নিজস্ব প্রতিবেদক : নারী জাগরনের অগ্রদুত বলা হয় বেগম রোকেয়া সাখাওয়াতকে। অন্যদিকে চারদেয়ালে বন্দি থাকা নারীদের ক্রীড়াঙ্গনের সাথে সম্পৃক্ত ও সমৃদ্ধ করায় মর্জিনা খাতুন (৫০) কে বলা হয় কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলা ক্রীড়াঙ্গনের নারী জাগরনের অগ্রদুত।
মর্জিনা খাতুন এখন শুধু একজন ব্যাক্তিই নন একটি প্রতিষ্ঠানের নাম।
মর্জিনা খাতুন একাধারে ক্রীড়াবিদ,ক্রীড়া সংগঠক,কোচ,রাজনৈতীক নেত্রী,সফল গৃহিনী ও একজন সফল মা। কোথায় নেই তার পদচারনা? একই অঙ্গে এতগুলো রুপ থাকা মানুষটির পালে সর্বশেষ সংযুক্ত হয়েছে উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হবার মধ্যদিয়ে জনপ্রতিনিধির তকমা।
২০০৬ সালে ইসলামিক ষ্ট্যাডিস বিষয়ের উপর মাষ্টার্স ডিগ্রী অর্জন করা মর্জিনা খাতুন উপজেলার সদরপুর ইউনিয়নের মোচাইনগর নামক গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন। পিতার নাম শহীদ মুক্তিযোদ্ধা মধু মণ্ডল।
মর্জিনা খাতুন সাঁতারু হবার লক্ষ নিয়ে ১৯৮৪ সালে ৩য়/৪র্থ শ্রেণীতে পড়ার সময় বড় ভাই আমিরুল ইসলামের অনুপ্রেরনায় শিশু একাডেমী প্রতিযোগীতায় নাম লেখান। ফ্রি ষ্টাইল ও ব্রেষ্ট ষ্ট্রোক সাঁতারে কৃতিত্বও দেখান। পরে তিনি সাঁতার ছেড়ে এ্যাথলেটের খাতায় নাম লেখান। সাফল্য পান। এ্যাথলেট হিসাবে তিনি হাইজাম্প,সটপুট, ডিসকাসে অভাবনীয় সাফল্য দেখিয়ে পুরো দস্তুর এ্যাথলেট মর্জিনা হিসাবেই এলাকায় তাঁর ব্যাপক খ্যাতি ছডিয়ে পডে।
তাছাড়াও তিনি হ্যাণ্ডবল, ভলিবল ও ফুটবলও খেলেছেন।
মর্জিনা খাতুন ১৯৮৪ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত ১৩ বছর খেলোয়াড়ী জীবনে জাতীয় পর্যায় থেকে ৩৭টি গোল্ড জয়ের অনন্য কৃতিত্ব দেখান।
খেলোয়াড়ী জীবন শেষে তিনি খেলোয়াড় কোটায় বিজেএমসিতে ৭ বছর ও বাংলাদেশ আনছারে ৩ বছর চাকুরী করেছেন। ২০১০ সাল থেকে ৩ বছর হোটেল শেরাটনে ও ১ বছর গুলশান ক্লাবে সাঁতার ট্রেইনার হিসাবে চাকুরী করেছেন।
২০১৪ সাল থেকে অদ্যবধি কুষ্টিয়া পৌরসভার সুইমিং ট্রেইনার হিসাবে কর্মরত আছেন।
১৯৯০ সালে এলাকারই আরেক কৃতি ফুটবলার আনোয়ার হোসেন বুড়ো’র সাথে পরিণয় সুত্রে আবদ্ধ হন।
ব্যাক্তিগত জীবনে মর্জিনা আসিফ রেজা (২৫) নামের পুত্র ও খাদিজা আক্তার বৃষ্টি (১৭) নামের মেয়ে সন্তানের জননী। ছেলে আসিফ রেজা নৌবাহিনীর পেটি অফিসার হিসাবে কর্মরত। অন্যদিকে মেয়ে খাদিজা আক্তার বৃষ্টি বিকেএসপির সাঁতার ক্যাডেট হিসাবে অধ্যায়নরত।
খেলোয়াড মর্জিনার নামডাক যখন তুঙ্গে তখন ১৯৯১ সালে রাজনীতিতে সক্রিয় হন। ১৯৯১ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত তিনি মিরপুর উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক ছিলেন।
চলতি বছরের ২৪ মার্চ অনুষ্ঠিত ৫ম মিরপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে হাঁস প্রতিকে ৪৬ হাজারের বেশি ভোট পেয়ে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন মর্জিনা খাতুন (৪৪)।
যদিও মর্জিনা খাতুন ২০০৯ সালে অনুষ্ঠিত ৩য় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ( ১ম মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচনে) মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দিতা করে ২৭ হাজার ভোট পেয়ে ২য় অবস্থানে থেকে পরাজিত হয়েছিলেন। সেবার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন রোজী খাঁন।
দৈনিক দেশতথ্য//এল//

Discussion about this post