গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুরের গাংনীর চিৎলা ভিত্তি পাটবীজ খামারের সরকারি জমিতে অর্থের বিনিময়ে পাট পঁচানোর সুযোগ দিয়ে ব্যক্তিগত বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে।
এতে পাট পচা পানির কারণে পার্শ্ববর্তী পুকুরের মাছ মারা গিয়ে প্রায় দুই লাখ টাকার ক্ষতির শিকার হয়েছেন স্থানীয় মাছ চাষি মাসুদ।
অভিযোগ রয়েছে, বিএডিসির অনুমতি ছাড়াই খামারের যুগ্ম পরিচালক মোর্শেদুল ইসলাম ও তার ঘনিষ্ঠ কয়েকজন শ্রমিকের নেতৃত্বে এই কার্যক্রম চালাচ্ছেন। খামারের উত্তর ব্লকের বাঁশবাড়ীয়া দক্ষিণপাড়া সংলগ্ন ২-৩ একর নিচু জমিতে কৃষকদের পাট জাগ দেওয়ার সুযোগ করে দিয়ে প্রতি একর জমির জন্য নেওয়া হচ্ছে ৬ হাজার টাকা। নাজিম, বকুল ও জাব্বার নামের কয়েকজন শ্রমিক এই অর্থ সংগ্রহের সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত মাছ চাষি মাসুদ বলেন, “পাট পঁচা পানির কারণে আমার পুকুরে প্রচুর মাছ মারা গেছে। এতে আমার প্রায় দুই লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। বিষয়টি আমি আগেই খামারের কর্মচারীদের জানিয়েছি কিন্তু কোনো প্রতিকার পাই নি। এছাড়া খামারের যুগ্ম পরিচালক খামারে বেশিরভাগ সময় থাকে না বলে তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি, তিনি কারো ফোন রিসিভ করেন না।
তিনি আরো জানান, খামারের শ্রমিক বকুল, জাব্বার ও নাজিম মিলে এই সরকারী জমিতে টাকার বিনিময়ে পাট পঁচান। এখন আমি আমার এই ক্ষতিপূরণের দাবি জানাচ্ছি।
অভিযুক্ত বকুল পাট পঁচানোর বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, এখানে এক সময় আওয়ামী লীগের নেতারা পাট পঁচাতেন, বর্তমানে আমরা ব্যবহার করছি। এর কোনো অনুমতি পত্র নেই। এই টাকা স্থানীয় বাশঁবাড়িয়া দক্ষিণপাড়ার মসজিদের উন্নয়নে ব্যবহৃত করা হয়।
এদিকে মসজিদ কমিটির সভাপতি মুস্তাফিজুর রহমান খোকন পাট পঁচানো ও মাছ চাষীর ক্ষতির বিষয়ে অবগত রয়েছেন। তিনি জানান, পাট জাগ দেওয়ার কোনো টাকা মসজিদের কোনো উন্নয়নে খরচ হয় না।
এবিষয়ে খামারের উত্তর ব্লকের দায়িত্বে থাকা উপপরিচালক (ডিএডি) রমিজ জানান, আমি দীর্ঘদিন ধরে দেখছি এখানে পাট কাটার মৌসুমে পাট পচানো হয়। এবিষয়ে বিএডিসির কোন অনুমতি আছে কিনা তা সঠিক জানিনা। তবে তিনি খাবারের যুগ্ম পরিচালকের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন।
এবিষয়ে খামারের যুগ্ম পরিচালক মোর্শেদুল ইসলামের সাথে কথা বলতে গেলে তাকে অফিসে পাওয়া যায়নি। মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, সরকারি জমিতে এভাবে অনুমতি ছাড়া ব্যক্তিগত বাণিজ্য শুধু অনৈতিক নয়, এটি সরকারি সম্পদের অপব্যবহার।

Discussion about this post