কুষ্টিয়ায় নৌকার প্রতিপক্ষ সাবেক দুই এমপি ও এক মেয়রপুত্র তনু!

শেষ পর্যন্ত কি হবে বলার সময় এখনো আসেনি। তবে কুষ্টিয়া ১,৩,৪ আসনে ৩ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে মনোনয়ন কিনেছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন না পেয়ে কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রেজাউল হক চৌধুরী মনোনয়ন কিনেছেন। কুষ্টিয়া-৩ আসনে কুষ্টিয়ার মেয়রের পুত্র পারভেজ আনোয়ার তনু স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন কিনেছেন। কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রউফ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে স্থানীয় নির্বাচন অফিস থেকে মনোনয়ন পত্র নিয়েছেন।

সোমবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরের দিকে মনোনয়ন বঞ্চিত আবদুর রউফ ও রেজাউল হক চৌধুরী এবং পারভেজ আনোয়ার তনুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।  

রেজাউল হক চৌধুরী ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আফাজ উদ্দিন আহমদকে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি দৌলতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি।

আবদুর রউফ কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসন থেকে ২০১৪ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। আবদুর রউফ কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার বাঁশগ্রাম গ্রামের বাসিন্দা। তিনি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। 

তফসিল ঘোষণার পর আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেতে কুষ্টিয়ার ৪টি সংসদীয় আসন থেকে ৪১ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মনোনয়ন পেয়েছেন, কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ, কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনে সংসদ সদস্য ও দৌলতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ কা ম সরওয়ার জাহান বাদশাহ, কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য ও যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার সেলিম আলতাফ জর্জ। 

সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রউফ বলেন, আমি কুমারখালী-খোকসা আসনের সাবেক এই সংসদ সদস্য। সংসদ সদস্য হিসেবে এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। আমি দলীয় মনোনয়ন পায়নি। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার কোন সুযোগ নেই। আসন্ন নির্বাচনে এই আসনে আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবো। কুমারখালী-খোকসার মানুষ আমার সাথে আছেন। আমাদের জয় হবে ইনশাআল্লাহ। 

রেজাউল হক চৌধুরী বলেন, আমি দলীয় মনোনয়ন পায়নি। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবো। আমি এই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য।  দৌলতপুরের অনেক উন্নয়ন আমার আমলে হয়েছে। দৌলতপুরে মানুষ আমার সাথে আছেন। আমাদের জয় হবে হবে ইনশাআল্লাহ। 

এবিষয়ে কুষ্টিয়া কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সদর উদ্দীন খান বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের জয় হবে। দল যাকে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছে তার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নেতাকর্মীরা কাজ করবে। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিষয়ের আমি কিছু বলতে চাই না। 

জানা গেছে, এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়া-১ ও কুষ্টিয়া-৪ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য রউফ ও রেজাউল নৌকার বিপক্ষে নির্বাচন করবেন। এক্ষেত্রে দলও খুব একটা কঠোর হবে না। কারণ, বিএনপি ভোটে আসবে না, এটি ধরে নিয়েই ক্ষমতাসীনেরা প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন দেখাতে চাইছেন। যাতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কেউ জিততে না পারেন। আওয়ামী লীগের লক্ষ্য নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করে তোলা, ভোট উৎসবমুখর করা ও কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি বাড়ানো। নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক করে তুলতে একাধিক বিকল্পের একটি হলো মাঠে স্বতন্ত্র প্রার্থী রাখা।

নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ আগামী ৩০ নভেম্বর।

খালিদ সাইফুল // দৈনিক দেশতথ্য // ২৭ নভেম্বর  ২০২৩

 প্রিন্ট করুন