কুষ্টিয়া মহাশ্মশানের নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। এ নিয়ে চরম অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে। তারা বলছে কুষ্টিয়ার সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান কুষ্টিয়া মহাশ্মশান। প্রতিষ্ঠানটি গত ৫ বছর ধরে আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে চলছে । দুই দশকের বেশি সময় ধরে প্রতিষ্ঠানটিতে মাত্র দুই বার কমিটি গঠন করা হয়েছে।
জানা যায়, নতুন কমিটি গঠনের উদ্দেশ্যে চলতি বছরের শুরুতে তিন সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়। গত ২১ ফেব্রুয়ারি মহাশ্মশানের অফিস কক্ষে কমিশনের চেয়ারম্যান মানিক কুমার ঘোষের সভাপতিত্বে নির্বাচন বিষয়ক সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় কমিশনের অন্য দুই সদস্য স্বপন কুমার সাহা শংকর ও ব্যারিস্টার গৌরব চাকী উপস্থিত ছিলেন। তারা আগামী ২৪ মার্চ নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করে তফশিল ঘোষণা করেন।
এরপর ৭ই মার্চ নির্বাচন স্থগিত করেছেন কমিশন চেয়ারম্যান। এই ব্যাপারে জানানো হয়েছে, আহবায়ক কমিটির সদস্য চন্দন সান্যাল (পলাশ) ৭ মার্চ একটি দরখাস্ত দিয়েছেন। তাতে বলা হয়েছে ভোটার এবং প্রার্থীদের আইডি কার্ড দাখিল ও মনোনয়ন পত্রের সাথে আইডি কার্ডের ফটোকপি দাখিল করতে হবে।
নির্বাচন কমিশনের দুই জন সদস্য মনে করেন বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ এবং নির্বাচন বিধিমালায় এই বিষয়টি সংযোজন করা প্রয়োজন। এজন্য প্রতিটি ভোটারের মতামত দরকার। এত অল্প সময়ের মধ্যে এই কাজাট করা সম্ভব নয়। তাই তারা আগামী ২৪ মার্চ ২০২৩ তারিখের নির্বাচন স্থগিত করেছেন।
জানা যায়, ১৯৮২ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত কুষ্টিয়া মহাশ্মশানের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন নন্দ দুলাল দে। বেশ কয়েক বছর আগে আগে তিনি পরলোক গমন করেন।
২০১৭ ইং সালের ১৯ অক্টোবর কুষ্টিয়ার সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জ্ঞাতার্থে একটি লিখিত বক্তব্য প্রচার করেন তিনি। তার সেই বক্তব্যের অংশ বিশেষ তুলে ধরা হলো- “প্রায় ৩৫ বছর আমি এই প্রতিষ্ঠানের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। তিন বছর পর পর নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও সভাপতি বাবু বিজয় কেজরীওয়ালের অনিহার কারণে ১৭ বছর কোন নির্বাচন করা সম্ভব হয় নাই। ১৬/০৬/১৭ তারিখে বিজয় বাবু সহ কমিটির বেশির ভাগ প্রধান ব্যক্তিদের এক আলোচনায় নতুন কমিটি গঠনের লক্ষ্যে চলমান কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করার ব্যাপারে একমত হই।।
সর্বসম্মতিক্রমে আমাকে আহ্বায়ক করা হয়। আমি নতুন কমিটি গঠনের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন গঠন করি। নির্বাচন কমিশন তফশীল ঘোষণা করে। কিন্তু বিজয় বাবু প্রতিষ্ঠানের নিয়মনীতি উপেক্ষা করে বাবু নিলয় সরকারের সহায়তায় একটি অবৈধ কমিটির জন্ম দেয়। যার সভাপতি পদে থাকেন বাবু বিজয় এবং সাধারণ সম্পাদক পদে বাবু নিলয় সরকার।
একই সাথে অফিস ও স্টোর রুমের তালার উপরে তালা আটকিয়ে দেয়। পরে চলমান কমিটির লাগানো তালা ভেঙ্গে অফিস ও স্টোর রুম দখল করে এবং শ্রীশ্রী কালীপূজার বাকি কাজ অবৈধ কমিটি নিজ হাতে তুলে নেয়।”
ঘটনার পরবর্তীতে ২০১৮ সালে নরেন্দ্রনাথ সাহাকে আহ্বায়ক করে একটি আহবায়ক কমিটি গঠিত হয়। আহ্বায়ক কমিটি ৫ বছরেও কোন নির্বাচন দেয় বা কোন কমিটি গঠিত করেনি।
এই ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান মানিক কুমার ঘোষ বলেন, সদস্যদের বাড়াবাড়ি বেশি হওয়ার কারনে নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে।
খালিদ সাইফুল,দৈনিক দেশতথ্য ,১২ মার্চ ২০২৩

Discussion about this post