কুষ্টিয়া : কুষ্টিয়ার ঝাউদিয়া ইউনিয়নে বিবাদমান দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ৪ জন নিহত ও ১৫ জন আহত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেখানে শোকের মাতম চলছে। ঈদ আনন্দ রূপ নিয়েছে বিষাদে। গ্রামজুড়ে শুধু কান্না আর আহাজারি। শোকে বিহ্বল স্বজনসহ গোটা এলাকার মানুষ । প্রিয়জন হারিয়ে শোকে মুহ্যমান স্বজনরা। এমন চিত্র এখন সন্ত্রাস কবলিত রক্তাক্ত জনপদ কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ঝাউদিয়া ইউনিয়নের আস্তানগর গ্রামে। ঈদের আগের দিন সোমবার (২ মে) বিকেলে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিবাদমান দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় চারজন নিহত এবং ১৫ জন আহত হন। এদিকে সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত আস্তানগর গ্রামের বাসিন্দা মৃত: আজিজুল হকের ছেলে মতিয়ার রহমান (৪৫), দাউদ মন্ডলের ছেলে লাল্টু মন্ডল (৪২), মৃত: হোসেন মন্ডলের ছেলে আবুল কাশেম (৬৫) এবং মৃত: আবুল মালিথার ছেলে আব্দুর রহিম মালিথার (৭০) ময়নাতদন্ত মঙ্গলবার (৩ মে) কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে ময়নাতদন্ত শেষে চার জনের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেন ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাঃ মেহেদী হাসান জনি। তিনি জানান, চারজনকেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে শরীরে উপর্যুপরি একাধিক আঘাত করা হয়েছে। আঘাতের কারণে রক্তক্ষরণ হয়ে তাদের মৃত্যু হয়েছে। বৃষ্টির মধ্যেই মঙ্গলবার বিকেলে জানাজা শেষে ঝাউদিয়ার আস্তানগর গোরস্থানে নিহত ৪ জনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। সংঘর্ষে আহতরা এখনও কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদিকে এ ঘটনায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় থানায় পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে।
একটি মামলায় ঝাউদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান কেরামত উল্লাহকে এ নম্বরে রেখে ৬৭ জনকে আসামি করা হয়।
অপর মামলায় স্থানীয় ইউপি সদস্য আনিসকে প্রধান আসামি কর ২৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সংঘর্ষে নিহত মতিয়ার মণ্ডলের ভাই আশরাফুল এবং নিহত রহিম মালিথার ছেলে রফিকুল মঙ্গলবার কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানায় পৃথকভাবে মামলা দুটি করেন।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান মামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্রসঙ্গত, ঈদের আগের দিন সোমবার বিকেল ঝাউদিয়া ইউনিয়নের আস্তানগর বাজারে ঝাউদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান কেরামত আলীর সমর্থক আব্দুর রহিম মালিথার সাথে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে সাবেক ইউপি সদস্য ফজলু মন্ডলের সমর্থকরা আব্দুর রহিম মালিথার উপর ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায়। এ সময় লঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রহিম ঘটনাস্থলেই মৃত্যু বরণ করেন। আব্দুর রহিম মালিথার নিহত হওয়ার সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে কেরামত আলীর সমর্থকরা পাল্টা ফজলু মন্ডলের সমর্থকদের উপর আক্রমণ করলে দু’পক্ষের সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষ চলাকালে লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ফজলু মন্ডলের তিন সমর্থক নিহত হন। আহত হন অন্তত ১৫ জন। আহতদের উদ্ধার করে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: আশরাফুল আলম

এবি//দৈনিক দেশতথ্য//মে ৩,২০২২//