Print Date & Time : 4 August 2025 Monday 11:24 am

ক্ষেতে বিষ প্রয়োগ, ৫ শতাধিক কবুতরের মৃত্যু

গোফরান পলাশ, কলাপাড়া: পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ডাল খেতে বিষ প্রয়োগের ফলে ৫ শতাধিক কবুতরসহ অগনিত বন্যপাখির মৃত্যু হয়েছে।এতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ওই এলাকার প্রায় অর্ধশতাধিক কবুতর খামারী।

শনিবার ও বরিবার উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের পশ্চিম হাজিপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ওই এলাকার কৃষক মেহেদী শেখ তার খেতে বিষ প্রয়োগের ফলে এসব পাখির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
গত বছরও ওই এলাকার কৃষি ক্ষেতে বিষ প্রয়োগের ফলে বেশ কিছু কবুতর মারা পড়েছে বলে স্থানীয়রা জানান।
এ ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এনিমেল লাভার্স অফ পটুয়াখালীর কলাপাড়া শাখার সদস্য ও বন বিভাগের কর্মকর্তারা।

ভূক্তভোগী খামারী মেসকাত মিয়া জানান, আমি সরকারী মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস ডিগ্রী কলেজে অনার্সে পড়ি। পাশাপাশি বেশ কিছু কবুতর পালন করি।

শনিবার সকালে প্রায় ৪২ টা কবুতর আমার খামার থেকে ছেড়ে দেই। দুপুর বারোটার দিকে বাড়ি এসে দেখি ২২ টা কবুতর মারা গেছে। আমার বাড়ির পেছনে ডাল চাষ করেছেন মেহদী শেখ৷ তিনি ক্ষেতে ধানের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে ছিটিয়ে দিয়েছেন। যাতে কোন পাখি বা কবুতর ক্ষেতে না বসে। তার ক্ষেত থেকে কবুতর বাড়িতে আসার পরই মৃত্যু হয়। শুধু আমার কবুতরই নয় এই এলাকার অনেক কবুতর সহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখির মৃত্যু হয়েছে।

একই এলাকার অপর কবুতর খামারী ইব্রাহিম শিকারী জানান, গতকাল আমার খামারের ১০ টি কবুতর মারা গেছে। মারা যাওয়া অনেক কবুতরের ছোট ছোট বাচ্চা রয়েছে। এখন এই বাচ্চা কবুতরের অবস্থাও কাহিল। আমি অনেক লোকসানে পরে গেলাম। মেহেদীর ক্ষেতের ডাল খেয়েই এসব কবুতরের মৃত্যু হয়েছে। তবে ক্ষেতে বিষ দেয়ার আগে আমাদের জানালে আমরা কবুতর গুলো আটকে রাখতাম। এছাড়া ঘুঘু ও শালিক সহ বিভিন্ন বন্য পাখিরও মৃত্যু হয়েছে। একই কথা জানিয়েছেন মনির, সবুজ ও ছালেক সহ অনেক কবুতর খামারী।

এ বিষয়ে মেহেদী শেখ তার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং তিনি নিজেও কবুতর পালন করেন বলে জানান।

এনিমেল লাভার্স অব পটুয়াখালী’র কলাপাড়া শাখার টিম লিডার রাকায়েত আহসান জানান, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বন্যপাখি ও কবুতর মৃত্যুর সত্যতা পেয়েছি। বন বিভাগকে খবর দিয়ে স্থানীয় কৃষকদের সচেতন করেছি। আশা করছি তারা ক্ষেতে বিষ প্রয়োগের ফলে সচেতন হবে।

কলাপাড়া বন বিভাগের সদস্য নীলগঞ্জ ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা কামরুল আলম জানান, আমরা এখানে এসে জানতে পেরেছি বেশ কয়েকজন খামারীর কবুতর মারা গেছে। এছাড়া কিছু বন্য পাখিরও মৃত্যু হয়েছে। ডাল ক্ষেতে বিষ প্রয়োগের ফলে এসব পাখির মৃত্যু হয়েছে এবং একজন কৃষককে অভিযুক্ত করেছেন এই এলাকার খামারীরা। আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবো।

দৈনিক দেশতথ্য//এইচ//