কুড়িগ্রাম জেলাজুড়ে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, মিশুক ও অটোরিকশা শহরের সড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এর ফলে সড়কে বাড়ছে তীব্র যানজট। প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। ট্রাফিক আইনের কোনো নিয়ম-কানুন না মেনে, চলাচল করছে প্রায় অর্ধলক্ষ যানবাহন।
রেজিস্ট্রেশন বা চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্সবিহীন এসব যানবাহন শহর ও গ্রাম থেকে শুরু করে মহাসড়কে বেপরোয়াভাবে দ্রম্নতগতিতে চলাচল করেছে। এর ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট ও বড় ধরনের দুর্ঘটনা। ব্যাটারিচালিত যানবাহনগুলোর চালকদের ট্রাফিক আইন সম্পর্কে ন্যূনতম কোনো জ্ঞান বা প্রশিক্ষণ না থাকায় সড়কের ওপর যত্রতত্র পার্কিং ও ওভারটেকিংয়ের প্রতিযোগিতার কারণে প্রতিদিনই দুর্ঘটনা ঘটছে।
দুর্ঘটনার ভূক্তভোগি সদরের খাঁনপাড়ার লিমন জানান, ছুটিতে বাড়িতে এসে সংসারের খরচ ক্রয় করার জন্য বাজারে যাই।হঠাৎ উল্টোদিক থেকে একটি অটো এসে সাজোড়ে পায়ে ধাক্কা দিলো।সেদিন থেকে বাড়িতে পড়ে আছি। শহরের অটোগুলো এখনেই নিয়ত্রণ না করলে শহরে অন্য যানবাহন চলাচল করতে পারবে না।
আরও একজন দূর্ঘটনার ভূক্তভোগি, নাজিরা মিয়াপাড়া নিবাসী মনির হোসেন রিপন বলেন, আমি জেলা পরিষদ মার্কেটের সামন দিয়ে হেটে যাচ্ছি পিছন থেকে একটি ইজিবাইক এসে আমার পায়ে ধাক্কা দিয়ে রাস্ত্মায় ফেলে দেয়। পরে লোকজন এসে আমাকে তুলে ডাকবাংলোয় নিয়ে যায়। অসুস্থ হয়ে প্রায় এক মাস বাড়িতে পড়ে থাকি।অনেক টাকা খরচের পর কিছুটা আরাম হয়েছি।এখনো পায়ে প্রচন্ড ব্যাথা ঠিকমতো চলাফেরা করতে পারি না।
কুড়িগ্রাম পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, শুধুমাত্র পৌরসভা এলাকায় ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকসহ রিকসা প্রায় চার হাজার চলাচল করে। রিকসার রেজিস্ট্রেশন পৌরসভা থেকে দেওয়া হলেও ইজিবাইকের কোনো রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হয় না। তবে পৌর এলাকায় রাস্তা ইজারা দেওয়ার মাধ্যমে প্রতিদিন ইজিবাইক প্রতি ১০ টাকা হারে টোল আদায় করা হয়।
কুড়িগ্রাম জেলা ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, রিকসা-মিশুক ও ভ্যান সমিতির সভাপতি আবদার হোসেন বুলু জানান, ব্যাটারিচালিত যানবাহগুলো সহজলভ্য হওয়ায় যে কেউ কিনে এসব বাহনের মালিক ও চালক হচ্ছে। জেলায় ব্যাটারিচালিত এসব বাহনের সংখ্যা প্রায় অর্ধলক্ষ। কুড়িগ্রাম জেলায় প্রতিদিন প্রায় ১৬টি শোরুমে গড়ে ৫০টি নতুন গাড়ি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও জেলার বাইরের থেকেও নতুন ইজিবাইক আনা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, শহরে যেভাবে যানবাহন প্রতিদিন বাড়ছে। জরম্নরিভিত্তিতে এসব ইজিবাইক ও চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করতে হবে। তা নাহলে রাস্তায় যানবাহনের যানজট ও দুর্ঘটনা কমানো যাবেনা। চালকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়ে চলেছে।এদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। সারাদেশে প্রায় ৫০ লাখ শ্রমিক এই পেশায় নিয়োজিত। তাদের পরিবারের প্রায় দুই কোটি মানুষের দুই বেলা দু’মুঠো অন্নের সংস্থান করছে। কাজেই এসব নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি তাদের বাঁচাতে সরকারীভাবে পরিকল্পিত টেকসই উদ্যোগ নিতে হবে।
কুড়িগ্রাম জেলা ট্রাফিক ইনচার্জ টি আই মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ইজিবাইক ও রিকশা যেহেতেু ভিকেল অ্যাক্টের আওতায় পরে না। তাই আমাদের কাছে এর কোনো পরিসংখ্যান নেই।
জা//দেশতথ্য// ১২ অক্টোবর ২০২২//

Discussion about this post