Print Date & Time : 24 August 2025 Sunday 8:05 pm

গাংনীতে প্যানেল চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে চাল আত্মসাতের অভিযোগ

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার রায়পুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান সারগিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে মৃত মানুষের নাম দিয়ে চাল আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে।
তাছাড়া ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট প্রোগ্রামের আওতায় অসচ্ছলদের মাসে ৩০ কেজি করে বরাদ্দ থাকলেও ৫ মাসের চাল না দিয়ে দেয়া হয়েছে ৩ থেকে ৪ মাসের এভাবেই অসচ্ছলদের চাল লুটপাটের অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগীরা।
এছাড়া মাতৃত্বকালিন ভাতার কার্ড ও কৃষি প্রণোদনা বিতরনে অনিয়ম,খাজনা আদায়ের টাকা ব্যাংকে না রেখে ইচ্ছেমত তসরুপাত করেছে বলে দাবি করেছে ইউপি সদস্যরা।

জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৫ আগষ্টের পর মামলা জনিত কারনে রায়পুর ইউপির চেয়ারম্যান গোলাম সাকলায়েন সেপু আত্মগোপনে থাকার কারনে প্যানেল চেয়ারম্যানের দায়িত্ব হাতিয়ে নেন ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সারগিদুল ইসলাম। দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে মামলার ভয় দেখিয়ে জিম্মি করে লুটপাট শুরু করেছে বলে অভিযোগ করেছে ইউপি সদস্যরা।

জানা গেছে, চলতি বছর ঈদুল আযহা উপলক্ষে সরকার কর্তৃক দরিদ্র অসচ্ছল ব্যক্তিদের মাঝে ১০ কেজি করে তিন হাজার দুই শতাধিক চাল বরাদ্দ করে। বরাদ্দ অনুযায়ী প্যানেল চেয়ারম্যান সারগিদুল ইসলাম প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার দপ্তরে চাল বিতরনকারীদের একটি তালিকা জমা দিয়েছে সেই তালিকার ২৯৭১ নম্বরে থাকা গোপালনগর গ্রামের মোফাজ্জেল হক গত ২৩ সালের ৭ এপ্রিল মারা গেলেও তাকে চাল দিয়েছে। এভাবেই ভুয়া তালিকা দিয়ে চাল লুটপাট করেছে বলে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগীরা।
মৃত মোফাজ্জেল হকের ছেলে মিনারুল ইসলাম বলেন, তার বাবার নামে চাল বরাদ্দ হয়েছে কিনা তিনি জানন না। তবে তিনি তার জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়ে গ্রামের একজনের মাধ্যমে ১০ কেজি চাল পেয়েছেন।
এদিকে চাঁদপুর গ্রামের আবুছদ্দীন বলেন, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের (ভিডব্লিউবি) আওতায় তাকে ফ্রিতে ৩০ কেজি করে প্রতি মাসে চাল বরাদ্দ দেয়। গত ৫ মাসের চাল দেয়া বন্ধ ছিলো। সেই ৫ মাসের চাল একবারে সরকার বরাদ্দ দিলেও তাকে দেয়া হয়েছে ৩ মাসের, এভাবেই অসচ্ছলদের চাল লুটপাটের অভিযোগ করেছে তিনি।
শিমুলতলা গ্রামের রেক্সনা খাতুন বলেন, ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট প্রোগ্রামের আওতায় ৫ মাসের চাল বরাদ্দ থাকলেও তিনি তিন মাসের চাল পেয়েছেন। বাকী দুই মাসের চাল তিনি পাননি।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ইউপি সদস্য বলেন, তাদের মামলার ভয় দেখিয়ে জিম্মি করে মাতৃত্বকালিন ভাতার কার্ড ও কৃষি প্রণোদনা বিতরনে অনিয়ম,খাজনা আদায়ের টাকা ব্যাংকে না রেখে ইচ্ছেমত তসরুপাত করেছে বলে দাবি করেছে ইউপি সদস্যরা।
এসব লুটপাটের ঘটনা দূর্নীতি দমন কমিশনের তদন্ত করার দাবি করেছে ভুক্তভোগীরা।
এদিকে লুটপাট সহ নানা অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে প্যানেল চেয়ারম্যান সারগিদুল ইসলাম বলেন, লেখেন সমস্যা নেই। জেল ফাঁসি যা হয় তাই হবে।
এ ব্যাপারে গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আনোয়ার হোসেন বলেন, অনিয়মের বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া মৃত মানুষের নামে চাল দেওয়ার বিষয়টিও তদন্ত করা হবে।