Print Date & Time : 6 August 2025 Wednesday 1:31 am

গাংনীতে পাট বীজ খামারে অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে ২০ একর জমির ধান

গাংনী পাট বীজ খামারে অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে ২০ একর জমির ধান

মাহাবুল ইসলাম, গাংনী, মেহেরপুর: মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার চিৎলা ভিত্তি পাট বীজ খামারের কর্মকর্তাদের অবহেলায় নষ্ট হতে চলেছে প্রায় ২০ একর জমির ধান গাছ। রোপনের শুরু থেকেই অযত্নে বেড়ে উঠছে ধানের গাছ গুলো। 

পুরো জমি আগাছায় ছেয়ে গেছে। দেখার যেন কেউ নেই। পরে শ্রমিকদের দিয়ে আগাছা না তুলে ফার্মের যুগ্ম পরিচালক মোরশেদুল ইসলামের একান্ত কাছের লোক নাজিম উদ্দিনের দেওয়া নিম্নমানের কীটনাশক প্রয়োগে পুড়েছে ২০ একর জমির ধান গাছ। এতে কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হওয়া নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। আগাছা তোলার জন্য শ্রমিকদের একটা বরাদ্দ থাকলেও সেই টাকার কোন হদিস নেই। শ্রমিকদের যাতে টাকা দেয়া না লাগে সেজন্য শ্রমিকদের কাজে না লাগিয়ে আগাছা পরিষ্কারের জন্য কীটনাশক প্রয়োগ করে ফার্মের কর্মকর্তারা।

জানা গেছে, চলতি মৌসুমে চিৎলা ভিত্তি পাট বীজ খামারে ১২০ একর জমিতে আউস ধানের চারা রোপন করা হয়। জমিতে আগাছা বৃদ্ধি পাওয়ায় চিৎলা ফার্মের যুগ্ম পরিচালক মোরশেদুল ইসলামের একান্ত কাছের লোক নাজিম উদ্দিন শ্রমিকদের পরামর্শ না নিয়ে তার হচ্ছে মতো কীটনাশক মিক্স করে তা প্রয়োগের জন্য ফার্মের শ্রমিকদের দেন। কীটনাশক প্রয়োগের কয়েক দিনের মধ্যেই ধানের চারা গাছ গুলো মরতে শুরু করে। তবে কি ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করা হয়েছে এ ব্যাপারে কিছু জানানো হয়নি কর্মরত শ্রমিকদের। অভিযোগ রয়েছে নিম্নমানের কীটনাশক ও সার যুগ্ম পরিচালক মোরশেদুল ইসলাম নাজিম উদ্দিন এর মাধ্যমে চুয়াডাঙ্গা থেকে তার একান্ত ডিলারের মাধ্যমে ফার্মে নিয়ে আসেন। আর সেই সার কীটনাশক ব্যবহার করায় দিন দিন কমেছে ফলন।

চিৎলা ফার্মে কর্মরত শ্রমিকরা বলছেন, ধানের জমিতে অনেক আগাছা জন্মায়, তাই নাজিম উদ্দিন তাদেরকে কীটনাশক প্রয়োগ করতে বলেন। সেই কীটনাশক ব্যবহার করার ফলে ফার্মের উত্তর ও দক্ষিণ ব্লকের প্রায় ২০ একর জমির ধান গাছ নষ্ট হওয়ার পথে। কীটনাশকের বোতলের আলামত নষ্ট করার জন্য ধান গাছ মারা যাওয়ার একদিনের মাথায় তরি ঘড়ি করে নাজিম উদ্দিন বোতলগুলো পুড়িয়ে ফেলেন। কৃষকরা অভিযোগ করে বলেন, নাজিম উদ্দিনের অনুমতি ব্যতীত কোন কাজ করতে পারেন না ফার্মের উপসহকারী কর্মকর্তারা। নাজিমুদ্দিন এখানকার যুগ্ম পরিচালকের মত হাব ভাব নিয়ে চলাফেরা করেন, এ ক্ষমতা দিয়ে রেখেছেন যুগ্ম পরিচালক স্যার মোরশেদুল ইসলাম বলে জানান ফার্মের শ্রমিকরা।

সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে অভিযুক্ত নাজিম উদ্দিন ও উপসহকারী কর্মকর্তারা ফার্ম ছেড়ে বেরিয়ে যান। বার বার ফোন করেও তাদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এবিষয়ে চিৎলা ভিত্তি পাট বীজ খামারের যুগ্ম পরিচালক মোরশেদুল ইসলাম কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি জানান, বিষয়টি তদন্ত করে খতিয়ে না দেখা পর্যন্ত কিছু বলা যাবে না।

পরে সাংবাদিকরা কীটনাশকের বোতল সংগ্রহ করে গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসেনের কাছে নিয়ে গেলে তিনি বলেন, যে কীটনাশক গুলো ব্যবহার করা হয়েছে সেগুলো আগাছা নাশক। এই কীটনাশক বেশি ব্যবহার করলে ধান গাছের গোড়ায় ধীরে ধীরে পচন ধরে এমনটাই জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা।

খালিদ সাইফুল, দৈনিক দেশতথ্য, ৮ জুলাই ২০২৪