এনামুল হক কুষ্টিয়া: ভাঙল সাধুর হাট, কুষ্টিয়ার আখড়াবাড়ীতে শেষ হলো বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ’র ১৩৫ তম তিরোধান দিবস উপলক্ষ্যে তিনদিনব্যপী জাতীয়ভাবে আয়োজিত
লালন উৎসব।
রবিবার রাতে আখড়াবাড়ীর মূল মঞ্চের আলোচনা সভায় খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মোঃ ফিরোজ সরকার এই লালন উৎসবের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষনা করেন।
লালন একাডেমির সভাপতি ও কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফিন এর সভাপতিত্বে সমাপনি অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, পুলিশের খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি মোঃ রেজাউল হক, কুষ্টিয়া বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্লেন আহসান হাবিব, কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মোঃ মিজানুর রহমান। মুখ্য আলোচক ছিলেন প্রফেসর ড. মোঃ খালেদউজ্জামান।
আলোচনা সভা শেষে মুলমঞ্চে লালন একাডেমির শিল্পী ও দেশবরন্য লালন শিল্পিরা লালন ফকিরের আধ্যাত্মিক গান পরিবেশন করেন ।
এবারও পথ প্রদর্শক লালনকে স্মরণ ও অবাধ্য মনকে শুদ্ধ করতে দেশ-বিদেশের হাজার হাজার লালন অনুসারী, ভক্ত অনুরাগী আর দর্শনার্থীরা এই আখড়াবাড়িতে অবস্থান নিয়েছিল। লালনের রীতি অনুযায়ী ১লা কার্তিক সন্ধ্যায় অধিবাস, পরদিন ২ কার্তিক সকালে বাল্য ও দুপুরে পূর্ণ সেবার মধ্যদিয়ে সাধু সঙ্গ শেষ হওয়ায় গতকাল বিকেলেই লালন অনুসারীরা অতৃপ্ত ভারাক্রান্ত মন নিয়ে অধিকাংশরাই আখড়াবাড়ী ছেড়ে গেছেন। বাকীদের আজ সকাল থেকে গুরুকার্য শেষ করে অন্যদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে অশ্রুশিক্ত নয়নে লালনের তীর্থধাম ছাড়তে দেখা গেছে। পূর্ণতা সাধনের জন্য আবারও দৌল উৎসবে ফিরে আসার ইচ্ছে পোষন করেন তারা।
এবার জাতীয়ভাবে লালনের তিরোধান দিবস পালিত হচ্ছে। ঐতিহাসিক এই উৎসবকে নির্বিগ্ন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছিল কয়েকস্তরের কঠোর নিরাপত্ত্বা ব্যবস্থা।
উল্লেখ্য, ১২৯৭ বঙ্গাব্দের পহেলা কার্তিক উপমহাদেশের সবচেয়ে প্রভাবশালী সাধক বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ’র মৃত্যুর পর থেকে তার স্বরণে লালন একাডেমী ও জেলা প্রশাসন এই লালন উৎসব চালিয়ে আসছে।
ভাঙল সাধুর হাট, গুরুকার্য শেষ করে অশ্রুশিক্ত নয়নে লালনের তীর্থধাম ছেড়ে নিজ নিজ গন্তব্যে ফিরছেন সাধু-বাউলরা।
ভারাক্রান্ত মনে তারা বলছেন বেঁচে থাকলে আবারও দেখা হবে দৌল উৎসবে।

Discussion about this post