মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরকার কর্তৃক প্রদানকৃত ৩টি এ্যাম্বুলেন্সের দুটি দীর্ঘদিন যাবত অচল হয়ে পড়ে আছে।
অপর ১টি এ্যাম্বুলেন্স নিয়ে মেহেরপুর জেনারেল হসপিটাল ও কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হসপিটাল পর্যন্ত জরুরী রোগী নিয়ে যেতে পারে। মুহূর্ষু রোগীর জরুরী প্রয়োজনে রাজশাহী, খুলনা, ঢাকা যেতে পারে না।
২০০৩ সালে সরকার কর্তৃক প্রদানকৃত এ্যাম্বুলেন্স টি রেজিষ্ট্রেশন নং মেহেরপুর ছ-৭১০০০৩। টুকিটাকি কিছু যান্ত্রিক অসুবিধা দেখিয়ে গাড়িটি গ্যারেজে তালাবন্ধ করে রাখা হয়েছে। যে কারণে শতশত রোগী সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
১৯৯৩ সালে প্রদানকৃত এ্যাম্বুলেন্স টি রেজিষ্ট্রেশন নং কুষ্টিয়া চ-০২-০০১৯।খোলা আকাশের নিচে রোদ-বৃষ্টিতে ভিজে অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে, যেখানে সরকারি সম্পদ বিনষ্ট হচ্ছে।
২০০৩ সালে প্রদানকৃত এ্যাম্বুলেন্স টির দায়িত্বে থাকা আউটসোর্সিং নিয়োগপ্রাপ্ত চালক মুনতাজ আলী প্রথমে বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করে পরে বলে আমাকে গাড়িটি দেখভাল এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব দিয়েছিল, আমি মূলত উপজেলা স্বাস্থ্য পঃপ কর্মকর্তার গাড়ী চালক হিসেবে নিয়োজিত আছি।
বর্তমানে চলনকৃত এ্যাম্বুলেন্স টির চালক আব্দুল মালেক বলে, আমি বর্তমানে যে এ্যাম্বুলেন্স টি চালায় সেটার কোন রেজিষ্ট্রেশন নেই, রেজিষ্ট্রেশন জটিলতার কারণে আমি মেহেরপুর ও কুষ্টিয়ার বাইরে প্রশাসনিক ঝামেলার কারণে যেতে পারি না। কর্তৃপক্ষকে বার বার লিখিত ভাবে অবহিত করলেও কোন সুরাহা পায়নি।
বিভিন্ন রোগীর স্বজনরা জানান, সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যের থেকেও এ্যাম্বুলেন্স চালক আব্দুল মালেক বেশি টাকা আদায় করে থাকে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে, এবং রোগীর স্বজনরা আরও বলেন, সরকারি এ্যাম্বুলেন্স এর সুবিধা নিতে গিয়ে আমরা বিভিন্ন বিড়ম্বনার স্বীকার হয়। সমাজের উচ্চবিত্তদের পক্ষে অধিক ভাড়া দিয়ে প্রাইভেট এ্যাম্বুলেন্স সুবিধা নেওয়া সম্ভব হলেও নিম্নবিত্তদের পক্ষে সেটা অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। গাংনীর নিম্নবিত্ত ভুক্তভোগীদের দাবী সরকারি এ্যাম্বুলেন্স সুবিধা যাতে ভুক্তভোগী রোগীরা জরুরী মুহূর্তে সহজেই পেতে পারে, সেই ব্যবস্থা করতে কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর ভান্ডার রক্ষক দবির উদ্দিন বলে, ৩টি এ্যাম্বুলেন্স এর মধ্যে ১টি সম্পূর্ণ অকেজো হয়ে পড়ে আছে খোলা আকাশের নিচে, মেহেরপুর ছ-৭১০০০৩ নং এ্যাম্বুলেন্স টি আউটসোর্সিং নিয়োগপ্রাপ্ত চালক মুনতাজ আলীর দায়িত্বে আছে। বর্তমানে চলনকৃত রেজিষ্ট্রেশন বিহীন এ্যাম্বুলেন্স টি আব্দুল মালেক এর দায়িত্বে আছে। সে আরও বলে এ্যাম্বুলেন্স গুলো দেখভাল এর দায়িত্ব চালক দের, তারা এ বিষয়ে আমার থেকে ভালো জানে।
মেহেরপুর বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ ১৯৯৩ সালে প্রদানকৃত এ্যাম্বুলেন্স টি এখন পর্যন্ত অকেজো ঘোষণা করেনি।
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা পঃপ আশরাফুজ্জামান লিটন বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মোট ৩টি এ্যাম্বুলেন্স রয়েছে, একটি একেবারে অকেজো, একটি মেরামত যোগ্য ও একটি এ্যাম্বুলেন্স চালু আছে, চালুকৃত এ্যাম্বুলেন্স টির কোন রেজিষ্ট্রেশন নেই, যে কারনে মেহেরপুর-কুষ্টিয়ার বাইরে যেতে পারে না। আমরা দ্রুতই কর্তৃপক্ষের সাথে এ্যাম্বুলেন্স টির রেজিষ্ট্রেশনের ব্যাপারে আলোচনা করবো। তিনি আরও বলেন, একাধিক এ্যাম্বুলেন্স চালানোর মতো ড্রাইভার না থাকায় পড়ে থাকা এ্যাম্বুলেন্স টি মেরামত করা হয়ে উঠে না৷ সাংবাদিকের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা মোতাবেক আউটসোর্সিং ড্রাইভার দিয়ে এ্যাম্বুলেন্স চালানো যাবে না।
রিমন//দৈনিক দেশতথ্য// ৯ মে-২০২২

Discussion about this post