Print Date & Time : 7 May 2025 Wednesday 11:44 pm

গাদ্দাফীর আমলে লিবিয়ানরা যেসব সুবিধা পেত

লিবিয়ার কর্নেল মুয়াম্মার আল গাদ্দাফি ছিলেন একজন স্বৈর শাসক। তিনি ৪২ বছর (১৯৬৯-২০১১) লিবিয়া শাসন করেছেন। তার শাসনামল ছিল লিবিয়ানদের স্বর্ণ যুগ। একজন স্বৈর শাসক কি করে তার শাসিত রাজ্যকে স্বর্ণ যুগ বানাতে পারে? এ প্রশ্ন সঙ্গত তো বটেই। এর উত্তর খুঁজতে গিয়ে জনা গেল তার শাসনামলে সে দেশের নাগরিকরা অনেক সুবিধা পেত। যেই সুবিধা এখন আর নেই। জেনে নিন কি ছিল সেই সুবিধার তালিকায়।

গাদ্দাফির আমলের নাগরিক সুবিধার তালিকাঃ

১। সকল নাগরিকের বিদ্যুৎ বিল রাষ্ট্রের পক্ষে কর্নেল মুয়াম্মার আল গাদ্দাফি পরিশোধ করতেন। যার ফলে কাউকে বিদ্যুতের বিল দিতে হতো না।

২। লিবিয়ার সব ব্যাংক রাষ্ট্রায়ত্ত। এসব ব্যাংক থেকে নাগরিকরা লোন নিলে সুদ দেওয়ার প্রয়োজন পড়ত না।

৩। গাদ্দাফি বিশ্বাস করতেন, প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার রয়েছে একটি বাড়ি পাওয়ার। এ জন্যই তিনি ঘোষনা দিয়েছিলেন, সকল নাগরিকের আবাসন না হওয়া পর্যন্ত তাঁর নিজের মা বাবার জন্য কোনো বাড়ি বরাদ্দ করা হবে না।

৪। লিবিয়ার প্রত্যেক নবদম্পতিকে সরকারের পক্ষ থেকে ৫০হাজার ডলার দেওয়া হতো। যাতে তাঁরা বাড়ি কিনে নতুন জীবন শুরু করতে পারেন।

৫। সম্পূর্ন বিনা মূল্যে শিক্ষা ও চিকিৎসা সেবা দেওয়া হত। গাদ্দাফি ক্ষমতা নেওয়ার পূর্বে শিক্ষার হার ছিল ২৫%। তাঁর শাসনামলে এই হার ৮৩% পর্যন্ত উন্নীত হয়েছিল।

৬। কেউ কৃষি খামার করতে চাইলে সরকার ভূমি, বীজসহ প্রয়োজনীয় উপকরণ বিনামূল্যে সরবারহ করত।

৭। কোন কারণে লিবিয়ার কোনো নাগরিককে শিক্ষা অথবা চিকিৎসা সেবা নিতে বিদেশ যেতে হলে সরকার সব ব্যয় বহন করত।

৮। লিবিয়ার তেল বিক্রির একটা অংশ প্রত্যেক নাগরিকের ব্যাংক হিসাব নম্বরে সরাসরি জমা হতো।

৯। সন্তান জন্ম দিলে প্রত্যেক নারীকে পাঁচহাজার ডলার দেওয়া হতো।

আরব বসন্তের নামে গাদ্দাফীর পতন ঘটানোর পর এখন ওই সব সুবিধার একটিও বিদ্যমান নেই। গাদ্দাফী স্বৈর শাসক হলেও তিনি ছিলেন নাগরিক বান্ধব শাসক। এই সত্যটি লিবিয়ার নাগরিকরা না জানলেও জানত আমেরিকানরা। তাই তারা গাদ্দাফীর লাশের কোন চিহ্ন রাখেনি।

সুবিধা বঞ্চিত নাগরিকরা গাদ্দাফীর কবরের সন্ধান পেলে সেটাকে মাজারে পরিনত করতে পারে তা আমেরিকানদের অজানা ছিলনা।

এবি//দৈনিক দেশতথ্য//২২ ডিসেম্বর//২০২২।