কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে এনআইডি সংশোধনীর জন্য দেওয়া ঘুষের টাকা ফেরত আনতে গিয়ে জিয়াউল হক জিয়া(৪৭) নামে এক ব্যক্তি আটদিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। তাঁর সন্ধান জানতে কুমারখালী থানায় জিডিমূলে লিখিত অভিযোগ করেছেন নিখোঁজ ব্যক্তির ছেলে জিহাদ হোসেন। নিখোঁজ জিয়া জেলার খোকসা উপজেলার শোমসপুর ইউনিয়নের শোমসপুর মোল্লাপাড়া এলাকার বাসিন্দা এবং হুসনুল উলুম আলিম মাদ্রাসার নৈশ্যপ্রহরী। তিনি ৬ জুলাই (বৃহস্পতিবার) সকাল থেকে নিখোঁজ রয়েছেন। এদিকে পরিবারের অভিযোগ রয়েছে জিয়াকে উদ্ধারের ব্যাপারে পুলিশ ও স্থানীয় চেয়ারম্যান তেমন সহায়তা করছেন না।
নিখোঁজ ব্যক্তির ছেলে জিহাদ হোসেন বলেন, তাঁর মায়ের এনআইডি কার্ডে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য ভুল আছে। স্থানীয় লিজা কম্পিউটারের স্বত্ত্বাধিকারী রানা তাঁর বন্ধু বাঁধনকে দিয়ে ঠিকঠাক করার প্রতিশ্রুতি দেন। এজন্য রানা শোমসপুর ইউপি চেয়ারম্যান বদর উদ্দির খানের হাত দিয়ে দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা নেন। কিন্তু আটমাসেও কার্ডের ভুল ঠিক না হওয়ায় ৬ জুলাই (বৃহস্পতিবার) তাঁর বাবা বাঁধনের বাড়িতে টাকা ফেরত আনতে গিয়েছিল। এরপর আর তাঁর বাবা ফিরেনি। এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ দিলেও পুলিশ তেমন কোন ব্যবস্থা নেইনি। রানা ও বাঁধন এনআইডি জালিয়াতির কাজ করে মানুষের লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। ওরাই (রানা ও বাঁধন) তাঁর বাবাকে গুম করেছে অথবা হত্যা করেছে এনআইডি জালিয়াতি চক্রের সদস্য বাঁধন হোসেন (২৭) কুমারখালী পৌরসভার শেরকান্দি এলাকার মো. আনোয়ার হোসেনের ছেলে এবং রানা হোসেন(২৬) খোকসা উপজেলার চরপাড়া এলাকার মো. ফরিদের ছেলে।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) সকালে শেরকান্দি গ্রামে বাঁধনের খোঁজে তার বাড়িতে গিয়ে জানা যায়, বাঁধন কয়েকদিন হলো বাড়িতে নেই। তার ফোনটিও বন্ধ। এসময় তার মা জহুরা খাতুন বলেন, বাঁধন তাঁর অসুস্থ চাচিকে নিয়ে কয়েকদিন আগে ঢাকা গেছে। ফোনের বিষয় তিনি কিছু জানেনা। তিনি আরো বলেন, সেদিন ওই লোক (জিয়া) তাঁর বাড়িতে এসে বকাবকি করতেছিল। কিছুক্ষণ পরে চলে গিছিলেন। তাঁর ছেলে কাউকে গুম করিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রানা হোসেন বলেন,তিনি বর্তমানে এলাকার বাইরে আছেন। এসব নিয়ে কথা বলতে চাইনা বলে ফোনটি কেটে দেন। পরে বারবার কল দিলেও তিনি ধরেননি।
খোকসার শোমসপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বদর উদ্দিন খান সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তিনি শুধু মাত্র টাকা লেনদেনের স্বাক্ষী ছিলেন। কিন্তু কিসের টাকা তা তার জানা ছিল না। তার দাবি তিনি কোনো চক্রের সাথে জড়িত নয়।
অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা কুমারখালী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. নুরন নবী বলেন, তিনি ঘটনার গভীর তদন্ত করছেন। কিন্তু নিখোঁজ ব্যক্তি কোনো মোবাইল ফোন ব্যবহার করেনা। সেজন্য তাকে খুঁজে পেতে বিলম্ব হচ্ছে। ফোন থাকলে দ্রুত পাওয়া যেত। আর অভিযুক্ত বাঁধন পলাতক রয়েছে। তাঁর ব্যবহৃত ফোনটিও বন্ধ রয়েছে
খালিদ সাইফুল, দৈনিক দেশতথ্য, ১৫ জুলাই ২০২৩

Discussion about this post