নিজস্ব প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার গোস্বামী দুর্গাপুর ইউনিয়নের শংকরদিয়া গ্রামে রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।
রোববার (১১ মে) বিকেলে বিএনপির দুটি পৃথক প্যানেলের আয়োজিত সমাবেশ ঘিরে সংঘর্ষে জড়ায় দলটির নেতা-কর্মীরা। এতে সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আলফাজ উদ্দিন গুরুতর আহত হন। সংঘর্ষের পর প্রতিশোধপরায়ণ হামলায় পুড়ে যায় একটি গুদাম ও বেশ কয়েকটি বসতবাড়ি।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শংকরদিয়া বাজারে বিএনপির দুটি ভিন্ন প্যানেল একযোগে সম্মেলনের আয়োজন করে। একটির নেতৃত্বে ছিলেন সাবেক চেয়ারম্যান আলফাজ উদ্দিন ও আহাদ আলী, যাঁরা কুষ্টিয়া-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সোহরাব হোসেনের অনুসারী। অপর প্যানেলের নেতৃত্ব দেন বর্তমান ইউপি সদস্য মাহবুব আলম, ডা. খবির উদ্দিন ও ডা. রাজ্জাক, যাঁরা বর্তমানে বিএনপির জেলা সদস্য সচিব জাকির হোসেন সরকারের সমর্থিত।
বিকেল পাঁচটার দিকে শংকরদিয়া হাই স্কুল মাঠে মাহবুল-খবির প্যানেলের কর্মীরা সম্মেলন শুরু করলে, হঠাৎ আসাননগর ও আশপাশের এলাকা থেকে সংগঠিত হয়ে বাজারের মধ্যে প্রবেশ করে প্রতিপক্ষ আলফাজ প্যানেলের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে গুরুতর আহত হন আলফাজ উদ্দিন। তাঁকে দ্রুত স্থানীয়রা উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠান।
পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যখন আলফাজের অনুসারীরা মাহবুল -খবির প্যানেলের একটি গুদাম ও মাহবুব আলমের বসতবাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আলমডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া সদর ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছালে, অভিযোগ রয়েছে—আলফাজ সমর্থকরা ফায়ার সার্ভিসের পাইপ কেটে দেয়, যাতে আগুন নিয়ন্ত্রণ ব্যাহত হয়।
এই ঘটনায় পুরো এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। সম্ভাব্য নতুন সংঘর্ষের আশঙ্কায় পুলিশ অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করেছে। তবে রোববার রাত পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার ও পুরনো ব্যক্তিগত বিরোধই এই সহিংসতার মূল কারণ।
ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মেহেদী হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,
“প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, স্থানীয় রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেই এ সহিংসতা ঘটেছে। সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হয়েছেন এবং অগ্নিসংযোগে একটি গুদাম ও একটি বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং অপরাধীদের শনাক্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।”

Discussion about this post