রফিকুল্লাহ্ কালবী, কুষ্টিয়া: আগামী ২৫ মে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মবার্ষিকী। এ উপলক্ষে কুষ্টিয়ায় কীভাবে দিবসটি উদযাপন করা হবে তার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
গত ১৭ মে জেলাপ্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে প্রশাসনিক কর্মকর্তা, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক ও সুধিবৃন্দের উপস্থিতিতে জাতীয় কবির জন্মবার্ষিকী পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। আলোচনা শেষে জেলাপ্রশাসক তৌফিকুর রহমানকে আহ্বায়ক করে একটি আয়োজক কমিটি গঠন করা হয়। জাতীয় কবির জন্মবার্ষিকী যথাযথভাবে পালনের লক্ষ্যে দুটি উপকমিটিও গঠন করা হয়।
অতিরিক্ত জেলাপ্রশাসক (সার্বিক) জাহাঙ্গীর আলমকে আহ্বায়ক করে আলোচনা সভা উপকমিটি এবং অতিরিক্ত জেলাপ্রশাসক (রাজস্ব) আব্দুল ওয়াদুদকে আহ্বায়ক করে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপকমিটি গঠন করা হয়। উভয় উপকমিটিতে প্রশাসনের কর্মকর্তা ছাড়াও সদস্য হিসেবে রাখা হয় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন ও সাংবাদিক নেতৃবৃন্দকে। তবে অভিযোগ আছে কুষ্টিয়ার প্রথিতযশা সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিদের এসব অনুষ্ঠানে দাওয়াত করা হয়নি এবং তাদেরকে উপকমিটিতেও রাখা হয়নি। আরও অভিযোগ আছে যে, গেলো ষোলো বছরে যারা ফ্যাসিবাদকে তোষণ করেছে, বিভিন্নভাবে স্বৈরাচার সরকারকে সহযোগিতা করে লাভবান হয়েছে ঘুরেফিরে তাদেরকেই এসব উপকমিটিতে জায়গা দেয়া হয়েছে। কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এবছর আলোচনা অনুষ্ঠানের বিষয়বস্তু নির্ধারণ করা হয়েছে ‘চব্বিশের গণ অভ্যুত্থান – কাজী নজরুলের উত্তরাধিকার’। অথচ চব্বিশের গণ অভ্যুত্থাণের বিরোধী শক্তি ও ব্যক্তিদেরকে উপকমিটিতে স্থান দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। চলতি মাসের ৮ তারিখে শিলাইদহের রবীন্দ্র কুঠিবাড়িতে রবীন্দ্রনাথের জন্মজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষ্যে শেষ মুহূর্তে চব্বিশের ফ্যাসিবাদের পক্ষে সক্রিয় ভূমিকা পালন করায় কুষ্টিয়ার দুই সাংস্কৃতিক কর্মীকে প্রত্যাহার করা হয়। ঐ দুই প্রত্যাখ্যাত সাংস্কৃতিক কর্মীকে নজরুল জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে দেয়ার ব্যাপারে জোর তদবির চলছে। উপকমিটির মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা স্বৈরাচারের পক্ষের শক্তি জেলাপ্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলাপ্রশাসকের নিকট এই তদবির চালাচ্ছে বলে জানা গেছে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপকমিটির ১৩ নম্বর সদস্য করা হয়েছে জাতীয় রবীন্দ্র সংগীত সম্মিলন পরিষদ কুষ্টিয়ার সভাপতিকে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে যে সংস্থা রবীন্দ্র চর্চায় মশগুল থাকে তার সভাপতিকে নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী উদযাপনের একটি উপকমিটিতে সদস্য রেখে তার দ্বারা কী ফায়দা হাসিল করবেন জেলাপ্রশাসক!
সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যে, ২৫ মে বিকাল ৪টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে, যা সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ জারি থাকবে। সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১০টা একই স্থানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আবৃত্তি ও গান পরিবেশিত হবে। ঐদিন সকাল ১০টায় জেলার প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চিত্রাংকন, আবৃত্তি, রচনা প্রতিযোগিতা ও কাজী নজরুল ইসলামের ছবি প্রদর্শন করা হবে।

Discussion about this post