শেখ দীন মাহমুদ,খুলনা প্রতিনিধি: কয়রায় অসময়ে তরমুজ চাষে সাফল্য অর্জন করেছেন স্থানীয় কলেজ শিক্ষক শাহাবাজ আলী। উপকুলীয় জনপদ কয়রায় তরমুজের মৌসুম যখন শেষ তখনই অসময়ে তরমুজ চাষে উদ্বুদ্ধ হন কৃষি প্রেমী শাহাবাজ। আর শুরুতেই অভাবনীয় সাফল্যে অনেকের অনুপ্রেরনা হয়ে উঠেছেন।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরামর্শে অসময়ে মাঁচা পদ্ধতি অনুসরণ করে তরমুজ চাষের জন্য নিজ ভিটায় ৪০ শতাংশ জমিতে পরিক্ষামূলক চাষ করে ইতোমধ্যে কয়েক মন তরমুজ বাজারজাত করতে পেরে সফলতার ঢেকুর তুলছেন এ সৌখিন চাষী।
সরেজমিনে ঘুরে তার সাখে কথা বলে জানা গেছে, খুলনার উপকূলীয় উপজেলা কয়রার লবণাক্ত মাটিতে বড় ধরনের সুস্বাদু তরমুজ উৎপাদন করে বাজারজাত করায় বিভিন্ন মহলে প্রশংশিত হয়েছেন তিনি। ইতিমধ্যে তার মাঁচায় অসময়ে ব্যাপকভাবে তরমুজ ঝুলে আছে এ ধরনের ছবিসহ সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় উপজেলা কৃষি অফিস সহ আশে পাশের কয়েকটা গ্রামের মানুষ দেখতে ভিড় জমাচ্ছে প্রভাষকের বাড়ীতে। তবে তিনি শুধু তরমুজ নয় বিগত বছরে অসময়ে শিম চাষেও সাফল্য অর্জন করায় অনেকে তাকে কৃষি প্রেমিক হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
প্রভাষক শাহাবাজ আলী বলেন, প্রতিদিন সকালে ২ ঘন্টা কৃষি ক্ষেত দেখাশুনা করেন, তার কলেজ থেকে ফিরে বিকেলে আবারও লেগে যান সবজির তদারকিতে। তিনি বলেন, তার এই তরমুজ চাষের জন্য উৎসাহ যোগান কয়রা সরেজমিন কৃষি গবেষণা বিভাগের বৈজ্ঞানিক সহকারি জাহিদ হাসান। তিনি বলেন, বিগত জুনের প্রথমেই পরিক্ষামূলকভাবে ৩ শ মাদায় বারি-১ জাতের ৬ শ তরমুজ বীজ রোপন করেন এবং রোপনের ৮০ দিন পর থেকে ফল উত্তোলন করেছে। অত্যান্ত সুস্বাদু অসময়ের এই তরমুজ বাজারে ব্যাপকহারে চাহিদা থাকায় ভাল দাম পাচ্ছেন প্রভাষক শাহাবাজ আলী। প্রতিটি তরমুজ গড় ৬ থেকে ৮ কেজি ওজন হয়েছে এবং প্রতি কেজি পাইকারি ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হওয়ায় লাভের আশা দেখছেন। তারপরামর্শ বেকার যুবকরা যেন সময় নষ্ট না করে বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদন করে দেশকে এগিয়ে নিতে সহযোগিতা করেন এমনটা প্রত্যাশা তার। উপজেলা কৃষি অফিসার আছাদুজ্জাামন সম্প্রতি তরমুজ ক্ষেতটি পরিদর্শন করে সন্তোশ প্রকাশ করেন। কয়রার কৃষকরা এ ধরনের কাজে যাতে উৎসাহিত হয় সে জন্য কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে আশ্বাস প্রদান করেন।
সরেজমিন গবেষণা বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোঃ হারুনর রশিদ লবণাক্ত মাটিতে লাগানো অসময়ে এই তরমুজ ক্ষেত পরিদর্শন শেষে প্রতিবেদককে বলেন, বারি তরমুজ-১ হাইব্রিড না হওয়ার কারনে কৃষকরা এই তরমুজ খেয়ে নিজেরা বীজ সংরক্ষণ করতে পারবে। দেশের অন্যান্য এলাকার চেয়েও সুস্বাদু, অধিক পরিমাণে এবং বড় ধরনের তরমুজ উৎপাদনের সাফল্য দেখে তিনি মুগ্ধ হয়েছে বলে জানিয়েছে। পর্যায়ক্রমে কয়রার সব জায়গায় এই চাষাবাদের জন্য কৃষকদের সহযোগিতা করা প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
দৈনিক দেশতথ্য//এল//

Discussion about this post