মিরপুর (কুষ্টিয়া) সংবাদদাতা: পরকীয়া প্রেমিককে বাঁচাতে এবং স্বামীকে ফাঁসাতে এক মা তার ২৩ দিনের শিশু কন্যাকে পানিতে ফেলে হত্যার পর থানায় এসে স্বামীর বিরুদ্ধে মানব পাচার ও অপহরণের মামলা করে।
পুলিশ চাঞ্চল্যকর মামলাটি তদন্ত করতে গিয়ে কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে আসার মতো ঘটনা ঘটেছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) দুপুরে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার পোড়াদহ চিথলিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে মিরপুর থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত আসামিরা হচ্ছে পোড়াদহ চিথলিয়া এলাকার পরকীয়া প্রেমিক সেরেবুল ইসলাম (২৮), মা মিতা খাতুন (২৫), চাচা সাইদুল ইসলাম (৫০) ও ভাবি চাঁদনী খাতুন (৩৫)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ৮ মাস পূর্বে জেলার দৌলতপুর উপজেলার খলিষাকুন্ডি এলাকায় রাজু নামের এক ছেলের সঙ্গে মিতা খাতুন (২৬)এর বিবাহ হয়। বিবাহের আট মাস পরে মিতার খাতুনের ঘরে জান্নাতি (২২ দিন) বয়সী এক কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। শিশু জান্নাতির জন্ম নিয়ে রাজু ও মিতার মাঝে ঝগড়া বিবাদ হয়ে উঠেছিল নিত্যদিনের ঘটনা। এরই পরিপেক্ষিতে মিতা জান্নাতিকে নিয়ে মায়ের বাড়ি চিথলিয়ায় চলে আসে।
মিতা বাড়িতে আসার পর জান্নাতির পিতা কে এ নিয়ে মিতার পরকীয়া প্রেমিক চাচাতো ভাই শেরেবুলের সঙ্গে ঝামেলা শুরু হয়। পরবর্তীতে মিতা ও শেরেবুল বাচ্চাটিকে হত্যার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
২৫ তারিখ মেয়েটিকে হত্যা করে সেরেবুল ও মিতা তাকে পার্শ্ববর্তী বরিশাল খালে ফেলে হত্যার পর প্রচার করতে থাকে খলিসাকুন্ডি থেকে মিতার স্বামি রাজু বাচ্চাটি চুরি করে নিয়ে গেছে। ২৫ মে রাতে শিশুটির মা মিতা খাতুন বাদী হয়ে স্বামি রাজুকে আসামি করে মিরপুর থানায় মানবপাচার ও অপহরণের মামলা করে। ২৯ মে সকালে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে মিতা জান্নাতিকে পানিতে ফেলে হত্যার কথা স্বীকার করে।
মিতাকে নিয়ে মিরপুর থানার ওসি মমিনুল ইসলাম পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত আব্দুল আজিজ ও মামলা তদন্তকারী অফিসার সাইফুল ইসলাম সঙ্গীও ফোর্স ঘটনায়স্থলে গিয়ে জান্নাতির গলিত লাশ উদ্ধার করে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন মিরপুর থানার ওসি মমিনুল ইসলাম। আসামিদের আগামীকাল ১৬৪ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নিতে হাজির করা হবে আদালতে।

Discussion about this post