খুলনায় একটি ভাড়া বাসা থেকে অজ্ঞাত পরিচয় এক নারীর দ্বিখন্ডিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রবিবার (০৬ নভেম্বর) নগরীর ১ নং গোবরচাকা ক্রস রোডস্থ তেতুল তলা এলাকার জনৈক রাজুর বাড়ির ভাড়াটিয়া আবু বক্কর মোল্লার ঘর থেকে শরীর থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন অবস্থায় বাক্সবন্দি ওই মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। বিচ্ছিন্ন মাথাটি একটি পলিথিনে মোড়ানো ছিল। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মৃত নারীর নাম পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি।
ঘরটির ভাড়াটিয়া বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার ভাগা গ্রামের জাকির মোল্লার ছেলে ও স্ত্রী স্বপ্না খাতুন একই গ্রামের আইয়ুব আলী সরদারের মেয়ে। ওই ঘরের ভাড়াটিয়া দম্পতি উভয়ই পলাতক রয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, লাশ উদ্ধার হওয়া ঘরের ভাড়াটিয়া জনৈক আবু বক্কার মোল্লা কদম তলা স্টেশন রোডস্থ নিউ আল আকসা নামে একটি ট্রান্সপোর্টে কর্মরত ছিল। আজ রবিবার সকালে তিনি কর্মস্থলে না যাওয়ায় ও তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর বন্ধ থাকায় ট্রান্সপোর্ট থেকে তাকে খুজতে আসে কয়েকজন। তবে তার ঘর তলাবদ্ধ থাকায় বহুবার ডাকাডাকির পর কাউকে না পাওয়ায় বাড়ির মালিক রাজুকে বিষয়টি জানানো হয়।
এর কয়েকঘন্টা অতিবাহিত হলেও ভাড়াটিয়াদের কারো সন্ধান না পেয়ে বাড়ির মালিক স্থানীয় কাউন্সিলরকে বিষয়টি অবগত করলে তিনি থানায় ফোন দিলে ওই বাড়িতে পুলিশ পৌঁছে ঘরের তালা ভেঙ্গে ভেতর গিয়ে মস্তক বিচ্ছিন্ন ওই নারীর লাশ উদ্ধার করে। এসময় মৃত ওই নারীর মাথা পলিথিন দিয়ে আবৃত ও দেহটি খাটের ওপর ফেলানো ছিল।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ভাড়াটিয়া আবু বক্কারের স্ত্রী স্বপ্না বেগম স্থানীয় প্রিন্স হাসপাতালে সেবিকা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি প্রতিদিন রাত ৮ টার দিকে তার কর্মস্থলে গিয়ে সকালে ফিরতেন। সর্বশেষ শনিবার রাতেও একই সময়ে চলে গিয়ে রোববার সকালে তিনি আর বাসায় ফিরে আসেননি। ধারণা করা হচ্ছে শনিবার রাতে ওই ঘটনার পর তিনিও স্বামীর সাথে পালিয়ে গিয়েছে।
এ ব্যাপারে বাড়ির মালিক রাজু জানান, মৃত ওই নারীকে এর আগে কখনও তিনি বাড়িতে দেখেননি। তিনি আবু বক্কার মোল্লার স্ত্রীও নন। গভীর রাতের কোন এক সময়ে ওই হত্যাকান্ড ঘটানো হয়েছে। অাবু বক্কারের স্ত্রী প্রিন্স হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন নিশ্চিত করে তিনি আরও বলেন, বক্করের স্ত্রী প্রতিদিন রাতে বেরিয়ে সকালে কাজ শেষে বাড়ি ফিরে আসেন। কিন্তু আজ ঘটনার দিন তিনি আর ফিরে আসেন নি। তবে হত্যাকান্ডের কারণ সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না বলেও জানিয়েছেন।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার সোনালী সেন জানান, আবু বক্কর একটি ট্রান্সপোর্ট কোম্পানিতে চাকরি করতেন। রবিবার সকালে তিনি কর্মস্থলে না যাওয়ায় ও মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়ায় সহকর্মীরা তাকে খুঁজতে বাসায় গিয়ে তাদের ‘ঘরটি তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখার একপর্যায়ে তারা জানালা দিয়ে বিছানায় একটি বাক্স ও আশপাশে রক্ত দেখে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পলিথিনে মোড়ানো মাথা ও একটি কাঠের বাক্সের ভেতর থেকে এক নারীর লাশ উদ্ধার করে। এ সময় সেখান থেকে বেশ কিছু আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। তবে মৃত ওই নারীর নাম পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি বলেও জানিয়েছেন তিনি।
//জা// দৈনিক দেশতথ্য// ০৭, নভেম্বর ২০২২//

Discussion about this post