ওপেলিয়া কনি, স্টাফ রিপোর্টারঃ কুষ্টিয়ায় সাংবাদিক হাসিবুর রহমান রিজুর ওপর নৃশংস সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে টায়ার জ্বালিয়ে মহাসড়ক অবরোধ, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন জেলার সর্বস্তরের সাংবাদিকরা।
সোমবার (২৪জুন) সকাল সাড়ে ১১টায় কুষ্টিয়া প্রেসক্লাব কেপিসি ও সাংবাদিক ইউনিয়ন কুষ্টিয়ার আয়োজনে কুষ্টিয়া ডিসি কোর্টে অবস্থিত প্রেসক্লাব কেপিসি চত্বর থেকে একটি বিশাল মিছিল বের হয়ে কুষ্টিয়া- ঝিনাইদহ মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে শহরের প্রাণকেন্দ্র মজমপুর গেট ঘেরাও করে সড়ক অবরোধ, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এতে করে কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী ও কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজটের।
কুষ্টিয়া প্রেসক্লাব কেপিসি ও সাংবাদিক ইউনিয়ন কুষ্টিয়ার সভাপতি রাশেদুল ইসলাম বিপ্লবের সভাপতিত্বে উক্ত সড়ক অবরোধ, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও জিটিভি জেলা প্রতিনিধি সোহেল রানা, সাংবাদিক ইউনিয়ন কুষ্টিয়ার সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান, কুষ্টিয়া প্রেসক্লাব কেপিসি’র সিনিয়র সহ-সভাপতি ও ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি মিলন উল্লাহ, সহ-সভাপতি ও আর টিভি’র জেলার প্রতিনিধি শেখ হাসান বেলাল, কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুন্সি তরিকুল ইসলাম, কুষ্টিয়া প্রেসক্লাব কেপিসি’র সাংগঠনিক সম্পাদক ও আনন্দ টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি ফিরোজ কায়সার , নির্বাহী সদস্য ও এশিয়ান টেলিভিশনে মিরপুর- ভেড়ামারা প্রতিনিধি ফয়সাল চৌধুরী, এশিয়ান টেলিভিশনের কুমারখালী প্রতিনিধি কে এম আর শাহীন, এশিয়ান টেলিভিশনের দৌলতপুর প্রতিনিধি সোহানুর রহমান শিপন, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ কুষ্টিয়া জেলা শাখার সভাপতি নজরুল ইসলাম প্রধানসহ প্রমুখ।
ঘণ্টাব্যাপী সড়ক অবরোধ করে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শনকারী সাংবাদিকদের বিক্ষুব্ধ স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে মজমপুর গেট এলাকা।
কেপিসির সভাপতি রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব বলেন, সাংবাদিক রিজুর হামলাকারীদের খুঁজে বের করা না হলে কুষ্টিয়া অচল করে দেওয়া হবে। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের ধরা না হলে বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
উল্লেখ্য, গত বুধবার (১৯জুন) এশিয়ান টেলিভিশনের কুষ্টিয়ার স্টাফ রিপোর্টার ও স্থানীয় দৈনিক সত্যখবর পত্রিকার সম্পাদক হাসিবুর রহমান রিজু নৃশংস সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন। বর্তমানে তিনি রাজধানী ঢাকার ট্রমা সেন্টার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২০জুন)সন্ধ্যায় আহত সাংবাদিক হাসিবুর রহমান রিজুর স্ত্রী টপি বিশ্বাস কুষ্টিয়া মডেল থানায় বাদী হয়ে ১৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামায় ২৫ থেকে ৩০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় পুলিশ এখন পর্যন্ত বাবর আলী নামে একজনকে গ্রেফতার করলেও মূল আসামিসহ বাকিরা রয়েছে এখনো ধরা-ছোয়ার বাইরে।
এ মামলার এজাহারে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে ফেসবুকে হাটশ হরিপুর ইউনিয়নের শালদহ এলাকার স্থানীয় প্রভাবশালী শিপন কটূক্তি করলে এই নিয়ে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ এবং পূর্ব বিরোধের জেরে হাসিবুর রহমান রিজুর ওপর এ হামলা চালানো হয়। স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচনে হাসিবুর রহমান রিজু সভাপতি পদপ্রার্থী হন। গত বুধবার (১৯ জুন) বিকেলে ওই নির্বাচনের মিটিং-এ অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে মোটরসাইকেল যোগে যাচ্ছিলেন। এসময় পথিমধ্যে স্থানীয় প্রভাবশালী শিপন, মুরাদ ও রাজনের নেতৃত্বে কয়েকজন রিজুর শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো দেশীয় অস্ত্র দিয়ে ২০ থেকে ২৫ মিনিট দুই পা, দুই হাত ও মাথায় এলোপাতাড়ি আঘাত করেন। রক্তাক্ত অবস্থায় ঘটনাস্থলে প্রায় আধঘণ্টা ধরে পড়েছিলেন রিজু।
কেন এজাহার ভুক্ত আসামিরা গ্রেফতার হচ্ছেনা এমন প্রশ্ন করেন সাংবাদিক নেতারা তাদের বক্তব্যে। হামলাকারীদের গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন সংগ্রাম চলবে। এই আন্দোলন সংগ্রাম কুষ্টিয়া থেকে ঢাকা পর্যন্ত চলবে বলে কঠোর হুঁশিয়ারি দেন সাংবাদিক নেতারা ।
ওপেলিয়া কনি //দৈনিক দেশতথ্য//২৪জুন ২০২৪ইং//