়। সেখানে গিয়েও সিরিয়াল জটে পুরো দিন নষ্ট হচ্ছে। ক্ষতি হচ্ছে শ্রম ঘণ্টার। পৌর জনগণের সেবার জন্য সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালনের দাবী জানিয়েছে। তানাহলে দূর্ভোগ বাড়বে, এক সময় ক্ষিপ্ত জনগণ কালেক্টরেট ঘেরাও করে সব ধরনের কাজকর্ম বন্ধ করে দিতে পারে। জনগণের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে।
নগরীর ব্যবসায়ীরা ড্রেন সংস্কার ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন—সমস্যার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত রেখে হয়েছে শুধু অজুহাত আর আশ্বাস, বাস্তবে কোনো কাজ নেই। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না এলে নাগরিকরা পৌর প্রশাসনের পরিবর্তন ও জবাবদিহিতার দাবি তুলতে বাধ্য হবেন।
উল্লেখ্য, পরিস্থিতির উন্নতিকল্পে সংশ্লিষ্ট কোনো কর্মকর্তা বা প্রশাসকের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি ছাড়া কোনো নির্দিষ্ট কার্যক্রম কিংবা পরিকল্পনার তথ্য পাওয়া যায়নি। এই ক্রমাগত অবহেলা ও প্রশাসনিক ব্যর্থতা—নগরবাসীর ক্ষোভ ও হতাশা বাড়িয়ে তুলছে এবং আগামীতে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে বলে আশঙ্কা করছেন নগর বিশেষজ্ঞরা।

Discussion about this post