শেখ দীন মাহমুদ,খুলনা প্রতিনিধি: নেই বিএসটিআইয়ের অনুমোদন ও ট্রেড লাইসেন্স।তবুও দেশের বিভিন্ন প্রসিদ্ধ ব্র্যান্ডের মোড়ক নকল করে বিএসটিআইয়ের ভুয়া সিল ব্যবহার করে বাজারজাত করা হচ্ছে নকল ডিটারজেন্ট পাউডার। নিম্ন মানের এসব ডিটারজেন্টে সয়লাব খুলনার ডুমুরিয়ার বাজার। এতে করে বিপাকে পড়েছেন ভোক্তা সাধারণ। অন্যদিকে রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। আর গোপনে ওই সকল নকল ডিটারজেন্ট উৎপাদন করতে নির্জন জায়গায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা গড়ে তুলেছেন কারাখানা ।
একদিকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ও সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে দেদারছে তৈরি ও বিক্রি করছেন নকল ডিটারজেন্ট পাউডার।
প্রতিবেদনকালে খুলনার ডুমুরিয়ার বাজারের বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন প্রসিদ্ধ ব্র্যান্ডের মোড়ক অথচ দাম কম হওয়ায় ওই সকল ডিটারজেন্টগুলো বিক্রিও হচ্ছে বিপুল পরিমাণে। এসব নকল ডিটারজেন্ট ব্যবহার করায় একদিকে যেমন হাত-পায়ে সর্ব সাধারণ চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছে। অন্যদিকে নষ্ট হচ্ছে মুল্যবান কাপড়। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকির পাশাপাশি আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে সর্বসাধারণের।
ডুমুরিয়ার শাহপুর বাজারের একটি দোকানে দেখা যায়, নকল ‘খান’ ডিটারজেন্ট পাউডার। এটি দেখতে হুবহু ইউনিলিভার কোম্পানির ডিটারজেন্টের মতো। এ ব্যাপারে রবিউল নামে এক ক্রেতা বলেন, তিনি নকল ‘খান’ পাউডার কিনে প্রতারিত হয়েছেন। এ পাউডার ব্যবহার করায় তার নতুন পাঞ্জাবিসহ অনেক কাপড় ঝলসে গেছে। এমনকি ডুমুরিয়ার বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করেও ওই সকল নকল ডিটারজেন্ট পাউডার বিক্রি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
সরেজমিনে ডুমুরিয়ার শাহপুরস্থ খান কর্পোরেশন প্রোডাক্ট কারখানার ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, সেখানকার গোয়াল ঘরের একটা রুমে বিএসটিআই এর ভূয়া স্টিকার মোড়কে লাগিয়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে নকল ডিটারজেন্ট পাউডার। এখানে তৈরিকৃত নকল ডিটারজেন্ট পাউডারগুলো আবার ডুমুরিয়ার বিভিন্ন গ্রাম,দোকান এমনকি আশপাশের বিভিন্ন উপজেলাতেও হরহামেশাই বিক্রিয় করা হচ্ছে।
এব্যাপারে কারখানার মেহেদি হাসান নামের একজন জানান, এই কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোহেল খান। তিনি দেশের বাইরে থাকেন। তারা ৬ মাস যাবত এই ব্যাবসা পরিচালনা করছি। প্রতিদিন ৫ হাজার প্যাকেট পাউডার এ কারখানা থেকে তৈরি করতে পারেন বলে জানান তিনি। তবে তাদের বিএসটিআই এর কোন অনুমোদন আছে কি না সে ব্যাপারে তিনি কোন সদোত্তর দিতে পারেননি।
এব্যাপারে ডুমুরিয়া উপজেলা কর্মকর্তা আসিফ শরিফ রহমানের সাথে যোগাযোগ করতে তার মোবাইলে একাধিকবার কল দিয়েও তিনি রিসিভ না করায় তার মন্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
সর্বশেষ ভেজাল পণ্য উৎপাদন ও বিক্রয় বন্ধে স্থানীয়রা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ঠ কতৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
দৈনিক দেশতথ্য//এল//