তৃতীয় দিনেও সুরাহা না হওয়ায় কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ জেলার বাস মালিক-শ্রমিকদের দ্বন্দ্বের জেরে চলমান বাস ধর্মঘটে সীমাহিন ভোগান্তির সাথে বাড়তি খরচের বোঝা বইতে নাভিশ্বাস উঠেছে যাত্রীদের। গত শুক্রবার ভোর থেকে কুষ্টিয়া-খুলনা ও কুষ্টিয়া-ফরিদপুর রুটে কুষ্টিয়া জেলা মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকে এ ধর্মঘট চলছে।
কুষ্টিয়া কমলাপুর গ্রামের আসাবুল ইসলাম মাগুড়াতে চাকুরী করেন। প্রতি সপ্তাহের বৃহষ্পতিবার বাড়ি আসেন। তিনি মুঠোফোনে আলাপকালে বলেন, ‘স্বাভাবিক সময়ে যাতায়াতের খরচ ২শ ৫০ টাকা। আজ রবিবার সকালে তিনি সিএনজি অটোতে মাগুড়াতে পৌছাতে একবারেই লেগেছে ৩শ ২০টাকা। ছোটখাটো চাকুরীজীবিদের এই বাড়তি খরচ গোদের উপর বিষফোড়ার মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে’।
সংকট নিরসনে গতকাল শনিবার দুপুরে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সাইদুল ইসলাম জেলার বাস মালিক ও শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করলেও কোন সুরাহা হয়নি।
কুষ্টিয়া মটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মাহবুল আলমের অভিযোগ, ‘গতকাল কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে আমাদের সাথে বৈঠকে মত বিনিময় শেষে কুষ্টিয়ার মালিক শ্রমিকের পক্ষ থেকে বাস চলাচল স্বাভাবিক করার সম্মতি দিলেও ঝিনাইদহের মালিক-শ্রমিরা আমাদের গাড়ি ঢুকতে দিচ্ছেনা। বিষয়টি দুই জেলার প্রশাসনের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নিয়ে সুরাহা করবেন বলে আশ^স্ত করেন। অথচ রবিবার দুপুর পর্যন্তও দুই জেলার প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনও কোন সুরাহা করতে পারেননি। আমরা গাড়ি ছাড়তে প্রস্তুত আছি’।
কুষ্টিয়া জেলা মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ নেতাদের অভিযোগ, ঝিনাইদহ মোটর শ্রমিক নেতারা বাসের নতুন ট্রিপ দাবি করেন। এ দাবির ব্যাপারে কথা বলতে ঝিনাইদহে গেলে কুষ্টিয়ার বাস শ্রমিকদের মারধর করা হয়। মারধরের ঘটনায় জড়িতদের আগামী ১০ এপ্রিলের মধ্যে পুলিশ-প্রশাসন গ্রেফতার না করলে সারা দেশের সঙ্গে কুষ্টিয়ার বাস যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানান কুষ্টিয়া জেলা বাস-মিনিবাস মালিক গ্রুপের সভাপতি আক্তার হোসেন।
কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম জানান, ‘যাত্রীবাহী বাস চলাচল স্বাভাবিক করতে ঝিনাইদাহ জেলা প্রশাসনের সাথে কথা বলেছি। ঝিনাইদহের মালিক শ্রমিকদের সাথে কথা বলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার উদ্যোগ নিচ্ছেন। তাদের বৈঠকে সমাধান হলেই সব ঠিক হয়ে যাবে’।
ঝিনাইদাহের জেলা প্রশাসক এস এম রফিকুল ইসলাম জানান, ‘আমরা গতকালও মালিক শ্রমিকদের সাথে কথা বলেছি, আজও বলছি, এখনও তাদের সাথে আমাদের বৈঠক চলছে। তবে এখনও পর্যন্ত কোন সন্তোষ জনক সমাধানে পৌছাতে পারিনি। আমাদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে পরিস্থিতিকে স্বাভাবিক করার’।
খালিদ সাইফুল, দৈনিক দেশতথ্য, ৯ এপ্রিল ২০২৩

Discussion about this post