কুষ্টিয়ার খোকসায় উপজেলা পরিষদের উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মোতাহার হোসেন খোকনের কর্মীদের মারধর করে পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে দেওয়াসহ প্রচার-প্রচারনায় বাঁধা দিয়ে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সদর উদ্দিন খান জেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিতে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এর প্রেক্ষিতে ওই আসন শূন্য ঘোষণা করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এর পর উপ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। এর পর উপজেলা পরিষদের উপ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন আওয়ামীলীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. বাবুল আক্তার নৌকা প্রতীকে, স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. মোতাহার হোসেন খোকন ঘোড়া মার্কা প্রতীকে এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মো. শহিদুল ইসলাম আনারস প্রতীক নিয়ে খোকসা উপজেলা পরিষদ উপ নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন।
এদিকে নির্বাচনী আচরণ-বিধি লংঘন করে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. মোতাহার হোসেন খোকন তার প্রচারনায় বাঁধা দেওয়ায় অভিযোগে কুষ্টিয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও খোকসা উপজেলা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
মো. মোতাহার হোসেন খোকন তার লিখিত অভিযোগে উল্লেক করেন ২ অক্টোবর খোকসা উপজেলা পরিষদের উপ-নির্বাচনে তিনি চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে ঘোড়া মার্কা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। তিনি ১৮ অক্টোবর তার নির্বাচনী প্রচারনা শুরু করেন। এর পর গত ২০ অক্টোবর সকাল ১১ টা ২০ মিনিটের দিকে তার কর্মীরা জয়ন্তীহাজরা ইউনিয়নের মাসলিয়া এলাকায় তার নির্বাচনী প্রতীক ঘোড়া মার্কা প্রতীকের পোস্টার লাগাতে গেলে ওই এলাকার আবু উবাইদা শাফি (৩৮), মো. রাজন (৪০), মো. শকিব খান টিপু (৫২), মো. জামাল (৪৫), আব্দুল রশিদ (৪০), মো. আব্দুল মজিদ (৪৩) ১ হাজার পোস্টার, ৩ শত ছোট পোস্টার, আঠা, দড়ি ইত্যাদি সামগ্রী কেড়ে নিয়ে পাশে থাকা পুকুরের মধ্যে ফেলে দেয় এসময় ভ্যান চালক বাধা দিলে তাকেও মারধর করা হয়।
এ বিষয়ে মোতাহার হোসেন খোকন বলেন, বাবুল আক্তারের লোকজন জয়ন্তাহাজরা, বেদবাড়িয়া ও জানিপুর এলাকায় নির্বাচনী প্রচারনা বন্ধ রাখতে বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদান করছে।
এ বিষয়ে জানতে আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. বাবুল আক্তারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে প্রচার প্রচারণায় বাধা প্রদানে বিষয়ে খোকসা উপজেলার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন সচেতন নাগরিক জানান, নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা লঙ্ঘন হচ্ছে কিনা তা পর্যবেক্ষণে তিনজন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, ভিজিল্যান্স টিম ও আইনশৃঙ্খলা অবজারভেশন টিম গত মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে মাঠে কার্যক্রম শুরু করেছে। তারপরও এ ধরনের কার্যক্রম চললে শান্তিপূর্ন নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে সংশয়ের সৃষ্টি করবে বলে জানান তারা।
অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে সহকারী রিটার্নিং ও খোকসা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. রশিদুল আলম বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী আমাদের কাছে একটা লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। আমরা সেই অভিযোগের কপির ফরোয়ার্ডিং খোকসা থানায় পাঠিয়েছি৷ এখন এই বিষয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। এসময় প্রার্থীকে মামলা করারও পরামর্শ দেন তিনি।
এ বিষয়ে খোকসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আশিকুর রহমান বলেন, এ সংক্রান্ত আমরা কোনো লিখিত অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে খোকসা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিপন বিশ্বাস বলেন, এই বিষয়ে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ব্যবস্থা নিবেন। আমি তার কাছে পাঠিয়ে৷ দিয়েছি। তিনিই এই বিষয়টা দেখবেন।
জা//দৈনিক দেশতথ্য// ২৬ অক্টোবর, ২০২২//