শেখ দীন মাহমুদ,খুলনা প্রতিনিধি: খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুকৃবি) সাবেক উপাচার্য (ভিসি) ড. শহীদুর রহমান খান ও বর্তমান রেজিস্ট্রার খন্দকার মাজহারুল আনোয়ারের বিরুদ্ধে
ধর্ষণের মামলা নিতে সোনাডাঙ্গা থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (১৩ মার্চ) খুলনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আঃ সালাম খান এ নির্দেশ দিয়েছেন।
ওই আদালতের স্পেশাল পিপি এড ফরিদ আহম্মেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, খুকৃবির অস্থায়ী অফিসের পঞ্চম তলায় সাবেক উপাচার্য থাকতেন । সেখানে তার খাওয়ার কোনো ব্যবস্থা না থাকায় রেজিস্ট্রার ওই নারীকে খাবারের ব্যবস্থার জন্য দায়িত্ব দেন। এরপর থেকে ভুক্তভোগী ওই নারী প্রতিদিন তার খাবার পৌঁছে দিতে নিত্য যাতায়াতের সুবাদে তাকে বিভিন্ন সময়ে ‘কুপ্রস্তাব’ দিতে থাকেন উপাচার্য। একপর্যায়ে ২০২১
সালের ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টার দিকে খাবার দিতে গেলে পূর্ব
পরিকল্পিতভাবে রেজিস্ট্রারের সহযোগিতায় ওই নারীকে উপাচার্য ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
পরে রেজিস্ট্রার ওই নারীকে ঘটনা কাউকে না জানাতে বিভিন্ন হুমকি প্রদান করেন। এমনকি চাকরি না থাকার ভয় দেখিয়ে বিবাহের আশ্বাসে ওই নারীর স্বামীকে তালাক দিতে বাধ্য করে।
এরপর থেকে ২০২২ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে ভিসি ওই নারীর সঙ্গে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে মেলামেশা করতে থাকেন। একপর্যায়ে মেয়াদ শেষ হলে উপাচার্য বদলি হয়ে ওই নারীর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন।
পরবর্তী সময়ে ২০২৩ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি সাবেক ভিসি খুলনায় এলে ওই নারী তার সঙ্গে দেখা করেন। একপর্যায়ে পায়ে ধরে কান্নাকাটি করে বিয়ে করার আকুতি জানালে ভিসি তাতে রাজি না হলে ওই নারী তার স্বজনদের বিষয়টি জানিয়ে সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় মামলা করতে যান। থানা কর্তৃপক্ষ মামলা গ্রহণ না
করে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেয়।
খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ধর্ষণের অভিযোগকারী ওই নারী প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টোর কিপার হিসেবে চাকরি করতেন। পরে তাকে উপাচার্যের ব্যক্তিগত সরকারি (পিএ) হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।
ধর্ষণের অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার খন্দকার মাজহারুল আনোয়ার বলেন, ‘ তিনি ওই ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানেন না। তাকে ফাঁসানো হচ্ছে দাবি করে তিনি আরও বলেন, ‘ যদি এমন কোনো ঘটনা ঘটেই থাকে,
তাহলে সেটি ওই নারী ও ভিসির একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার। সেটি তারর জানার কথা নয়।’
প্রসঙ্গত, গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর তার মেয়াদ শেষ করেছেন। বর্তমানে তিনি ময়মনসিংহে নিজের বাড়িতে থাকেন। এর আগে উপাচার্যের বিরুদ্ধে স্ত্রী, ছেলে-মেয়েসহ আত্মীয়-স্বজনকে অবৈধভাবে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ রয়েছে।
দৈনিক দেশতথ্য//এসএইচ//

Discussion about this post