কুষ্টিয়া প্রতিনিধিঃ পারিবারিক কলহের জের ধরে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আতœহননের চেষ্টা করেন সুমি খাতুন (৩০) নামের এক গৃহবধু। এ সময়ে তার কোলে ছিলো চার বছর বয়সী শিশুকন্যা সুরভী ।
ভাগ্যক্রমে দুজনের জীবন বেঁচে গেলেও ট্রেনে কাটা পড়ে শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে শিশু কন্যা সুরভীর বাম হাত। আর মা সুমি খাতুন গুরুতর আহত হয়ে এখন ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টার দিকে কুষ্টিয়া পৌরসভার হরিশংকরপুর ধোপাপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
আহত সুমি খাতুন কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং এস্টেট এলাকার সি ব্লকের সাপ্পীরুল ইসলাম(সাপ্পী)র স্ত্রী। সুরভী তাদের ২য় সন্তান। প্রায় এক যুগ আগে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার দহকুলা গ্রামের সুমির সঙ্গে সাপ্পীর বিয়ে হয়। তাদের ৮ বছর বয়সী আরো এক ছেলে সন্তান রয়েছে।
আহতের স্বজনরা জানান, স্বামীর সঙ্গে সুমির মাঝেমধ্যেই পারিবারিক বিষয়াদি নিয়ে ঝগড়া হতো। শনিবার সকালে পারিবারিক কলহের জেরে সুমি তার চার বছর বয়সী মেয়েকে নিয়ে বাড়ী থেকে বেরিয়ে যান। পরে শহরের ধোপাপাড়া বড়স্টেশন এলাকায় ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এ সময় শিশুটির শরীর থেকে বাম হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এছাড়া মা ও শিশুটির শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুরুতর জখম হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হরিশংকরপুর ধোপাপাড়া এলাকায় একটি মালবাহী ট্রেন ফরিদপুর থেকে দর্শনার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল । এসময় হঠাৎ করে একটি শিশু কন্যাকে কোলে নিয়ে এক নারী ওই ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দেন। তবে ভাগ্যক্রমে ওই নারী ট্রেনে সাথে ধাক্কা খেয়ে একপাশে পড়ে যান। এতে শিশুটির এক হাত ট্রেনের চাকার নিচে পড়ে দেহ থেকে বিছিন্ন হয়ে যায়। এছাড়াও মা ও মেয়ের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুরুতর জখম হয়। পরে স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে দ্রুত ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসে।
হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, শিশুটির বিচ্ছিন্ন হওয়া বাম হাতের ক্ষত স্থানে ব্যান্ডেজ করা হয়েছে। শিশুটি ও তার মায়ের হাত, পা, মাথা সহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ব্যান্ডেজ করা হয়েছে। তারা যন্ত্রণায় চিৎকার করছেন।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) আশরাফুল আলম জানান আশঙ্কাজনক অবস্থায় শনিবার সকাল ৯ টার দিকে মা ও মেয়েকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহত শিশু বাম হাত কনুইয়ের নিচের অংশ শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। মা-মেয়ে দুজনকেই প্রয়োজনীয় সকল চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
পোড়াদহ রেলওয়ে থানার ওসি মনজের আলী বলেন, সকাল ৮টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের হরিশংকরপুর এলাকায় ফরিদপুর থেকে ছেড়ে আসা দর্শনাগামী মালবাহী ট্রেনে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে।
আর//দৈনিক দেশতথ্য//৩ সেপ্টেম্বর-২০২২

Discussion about this post