কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় স্কুল সংস্কারে বরাদ্দ পাওয়া সরকারী অর্থ ব্যয়ে নির্ধারিত কাজ না করেই বিল ভাওচার দেখিয়ে সম্পূর্ন টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে পৃথক দুটি মামলা করেছে দুদক। মঙ্গলবার বিকেলে কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ বিশেষ আদালতের বিচারক আশরাফুল ইসলামের আদালতে মামলা দুটি দাখিল করেন মামলার বাদী ও তদন্তকারী কর্মকর্তা সমন্বিত
দুর্নীতি দমন কমিশন জেলা কার্যালয় কুষ্টিয়ার উপ পরিচালক আলমগীর হোসেন। মামলা দুটির এজাহারে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে তারা হলেন- মামলা নং ০৬এ উপজেলার মাছুয়াঘাটা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক একতারপুর গ্রামের বাসিন্দা বিদ্যুৎ কুমার বিশ^াসের ছেলে বিবর্ণ কুমার বিশ্বাস (৫৪), ওই বিদ্যালয়ের সভাপতি স্থানীয় বাসিন্দা আমানত আলী বিশ্বাসের ছেলে খোকসা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বাবুল আকতার(৫১), স্থানীয়
সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডি খোকসা উপজেলা প্রকৌশলী মো: আব্দুস সামাদ(৪৮), সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার হোসাইন মোহাম্মদ বেলাল(৫১), মামলা নং ০৭ এ উপজেলার মামুদানীপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের বাসিন্দা মনীন্দ্রনাথ বিশ্বাসের ছেলে অসীম কুমার বিশ্বাস(৫৩), সভপতি স্থানীয় বাসিন্দা মৃত মানষ রঞ্জন বিশ্বাসের কন্যা মহিমা রঞ্জন বিশ্বাস(৬১), ভবানীপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: হাফিজুল হক এবং সভাপতি আনোয়ার হোসেন সহ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বাবুল আকতার, প্রকৌশলী আব্দুস সামাদ ও সহকারী শিক্ষা কর্মকতা হোসাইন মোহাম্মদ বেলালের নামও রয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৯-২০ অর্থ বছরে উপজেলার মাছুয়াঘাটা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভবানীপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং মামুদানীপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিটিতে পৃথক ভাবে বাৎসরিক সংস্কার ও শিক্ষা সহায়ক সামগ্রী খাতে সরকারী বরাদ্দের ২লাখ টাকা করে বরাদ্দ দেয়া হয়। এর মধ্যে একটিতে ৫০হাজার ৮শ ২৫টাকা এবং অপরটিতে ৫৭ হাজার ২শ ২৮টাকার কাজ না করে বিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট ওইসব ব্যাক্তিগণ ভুয়া বিল ভাওচার করে আত্মসাৎ করেছেন বলে দুদকের প্রাথমিক তদন্তে তার সত্যতা পাওয়া গেছে। যা দন্ডবিধির ৪০৯/১১৯ তৎসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা লংঘন। সমন্বিত দুর্নীতি দমন কমিশন জেলা কার্যালয় কুষ্টিয়ার কৌসুলি এ্যাড. আল-মুজাহিদ জানান, দুদকের পক্ষ থেকে বিজ্ঞ আদালতের কাছে এজাহারভুক্ত আসামীদের গ্রেফতারী পরোয়ানা ইস্যুর আরজি দিয়েছি। যদিও বর্তমান সমাজ বাস্তবতায় ছোট অভিযোগের অনেক বড় মামলা হয়েছে মনে হলেও আইনের চোখে এজাতীয় অপরাধকে ছোট করে দেখার কোন সুযোগ নেই। তবে এবিষয়ে সহাকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হোসাইন মোহাম্মদ বেলাল বলেন, ‘দেখুন বিদ্যালয় সংস্কার বাবদ সরকারী বরাদ্দ আসলেই আমরা কমিটি করে সেই টাকার কাজের উদ্দেশ্যে বরাদ্দ দিয়ে দিই। তাছাড়া আমি নন টেকনিক্যাল মানুষ, কাজ ঠিক মতো হয়েছে কিনা সেই ছাড়পত্র প্রদান করেন উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার। উনিই ভালো বলতে পারবেন যে এই খাতের বরাদ্দ টাকার মধ্যে কত টাকার কাজ হয়েছে। তবে বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুস সামাদ প্রতিবেদককে জানান, ‘আচ্ছা পরে এবিষয়টি, এখনও মামলা হয় নাই, এই বিষয়টি খোঁজ নিয়ে আপনাকে জানাবো।’ বলেই তিনি ফোন কলটি কেটে দেন। একই ভাবে মন্তব্য জানতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বাবুল আকতারসহ দুই প্রধান শিক্ষকের মুঠোফোনে কল করলে তারা ফোন ধরেননি।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//এপ্রিল ২০,২০২২//

Discussion about this post