Print Date & Time : 22 April 2025 Tuesday 2:13 pm

কুষ্টিয়ার সূফী সাধক হযরত আবুল হোসেন শাহ (রঃ)-এঁর ওফাত দিবস

চন্দ্র বর্ষ তথা হিজরি সালের অতি উত্তম ও বরকতময় দিন পবিত্র ১১ রমজান। আজ কুষ্টিয়ার সূফী সাধক হযরত মাওলানা আবুল হোসেন শাহ (রঃ)-এঁর ওফাত দিবস।

আল্লাহর প্রেরিত এই মহামানব তৎকালীন ব্রিটিশ ভারত বর্ষ তথা পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যে পশ্চিমাবঙ্গের অন্তর্গত বর্ধমান বিভাগের হুগলী জেলার ভাদলপুর নামক গ্রামে ১১ ই এপ্রিল, ১৯১৭ সালে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা ছিলেন মাওলানা সৈয়দ মোহাম্মদ হোসেন ও মাতা মহিয়সী জান্নাতুল ফেরদৌস। শিশুকালের ৩ বছর বয়সে মা ও ১২ বছর বয়সে তাঁর পিতা ইন্তেকাল করেন। এরপর ভাষা পন্ডিত তাঁর স্বীয় চাচা মাওলানা সৈয়দ কুতুব উদ্দিন (র.) এঁর কাছে বড় হন। তারপর ধর্মের সত্যতা প্রচারে ভারত থেকে বাংলাদেশে (কুষ্টিয়া) আসেন। এরপর থেকে এই মনীষী বিভিন্ন স্থানে ও জনপদের মানুষের মাঝে ধর্মের সত্য ও নিগুর রহস্যের বাণী প্রচার করে গেছেন। তাঁর দীর্ঘ জীবনের ধ্যান-সাধনার অমিয় সুধা, বিনয়, নম্রতা ও কোমল ছোঁয়ায় বহু দিশাহীন মানুষ খুঁজে পেয়েছেন প্রশান্তির পথ।

একজন কামেল মুর্শিদ, ঈমাম ও আল্লাহর ওলী হিসেবে পরিচিত এই মহান আধ্যাত্মিক সাধক আরবী, ফারসী, উর্দু, হিন্দী ও বাংলা এই পাঁচটি ভাষায় পারদর্শী ছিলেন। মানব কুলে তিনি দীর্ঘ ১০২ বছরের বেশী জীবনকাল অতিবাহিত করেছেন। এই মনীষী সারা জীবন ইবাদত ও ধ্যানের মধ্যে দিয়ে সর্বদা মানবতার সত্য ধর্ম প্রচারে ব্রত ছিলেন। জানা যায়, তৎকালীন অবিভক্ত ভারত হতে আগত তথা সেই সময়ের ঢাকা জেলার মানিকগঞ্জ হরিামপুরের মাচাইন গ্রামে বসবাসরত কামেল মুর্শিদ ও চিশতীয়ার নিজামিয়া গোড়-এঁর সাধক মাওলানা সোলেমান আলী শাহ (রঃ)এঁর নিকট বইয়াত গ্রহণ করে তিনি স্বীয় ওস্তাদের সবচেয়ে নিকটতম ও প্রধান মনোনীত খলিফা হিসেবে ইলমে তাওয়াফের উচ্চ শিখরে পৌঁছাতে সক্ষম হন।

মহান আল্লাহ নির্দিষ্ট সময়ে ওলী-আউলিয়াগণের যেমন এই দুনিয়াতে পাঠান মানব কল্যাণ ও মুক্তির পথ প্রদর্শনের জন্য, তেমনি আবার পৃথিবী থেকে তাঁর বন্ধুদের পবিত্র ও মর্যাদাপূর্ণ দিনে সন্মানের সহিতে ইহলোক থেকে আড়াল করে নেন। আধ্যাত্মিক সাধক হযরত মাওলানা আবুল হোসেন শাহ (রঃ) আল্লাহর মনোনীত ওলী-আউলিয়াদের মধ্যে ছিলেন একজন। তিনি নিজের দায়িত্বরত কর্ম সম্পন্ন করে পবিত্র রমজান মাসের এই দিনে (১১ রমজান, ১৪৪০ হিজরী) এবং শ্রেষ্ঠ পবিত্র জুম্মাদিন শুক্রবার সকাল ১০ ঘটিকায় আল্লাহর নূরের পর্দার আড়ালে শায়িত হন। আমীন।

খালিদ সাইফুল, দৈনিক দেশতথ্য,২ এপ্রিল ২০২৩