Print Date & Time : 10 May 2025 Saturday 12:34 am

কয়রায় হামলার শিকার সাংবাদিক

খুলনা প্রতিনিধি:

খুলনার কয়রা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তথ্য সংগ্রহকালে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি কর্তৃক স্থানীয় রিয়াজুল আকবর নামের এক সাংবাদিককে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইমারজেন্সি বিভাগের সামনে এ ঘটনাটি ঘটে। সাংবাদিক রিয়াজুল আকবর (২৪) উপজেলার ঘুগরাকাটি গ্রামের জি এম আকবর আলীর ছেলে।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক রিয়াজুল জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে একটি প্রতিবেদন প্রস্তুতের জন্য গত ১ মাসে হাসপাতালে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীদের মোট ভর্তির সংখ্যা ও সে বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা

ডাঃ সুদীপ বালা রোগী দেখায় ব্যস্ত থাকায় সে ইমারজেন্সি বিভাগের সামনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিল। এসময় ইমারজেন্সি বিভাগের সামনে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা নিষেধাজ্ঞা না মেনে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ব্যবস্থাপত্রের ছবি নিতে অপেক্ষা করছিল। এসময় রেজাউল নামের একমি কোম্পানির এক বিক্রয় প্রতিনিধি আকষ্মিক তার হাসপাতালে কি? বলেই তাকে আকষ্কিক চড়, কিল,ঘুষি মারতে থাকে। এসময় রিয়াজুল তাকে মারপিটের কারণ জানতে চাইলে সে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও বেধড়ক মারপিট করতে থাকলে অন্যান্য বিক্রয় প্রতিনিধিরা ও হাসপাতালের কর্মচারীরা রেজাউল নামের ওই ব্যক্তিকে ধরে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যায়। এরপর সে ওই ঘটনা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তাকে জানালে তিনি তাকে প্রথমিক চিকিৎসা দিয়ে অভিযুক্ত রেজাউলকে ডেকে ঘটনা বাইরে জানাজানি হলে হাসপাতালের সুনাম ক্ষুন্ন হবে জানিয়ে রেজাউলকে মানবিকভাবে ক্ষমা করে দিতে বলেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের এক কর্মচারী জানান, ওই সাংবাদিক কি তথ্য নিতে স্যারের জন্য বাইরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিল। এসময় আকষ্মিক রেজাউল নামের ওষুধ কোম্পানির ওই বিক্রয় প্রতিনিধি আকষ্মিক তার উপর হামলা করে। তবে ঘটনার পর স্যার উভয় পক্ষকে মিলিয়ে দিয়ে সাংবাদিককে পাঠিয়ে দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।

এব্যাপারে অভিযুক্ত রেজাউলের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন মানুষের মন মেজাজ সব সময় ভালো থাকে না, আর ওই সাংবাদিকের সাথে যা হয়েছিল তা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা মিটিয়ে দিয়েছেন। সরকারি হাসপাতালে ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিদের রোগীদের ব্যবস্থাপত্রের ছবি নেওয়ার বৈধতার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর না দিয়ে চাকুরি বাঁচাতে হাসপাতালের অনেককে ম্যানেজ করে তাদেরকে চলতে হয় বলে দাবি করেন।

এব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ সুদিপ বালা সকাল থেকে বাইরে থাকায় ঘটনার ব্যাপারে জানেননা দাবি করে খোঁজ নিয়ে জানাবেন বলে মোবাইলের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

সর্বশেষ মারপিটের শিকার সাংবাদিক রিয়াজুল জানান, কয়েকমাস পূর্বে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ব্যাবস্থা পত্রের ছবি ওঠানো সংক্রান্ত ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে একটি তথ্যবহুল সংবাদ প্রকাশের জেরে তাকে মারধর করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন জানিয়ে ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত পূর্বক দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

দৈনিক দেশতথ্য//এসএইচ//