নানা সংকটে এবারের কোরবানির ঈদে খুলনার চামড়ার বাজার ছিলো মৌসুমি ব্যবসায়ীদের দখলে।
এমনকি মৌসুমী বসায়ীদের দৌরাত্বে অধিকাংশ চামড়া কিনতেই পারেনি প্রকৃত ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ফড়িয়া ও মৌসুমী ব্যবসায়ীরা সরকার নির্ধারিত দরের তুলনায় অধিক মূল্যে চামড়া কিনছেন। ফলে একদিকে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা ট্যানারি
মালিকদের থেকে বকেয়া টাকা না পাওয়ায় অর্থ সংকটে কিনতে পারেননি চামড়া কিনতে। মূলত এ সুযোগই ব্যবহার করেছে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা এমনটাই অভিযোগ তাদের। তথ্য অনুসন্ধানে যানাযায়, খুলনার শেখ পাড়া একসময় চামড়া পট্টি হিসেবে সর্বজন পরিচিত ছিল।তবে কালের বিবর্তনে নানা সংকটে সেখানথেকে অনেকেই বাধ্য হয়ে ব্যবস্যা গুটিয়ে নিয়েছেন। পেশা বদলও করেছেন ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ। আর যারা কোনরকম টিকে রয়েছেন তারাও এ বছর অর্থ সংকটের কারণে চামড়া কিনতে পারেননি। চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি অব্দুস সালাম ঢালী জানান, অর্থ সংকটে তারা এবারও চামড়া কিনতে পারেননি। গত কয়েকদিন আগে সরকার চামড়ার প্রতি বর্গফুট ৪৪ টাকা দর নির্ধারণ করে দেয়। সে দরে চামড়া ক্রয় করতে শুরু করেন তারাও। তবে ঈদের দিন অর্থাৎ রোববার (১০ জুলাই) দুপুরে কয়েকটি গাড়ি এসে সরকার নির্ধারিত দরের অধিক মূল্যে চামড়া কিনে নিয়ে যায়। তবে তাদের চোখে দেখা ছাড়া কিছুই বলার উপায় ছিলনা বলেও আক্ষেপ করেন তিনি। ব্যবসায়ী সমিতির কোষাধ্যক্ষ বাবর আলী জানান, কালের বিবর্তনে শেখপাড়া থেকে চামড়ার ব্যবসা হারাতে বসেছে। অস্থায়ীভাবে তারা হাতে গোনা কয়েকজন ব্যবসায়ীরা এ ব্যবসা টিকিয়ে খেছেন। ঢাকার কয়েকটি ট্যানারি মালিকের কাছে ব্যবসায়ীদের অনেক টাকা আটকে রয়েছে। ঈদেরদিন রোববার খুলনার ৭ জন ব্যবসায়ী রাস্তায় দাঁড়িয়ে অস্থায়ী দোকান করে চামড়া ক্রয় করছিল। হঠাৎ কয়েকটি নামী দামি কোম্পানীর প্রতিনিধিরা এসে বেশী দামে চামড়া কিনে নিয়ে যায়। এতে করে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা হয়েছেন বঞ্চিত। চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক কার্তিক ঘোষ অভিযোগ করে বলেন, চামড়ার ব্যবসা এখন আর প্রকৃত ব্যবসায়ীদের হাতে নেই। এখন মৌসুমী ব্যবসায়ীদের হাতেই সব। এর আগে ট্যানারি মালিকরা সরাসরি তাদের থেকে চামড়া ক্রয় করত। এখন পুঁজি সংকটে বিক্রেতাদের নগদ টাকা দিতে পারেননা তারা। তাছাড়া কোরবানির মৌসুম এলে ঢাকার বিভিন্ন কোম্পানী মাদ্রাসার সাথে সরাসারি যোগাযোগ করে সেখান থেকে চামড়া কিনছেন। সেখান থেকে তারা ৮০০ টাকা দরে কিনে নিচ্ছেন। ফলে বিক্রেতারা ব্যবসায়ীদের কাছে সরাসরি আসছেন না বলেও দাবি করেন। খুলনায় নানা সংকটে অস্তিত্ব সংকটে থাকা চামড়ার ব্যবসাকে টিকিয়ে রাখতে ব্যবসায়ীদের জন্য নির্ধারিত স্থান দাবি করে তিনি ঢাকার কয়েকটি ট্যানারি মালিকের থেকে খুলনার ব্যবসায়ীদের পাওনা প্রায় ৩ কোটি টাকা উদ্ধারে সরকারি হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
সর্বশেষ সংকট নিরসনসহ মৌসুমি ব্যবসায়ীদের অপতৎপরতা বন্ধের ব্যবস্থা না করতে পারলে অচিরেই খুলনা থেকে চামড়ার ব্যবসা হারাতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আর//দৈনিক দেশতথ্য//১১ জুলাই-২০২২//