
কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার উজানগ্রাম ইউনিয়নের মৃত্তিকাপাড়া দাখিল মাদ্রাসার সভাপতি ও সুপারের স্বেচ্ছাচারীতা, নিয়োগ বাণিজ্য, মাদ্রাসার গাছ বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ ও জমি দখলসহ মাদ্রাসার নানা অনিয়ম ও দুর্ণীতির অভিযোগ সরকারি ছয় দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে এলাকাবাসী।
সোমবার (২১ নভেম্বর) সকালে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানসহ কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), কুষ্টিয়া, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ কুষ্টিয়া সদর উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন এলাকাবাসী।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কুষ্টিয়া সদর উপজেলার উজানগ্রাম ইউনিয়নের মৃত্তিকাপাড়ায় ১৯৯৭ সালে এলাকাবাসীরা মিলে মৃত্তাকাপাড়া দাখিল মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ওই মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয় সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. হামিদুর রহমানকে। এর পরে বেশ কয়েকবার মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও এখন পর্যন্ত কোন নির্বাচন না দিয়ে ওই সভাপতি দুই বার এডহক কমিটি পাস করিয়ে তিনিই সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। আর এডহক কমিটি বোর্ড থেকে অনুমোদন করাতে সহযোগিতা করেন মাদ্রাসা সুপার মো. ফয়জুল্লাহ অর রশিদ। এর পর সরকার স্কুল পরিচালনা কমিটিতে পর পর দুইবারের বেশি সভাপতির দায়িত্ব পালন করতে পারবে না এমন নীতিমালা গঠন করলে সভাপতি মো. হামিদুর রহমান সভাপতির পদ ছাড়তে বাধ্য হন। এর পর নির্বাচন না দিয়ে সাবেক সভাপতি ও মাদ্রাসা সুপারের আস্থাভাজন ব্যক্তিকে সভাপতি করে এডহক কমিটি পাস করিয়ে নিয়ে আসেন মাদ্রাসা সুপার মো. ফয়জুল্লাহ অর রশিদ। তার সেই কমিটির মেয়াদ শেষ হলে আবারও মো. হামিদুর রহমান এডহক কমিটি অনুমোদন করিয়ে নিয়ে আসেন। দীর্ঘদিন সভাপতির দায়িত্বে থাকার সুযোগে মো. হামিদুর রহমান ও মাদ্রাসা সুপার মো. ফয়জুল্লাহ অর রশিদ যোগসাজস করে মৃত্তিকাপাড়া দাখিল মাদ্রাসায় শিক্ষকসহ চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে কোটি টাকার নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন। এছাড়াও স্কুলের বহু বছরের পুরাতন লক্ষাধিত টাকার গাছ বিক্রি করে সেই টাকা মাদ্রাসা ফান্ডে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়াও জমি দখল করে রাখারও অভিযোগ রয়েছে ওই মাদ্রাসার সভাপতি মো. হামিদুর রহমান ও মাদ্রাসা সুপার মো. ফয়জুল্লাহ অর রশিদের বিরুদ্ধে। এসবের বিরুদ্ধে যারা প্রতিবাদ করেন তাদের বিরুদ্ধে মাদ্রাসা সুপার থানায় মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে জিডি করেন এবং পুলিশ দিয়ে হয়রানী করার ভয় দেখিয়ে আসছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা মাদ্রাসার সভাপতি ও সুপারের স্বেচ্ছাচারীতা, নিয়োগ বাণিজ্য, মাদ্রাসার গাছ বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ ও অন্যের জমি দখলসহ মাদ্রাসার নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি হতে পরিত্রাণ চেয়ে ওই লিখিত অভিযোগ দেন।
এ ব্যাপারে কুষ্টিয়া সদর নির্বাহী কর্মকর্তা সাধন কুমার বিশ্বাস বলেন, এসব অভিযোগের ব্যাপারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত: এর আগে গত ১২ নভেম্বর কুষ্টিয়া সদর উপজেলার উজানগ্রাম ইউনিয়নের মৃত্তিকাপাড়া দাখিল মাদ্রাসার সামনে মৃত্তিকাপাড়া গ্রামের সাধারণ জনগণের ব্যানারে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন এলাকাবাসী।

Discussion about this post