কুষ্টিয়া শহরতলী ও ১৪নং পৌর ওয়ার্ড যুগিয়ায় স্থানীয় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে মাসুম গ্রুপ ও শাহিন গ্রুপের দু’পক্ষের সংঘর্ষে হাফিজুল ইসলাম (৪৫)নামে সাবেক ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকের হাত কর্তনের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ১৪নং পৌর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র শাহিন উদ্দিন গ্রুপের বিরুদ্ধে। তবে অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন কাউন্সিলর শাহিন উদ্দিন।
শনিবার রাত ৮টার দিকে যুগিয়া পালপাড়ায় সংঘটিত সংঘর্ষে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে হাত কর্তনের শিকার স্থানীয় বাসিন্দা আসমত প্রামানিকের ছেলে ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাফিজুল ইসলামের অভিযোগ, ‘পূর্ব থেকেই কাউন্সিলর শাহিন গ্রুপের সাথে দ্বন্দ চলে আসছিলো। সন্ধার পর শাহিনের সহযোগী নিজাম উদ্দিন মটর সাইকেল নিয়ে রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় আমার মটর সাইকেলে বেধে যায়। এই ঘটনার জের ধরে নিজাম শোর চিৎকার করে তার লোকজনকে জড়ো করে দেশীয় অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে আমার উপর হামলা করে। এসময় স্থানীয় ঝন্টু কসাই নামের এক ব্যক্তি তার হাতে থাকা মাংশ কাটায় ব্যবহৃত ধারালো ডাসা দিয়ে আমার বাম হাতে আঘাত করলে আমার বাম বাহু কনুইয়ের উপর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এসময় আরও কয়েকজন ব্যক্তি আমার উপর হামলা করে লাঠি, রড ছোরাসহ বিভিন্ন অস্ত্রের আঘাতে আমাকে গুরুতর আহত করেন।
তবে অভিযোগের বিষয়ে কাউন্সিলর শাহিন উদ্দিন বলেন, ‘স্থানীয় আধিপত্য বজায় রেখে মাদক, অবৈধ বালির ব্যবসা, চাঁদাবাজির ঘটনায় জড়িত থাকায় ইতোমধ্যে হাফিজুল একাধিকবার র্যাব ও পুলিশের হাতে আটক হলেও দুই একদিন জেল খেটে আবার বেড়িয়ে এসে একই কাজ করতে থাকে। হাফিজুলের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত বলে। শনিবার সন্ধার পর হাফিজুল মহল্লার রাস্তার মাঝখানে মটর সাইকেল দাঁড় করিয়ে রেখে ইচ্ছাকৃত ভাবে এই সংঘর্ষের সৃষ্টি করে’। হাফিজুল নিজেই আগে নিজামের উপর হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করেছে’।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কুষ্টিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক আশিকুর রহমান জানান, ‘শনিবার সন্ধার পর তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে যুবলীগ নেতা হাফিজুলের উপর প্রতিপক্ষের হামলায় বাম হাতের কনুইয়ের উপর থেকে কেটে প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার মতো হয়ে যায়। এঘটনায় নিজাম উদ্দিন নামের আরও একজন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এঘটনায় এখনও কেউ অভিযোগ নিয়ে থানায় আসেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয় হবে। তবে হাত কাটার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করতে পুলিশের অভিযান চলছে।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: তাপস কুমার সরকার বলেন, ‘শনিবার রাতে হাফিজুল নামে হাত কর্তনের রোগীর প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয়া হয়েছে এবং এই রোগীর আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকাস্থ পঙ্গু হাসপাতালে নেয়ার জন্য পরিবারের লোকজনকে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
খালিদ সাইফুল, দৈনিক দেশতথ্য, ১৬ জুলাই ২০২৩