Print Date & Time : 10 May 2025 Saturday 3:40 pm

গাংনীর বৃদ্ধা ছকিনা একখন্ড জমি চান

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার আজান গ্রামের এক অসহায় বৃদ্ধার নাম ছকিনা খাতুন (৬৫)। বিধবা ছকিনা প্রায় পঞ্চাশ বছর ধরে অন্যের জমিতে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তাকে দেখার কেউ নেই। একাকীত্বই এখন তার নিত্য দিনের সঙ্গী। সে ওই গ্রামের মৃত আলতাব হোসেনের স্ত্রী।

আজান গ্রামের আওয়ামী নেতা আবুল বাশার এর রাস্তার ধারে অবস্থিত একটি পুকুরের এক কোণে বাঁশের চাটাই, টিন ও এক পাশে কাঁদার দেওয়াল দিয়ে নির্মিত জরাজীর্ণ একটি কুড়ে ঘরে পনের বছর পূর্বে স্বামী মারা যাওয়ার পর দীর্ঘদিন ধরে একাকী এই জায়গাতে বসবাস করে আসছেন ছকিনা খাতুন। তার ভাগ্যে বয়স্ক ভাতার কার্ড ছাড়া জোটেনি সরকারি তেমন কোনো সুযোগ-সুবিধা, মেলেনি একটি সরকারি ঘর। 

ছকিনা খাতুনের একটি মাত্র পুত্র সন্তান থাকলেও সে তার গর্ভধারিণী মা’কে দেখাশোনা করে না। বউ নিয়ে থাকে শ্বশুর বাড়ি। ফলে শারীরিক অসুস্থ থাকলেও বৃদ্ধা বয়সেও তাকে ছুটতে হয় খাবারের খোজে অন্যের দ্বারে দ্বারে। আবার এ চিন্তাও মাথায় ঘুরপাক খায়, না জানি কখন জমির মালিক তাকে এখান থেকে তাড়িয়ে দেয়। তাইতো সমাজের বিত্তবান ও সরকারের কাছে একটি ঘরের আবেদন জানিয়েছেন এই অসহায় বৃদ্ধা।

অসহায় বৃদ্ধা ছকিনা খাতুন জানান, স্বামী মারা যাওয়ার পর আমাকে দেখার কেউ নেই। আমার একমাত্র ছেলেও আমার খোজ নেয় না। কাঁচা মরিচ এর মৌসুমে অন্যের মরিচ খেক্ষে মরিচ তোলা কাজ করে যা পাই তা দিয়ে অতিকষ্টে দিন পার করি। তাছাড়া থাকার একমাত্র ঘরটিও জরাজীর্ণ হওয়ায় বৃষ্টি আসলে আমার খুব কষ্ট হয়। খাওয়া পানি টাও আমাকে অন্যের টিউবওয়েল থেকে নিয়ে আসতে হয়।

এলাকাবাসী সাইদুল, আশিক, কালু, ও ফরিদ আলী জানান, এই বৃদ্ধা মহিলা খুব অসহায়, এর আগে কাঁচা মরিচ এর সৌসুমে মাঠে মরিচ তোলা কাজ করে খুব কষ্টে দিন পার করত। এখন আর তেমন কোনও কাজই করতে পারেনা, এক বেলা খেয়ে না খেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করে। থাকার ভালো একটি ঘরও নেই কোন মহৎ ব্যক্তি বা সরকার যদি এই অসহায় বৃদ্ধা কে একটি ঘরের ব্যবস্থা করে দিত তাহলে কমপক্ষে সে রাতের বেলা শান্তি মতো একটু ঘুমাতে পারতো।

এলাকাবাসীরা আরো জানান, সরকারি যে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা রয়েছেন তাদেরকে অনুরোধ জানাচ্ছি যাতে করে ত্রাণ শাখার পক্ষ থেকে এই অসহায় বৃদ্ধা কে সহযোগিতা করে এবং সরকারি একটি ঘর পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করে।

এবি//দৈনিক দেশতথ্য//সেপ্টম্বর ১৪,২০২২//