যশোর সদর উপজেলার নরেন্দ্রপুর ইউনিয়নের একটি গ্রাম মিস্ত্রিপাড়া। এ গ্রামকে সবাই এখন ক্রিকেট ব্যাটের গ্রাম নামে চেনে।
ব্যাট তৈরির কুটির শিল্প বদলে দিয়েছে পুরো গ্রামটিকে।
জানা গেছে, কয়েক বছর আগে এ গ্রামের আর্থ-সামাজিক অবস্থা ছিল বেশ করুণ। তবে এই সময়ে গ্রামে ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে উঠেছে প্রায় অর্ধশত ব্যাট তৈরির কারখানা।
যেখানে সৃষ্টি হয়েছে প্রায় ৪০০-৫০০ লোকের কর্মসংস্থান। এসব কারখানায় গড়ে প্রতি মাসে ৩০-৪০ হাজার ব্যাট তৈরি হচ্ছে। যার গুণগত মান প্রশংসনীয়। ব্যাটের মান ভালো হওয়ায় চাহিদা রয়েছে দেশের ৬৪ সব জেলায়। প্রতিদিন যশোর থেকে পরিবহন ও কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে কারিগরদের কাছ থেকে ব্যাট সংগ্রহ করছেন বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা।
কারিগররা জানান, ১৯৮৬ সালে সর্ব প্রথম স্থানীয় সঞ্জিত রায় নামে এক কাঠমিস্ত্রি ব্যাট তৈরি শুরু করেন। এরপর তার দেখাদেখি প্রতিবেশীরাও তার কাছ থেকে নানা পরামর্শ ও সহযোগিতা নিয়ে কাজ শুরু করেন। সময়ের ব্যবধানে গ্রামে ব্যাট তৈরির কারিগরের সংখ্যা অর্ধশতাধিকে এসে দাঁড়িয়েছে।
ব্যাট তৈরিতে কদম, জীবন, নিম, গুল্টে (পিটুলি), পুয়ো, ছাতিয়ান, ডেওয়া কাঠ ব্যবহার করা হয়। ভালোমানের ব্যাট তৈরি করতে নিম ও জীবন কাঠ বেশি ব্যবহৃত হয়। প্রকারভেদে ব্যাট প্রতি খরচ হয় ২০-১৫০ টাকা। পাইকারি বিক্রি হয় ৩০-২৫০ টাকা। ব্যাট তৈরি করতে কারিগরদের পাশাপাশি তাদের পরিবারের সদস্যরাও সাহায্য করে থাকে। কারিগর বাবু, সুধীর ও শরিফুল জানান, ক্রিকেট ব্যাট তৈরির কারখানা হওয়ায় গ্রামের মানুষ অন্ধকার থেকে আলোর পথে এসেছে।
বিসিক যশোর কার্যালয়ের উপ-মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ গোলাম হাফিজ জানান, কুটির শিল্পের উন্নয়ন ঘটাতে বাংলাদেশ সরকার নানা পন্থায় কাজ করছে। ব্যাট তৈরি কুটির শিল্পের অন্তর্ভুক্ত। এজন্য এ কাজে জড়িত কারিগররা বিসিকের স্বরণাপন্ন হলে তাদের ঋণ, আর্থিক সহযোগিতাসহ সব রকমের ব্যবস্থা করা হবে।
দৈনিক দেশতথ্য//এইচ//