ধনীর দুলাল/দুলালী ও আদুভাইদের খায়েসের খেশারত দিচ্ছে রিকশাওয়ালা রুটিওয়ালাদের সন্তানরা। তাদের লেখাপড়া বন্ধের উপক্রম। কর্তৃপক্ষ নাকে তেল দিয়ে ঘুমোচ্ছেন।
চলতি মাসের ২১ জুন। তুচ্ছ এক ঘটনা উচ্চ রবে বেজে উঠায় কুষ্টিয়া পলিটেকনিকের তিনটি হল বন্ধ করে বরফে হাত ঢুকিয়ে বসে আছেন কর্তৃপক্ষ। এদিকে ওইসব হলে থাকা সাধারণ শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া বন্ধের উপক্রম হয়েছে। তারা দ্বিগুণ তে গুণ খরচ দিয়ে বাইরের মেসে থেকে হাঁপিয়ে উঠছেন।
গত ২১ জুন মাঠে ফুটবল খেলার সময় প্রথম বর্ষের এক ছাত্রীর গায়ে লাগার জেরে সৃষ্ট উত্তেজনা এড়াতে একাডেমিক কাউন্সিল ‘পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত মীর মশাররফ হোসেন ও লালন শাহ ছাত্র হোস্টেল এবং তাপসী রাবেয়া ছাত্রী হোস্টেল বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয়।
এরপরই সাধারণ শিক্ষার্থীদের আহাজারী বেড়ে যায়। হলে থাকলে তাদের মাসে খরচ হতো ২১০০ টাকা। আর এখন সেই শিক্ষার্থীরা কলেজ এরিয়ার বাইরে মেস ভাড়া দিচ্ছে ১২০০ টাকা। খাওয়ার খরচ ১৮০০/১৯০০ টাকা। সব মিলায়ে একজন শিক্ষার্থীকে প্রতি মাসে গুনতে হচ্ছে ৪০০০/৫০০০ টাকা।
৩য় পর্ব ইলেকট্রনিক্সের ছাত্র রাকিব বলেন, আমার বাবা রিক্সা চালায়। আমার বাবার স্বপ্ন ছিল আমি একদিন ইন্জিনিয়ার হবো। তাই আমি ইন্জিনিয়ারিং পড়তে এসে কলেজের হোস্টেলে থেকে স্বাছন্দে দিন পার করছিলাম। কিন্তু হোস্টেল বন্ধ হওয়ার পর কোন মেসে উঠার সামর্থ নেই। আজ থেকে আমাদের পর্ব মধ্য পরীক্ষা শুরু হয়েছে।
৫ম পর্বের সিভিলের কাজল বলেন, এভাবে হল বন্ধ থাকলে আমার বাবার পক্ষে লেখাপড়ার খরচ চালানো সম্ভব হবে না। তিন ভাইয়ের মধ্যে আমি বড়। বাবার আয় দিয়ে আমাদের লেখাপড়া খরচ সহ সংসার চলে। বাসা থেকে ২০০০ টাকা বেশি দেওয়া দিনমজুর বাবার পক্ষে সম্ভব নয়।
মুড়ি বিক্রেতা নাজিম বলেন, আমার একমাত্র ছেলে কুষ্টিয়া পলিটেকনিকে ইলেকট্রিক্যালে পড়ে। ছেলে হলে থাকতে না পারলে ছেলেকে পড়ানো আমার পক্ষে সম্ভব হবেনা। হলটা যদি তাড়াতাড়ি খুলে দেয় তাহলে খুব ভালো হবে।
কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইন্সষ্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মনির হোসেনের ০১৫৫৬৩০৪৬৮ নাম্বারে দৈনিক দেশতথ্যের পক্ষ থেকে কল এবং মেসেজ দিয়েও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।
দৈনিক দেশতথ্য//এল//

Discussion about this post